১১ সেপ্টেম্বর বুলেটিন অফ দ্যা অ্যাটমিক সায়েন্সন্টিস্ট এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন '২০২৩ সালে পাকিস্তান নিউক্লিয়ার হ্যান্ডবুক ' এ দাবি করা হয়েছে পাকিস্তানে প্রায় ১৭০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড মজুত রয়েছে।
আর্থিক অবস্থা বেশ বেসামাল পাকিস্তানের। রাজনৈতিক সংকটও তুঙ্গে। কিন্তু এরই মধ্যে জল্পনা পাকিস্তানের অস্ত্র ভাণ্ডারে মজুত পারমাণবিক অস্ত্রগুলি নিয়ে। পাকিস্তান এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলে না। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের অভিমত পাকিস্তানের অস্ত্রাগারে ভালরকম পারমাণবিক অস্ত্র মজুত রয়েছে। কারণ পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টো ১৯৬৫ সালে দৃঢ়়ভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে ভারচ বোমা তৈরি করতে তারা প্রবল ক্ষুধার্ত থাকলেও ঘাস-পাতা খেয়েও নিজেদের বোমা তৈরি করবে। তারপর কেটেগেছে প্রায় তিন দশক। পাকিস্তানের ওপর নজর রাখা বা গুপ্তচরবৃত্তির একটি গোপন নেটওয়ার্ক বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডারের সন্ধান পেয়েছে। একই সঙ্গে প্রকাশ্যে এসেছে পাকিস্তানের অস্ত্রাগারে মজুত থাকা নানা ধারনের অস্ত্রর তথ্যও।
পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তান
পাকিস্তান প্রকৃতপক্ষে পারমাণবিক শক্তিধর একটি রাষ্ট্র। ভিক্ষেবৃত্তি করে, ধার বা চুরি করেও নিজস্ব পারমাণবিক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে পাকিস্তান। পারমাণবিক অপ্রসারণ চুক্তি বা NPT কাঠামোর বাইরে গিয়েই নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচিও তৈরি করেছিল পাকিস্তান। পারমাণবিক অস্ত্রের বিশেষজ্ঞ গ্যারি মিলহোলিন মনে করেন চিনের সাহায্য ছাড়া পাকিস্তানের বোমা তৈরি করার বা মজুত করার কোনও ক্ষমতা থাকতে পারে না।
গুপ্তচরদের নজরে পাকিস্তানের অস্ত্র ভাণ্ডার
১১ সেপ্টেম্বর বুলেটিন অফ দ্যা অ্যাটমিক সায়েন্সন্টিস্ট এর প্রকাশিক একটি প্রতিবেদন '২০২৩ সালে পাকিস্তান নিউক্লিয়ার হ্যান্ডবুক ' এ দাবি করা হয়েছে পাকিস্তানে প্রায় ১৭০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড মজুত রয়েছে। ২০২২ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে পাকিস্তান পারমণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার বাড়িয়ে চলেছে। তবে পাকিস্তান বরাবরই ২৪-২৭টি পারমাণবিক অস্ত্রের তথ্য তুলে ধরে। এই প্রতিবেদনের লেখক ও প্রবীণ অস্ত্র গবেষক ম্যাট কোর্দার মনে করেন ভারত আর পাকিস্তানের অস্ত্র ভাণ্ডারের বিশেষ কোনও পার্থক্য নেই। দুটি দেশ পারণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডের প্রায় সমান। তবে দুই দেশের পারমণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পওয়া মোটেও ভাল লক্ষণ নয়, কারণ এতে দুই দেশের রেষারেষিতে এশিয়ায় যুদ্ধের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের ইতিহাসও ২৫ বছর পার করল।
পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের গোপন ভাণ্ডার
রিপোর্টে বলা হয়েছে- কাহুতা ও গাদওয়ালে ফসাইল উপাদান উৎপাদনের জন্য একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্ট রয়েছে। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের খুশব থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দক্ষিণে খুশব কমপ্লেক্সে চারটি ভারী প্লুটোনিয়ম উৎপাদন চুল্লি রয়েছে। । ইসলামাবাদের পূর্বে নিলোরে নিউ ল্যাবস রিপ্রসেসিং প্ল্যান্ট এবং চশমা কমপ্লেক্সের স্যাটেলাইট ইমেজেও সম্প্রসারণ লক্ষ্য করা গেছে যা জ্বালানি পুনরায় প্রক্রিয়াকরণ করে এবং প্লুটোনিয়াম বের করে। ইসলামাবাদের পশ্চিমে কালা চিত্তা দাহর পর্বতশ্রেণীতে পাকিস্তান পারমণাবিক ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমাইল লঞ্চারগুলির বিকাশ প্রসারিত করে। রোড-মোবাইল ট্রান্সপোর্টার ইরেক্টর লঞ্চার সরাতে ও ফায়ার করার জন্য পূর্ব দিকের অংশ ব্যবহার করে।
পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভার
স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী পাকিস্তানে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উপস্থিত রয়েছে। ফতেহ জংএর কাছে সম্প্রসারিত জাতীয় উন্নয়ন কমপ্লেক্সে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। ইসলামাবাদের উত্তর-পশ্চিমে ওয়াহ-এর কাছে অবস্থিত পাকিস্তান অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে। সেখানে পারমাণু অস্ত্র রাখার জন্য তৈরি হয়েছে বাঙ্কার।