পাকিস্তানে ক্ষমতার লড়াই: সেনাপ্রধান ও শরিফের আপসহীন সংঘাত, কোনদিকে চলেছে দেশের ভবিষ্যত?

Published : Dec 04, 2025, 04:44 PM IST
পাকিস্তানে ক্ষমতার লড়াই: সেনাপ্রধান ও শরিফের আপসহীন সংঘাত, কোনদিকে চলেছে দেশের ভবিষ্যত?

সংক্ষিপ্ত

পাকিস্তানে ক্ষমতার রাশ কি এবার ছিঁড়তে চলেছে? আসিম মুনির এবং শরিফ পরিবারের চারটি করে দাবি কীভাবে ক্ষমতার ভারসাম্যকে নাড়িয়ে দিয়েছে? এই সংঘাত কি দেশকে নতুন রাজনৈতিক ঝড়ের দিকে ঠেলে দেবে, নাকি কোনো গোপন চুক্তির প্রস্তুতি চলছে?  

ইসলামাবাদ। পাকিস্তান আবারও একটি বড় রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এবং শরিফ পরিবারের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই এখন সবচেয়ে তীব্র পর্যায়ে পৌঁছেছে। উভয় পক্ষই তাদের নিজ নিজ দাবি স্পষ্ট করে দিয়েছে এবং এই দাবিগুলিতে আপোসের কোনও সুযোগ দেখা যাচ্ছে না। এই কারণেই এই সংঘাতের পর কী হবে, তা পাকিস্তানের রাজনীতির ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে

পাকিস্তানে কি সেনাবাহিনী ও রাজনীতির সরাসরি সংঘর্ষ হবে?

বর্তমান পরিস্থিতি বলছে যে এটি কেবল একটি "আসন বা পদ"-এর লড়াই নয়, বরং পাকিস্তানে আসল ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তার একটি নির্ণায়ক যুদ্ধ। সেনাবাহিনী ও রাজনীতির এই সরাসরি সংঘর্ষ আগামী মাসগুলিতে দেশকে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

মুনির ও শরিফের পক্ষ থেকে রাখা চারটি করে শর্ত

এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে তিনটি বড় বিষয়—ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ, সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। প্রশ্ন হল, পাকিস্তানের মতো একটি সংবেদনশীল দেশে এত বড় সংঘাতের শেষ কোথায়? এবং আসল সিদ্ধান্ত কার হাতে যাবে? এই পুরো বিষয়টি বুঝতে হলে প্রথমে উভয় পক্ষের চারটি করে দাবি বোঝা জরুরি। এখান থেকেই বোঝা যায় যে উত্তেজনা যতটা উপরে দেখা যাচ্ছে, আসলে তার চেয়ে অনেক বেশি গভীর।

আসলে আসিম মুনির কী চান? এটা কি শুধু মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়?

জেনারেল আসিম মুনির তাঁর চারটি দাবি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যা পাকিস্তানের রাজনীতিকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে।

  • ১. পাঁচ বছরের মেয়াদ বৃদ্ধি: তিনি পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধান থাকতে চান। তাঁর মতে, দেশে “স্থিতিশীলতা” এবং “নিয়ন্ত্রণ” বজায় রাখার জন্য এই সময়টা জরুরি।
  • ২. পুরো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর একচ্ছত্র নেতৃত্ব: মুনির চান যে পাঁচ বছর ধরে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর তাঁর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকুক, অর্থাৎ কোনও যৌথ কমান্ড থাকবে না।
  • ৩. ডেপুটি সেনাপ্রধান নয়: এই দাবিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ হল, সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিই নেবেন—কোনও ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ক্ষমতা ভাগাভাগি হবে না।
  • ৪. সীমাহীন ক্ষমতা: সূত্র অনুযায়ী, এর মধ্যে রাজনৈতিক কাঠামোকে “পুনর্গঠন” করার ক্ষমতাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অর্থাৎ, রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা আরও বাড়ানো।

শরিফ-জারদারি শিবির কেন বিরোধিতা করছে?

শরিফ পরিবার এবং জারদারি শিবিরের আশঙ্কা, আসিম মুনিরকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দিলে পাকিস্তানের বেসামরিক সরকার কেবল নামমাত্র হয়ে থাকবে।

  • ১. ২০২৭ পর্যন্তই সেনাপ্রধান: তারা মেয়াদ বৃদ্ধি চান না। শুধুমাত্র নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত মুনিরকে পদে রাখার পক্ষে।
  • ২. দ্বিতীয় নেতৃত্বের দাবি: তারা চায় যে প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন দ্বিতীয় সিনিয়র জেনারেলও নেতৃত্ব ভাগ করে নিক, যাতে নিয়ন্ত্রণ শুধু একজনের হাতে না থাকে।
  • ৩. ডেপুটি সেনাপ্রধান নিয়োগ: এটি একটি চেক-ব্যালেন্স মডেল হবে, যা সেনাবাহিনীতে এক ব্যক্তির পূর্ণ আধিপত্য শেষ করবে।
  • ৪. সীমিত ক্ষমতা: তাদের স্পষ্ট দাবি—সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।

পাকিস্তান কি নতুন রাজনৈতিক ঝড়ের মুখে পড়তে চলেছে?

বিশ্লেষকরা ক্রমাগত সতর্ক করছেন যে যদি উভয় পক্ষই পিছু না হটে, তবে এই যুদ্ধ শুধু ক্ষমতা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি পাকিস্তানকে একটি নতুন সাংবিধানিক সংকট, দুর্বল বেসামরিক শাসন এবং সেনাবাহিনী বনাম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি প্রকাশ্য সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

 পাকিস্তান কি আবার বড় সংকটে পড়তে চলেছে?

  • এখন পরিস্থিতি এমন যে না শরিফ শিবির পিছু হটতে রাজি, না আসিম মুনির।
  • যদি এই সংঘাত এভাবেই চলতে থাকে, তবে আগামী মাসগুলিতে পাকিস্তানে ক্ষমতার ভারসাম্য পুরোপুরি ভেঙে পড়তে পারে।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

ক্রমশ বহরে বাড়ছে জইশের আত্মঘাতী স্কোয়াড! ৫০০০ মহিলা জঙ্গির নেতৃত্বে সাদিয়া
৫ বছরের জন্য পাকিস্তানের CDS আসিম মুনির, 'শাহবাজের চালাকি' বলল ভারত