
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সমক্ষে দিলেন বিশেষ উপহার। একটি লাল টিশার্ট। যার উপরে লেখা দ্য ফিউচার ইজ এআই- আমেরিকা অ্যান্ড ইন্ডিয়া। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে ইন্দো-মার্কিন হাই-টেক সম্পর্ককে আরও কীভাবে দৃঢ় করা যায় নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই সময় এই উপহার প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে তুলে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। টিশার্টের প্রথম লাইন ছিল বেশ অবাক করা মতো- দ্যা ফিউচার ইজ এআই। আর টি শার্টের দ্বিতীয় লাইনে এআই-এর মানে করে লেখা আমেরিকা ও ইন্ডিয়া। মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, আসলে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের যুগে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন মার্কিন কংগ্রেসে বক্তব্য রাখছিলেন সেখানেও তিনি গত কয়েক বছর ধরে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা এআই-এর অগ্রগতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেছিলেন। আর এই প্রসঙ্গেই তিনি অবতারণা করেছিলেন আরও এক এআই-এর। মোদীর কথায় এই এআই-ও গত কয়েক বছরে পারস্পরিক আদান-প্রদান ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করেছে। আর এই এআই হল আমেরিকা-ভারত। মোদীর এই বক্তব্যের পরই শুক্রবার বাইডেনের এআই-লেখা টিশার্ট উপহার।
মোদী-বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ বিশ্বের তাবড় তাবড় প্রযুক্তিবিদদের
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন হাইটেক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তখনই বিশ্বের তাবড় তাবড় সব টেকগুরুদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তাঁরা। যাদের মধ্যে ছিলেন মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলা, গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, অ্যাপেলের সিইও টিম কুক, ওপেন এআই-এর চিফ স্য়াম অল্টম্যান। এএমডি সিইও লিসা সু, প্ল্যানেট ল্যাবস সিইও উইল মার্শাল, নাসার নভোশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস।
ভারত-আমেরিকা হাইটেক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার অঙ্গিকার
এই হাইটেক হ্যান্ডশেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দুজনেই আরও বেশি করে প্রযুক্তির আদানপ্রদান এবং একে অপরকে সাহায্যের উপরে জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, প্রযুক্তি এবং প্রতিভা আবিষ্কারের ক্ষেত্রে যদি দুই দেশ একযোগে কাজ করতে পারে তাহলে আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যত রয়েছে এক্ষেত্রে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনও তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক যে শুধু যে দুই দেশের মানুষের জন্য ভালো তা নয়, বিশ্বের কাছেও এটা একটা বিশাল সদর্থক পদক্ষেপ। আমাদের এই সহযোগিতা ততটাই বড় যতটা একটা বিশাল সম্ভাবনাময় চুক্তির জন্য পদক্ষেপ হয়, বরং কার্যক্ষেত্রে আরও বলা যেতে পারে যে তার থেকেও আরও বড়। এই হাইটেক প্রযুক্তিগত সম্পর্কে দুই দেশে ক্লাইমেট চেঞ্জ থেকে শুরু করে মহাকাশকে আরও বেশি করে আবিষ্কার করা, মানুষকে গরিবীর গ্রাস থেকে টেনে বের করা থেকে শুরু করে মহামারি প্রতিরোধ এবং আমাদের দুই দেশের নাগরিকদের এক সত্যিকারের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া মতো কাজে নিয়োজিত হবে।
আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স হচ্ছে ভবিষ্যত, কীভাবে এই ক্ষেত্রে কাজ হবে?
দুর্বার গতি নিয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের ব্যবহার। আগামীদিনে প্রযুক্তিক্ষেত্রে এটাই হতে চলেছে মূল ভিত্তি। যার এআই এবং এর সঙ্গে সংযুক্ত প্রযুক্তির ব্যবহার প্রবলভাবে ফোকাসে রয়েছে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে হিরোশিমায় সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া জি৭ সামিট-এর কথা। এখানে জাপান হিরোশিমা এআই প্রসেস বা হাপ-কে তুলে ধরেছিল। যা বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। হাপ-এর কাজ ২০২৩-এর ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সকে কীভাবে মানবসভ্যতার স্বার্থকে বজায় রেখে নৈতিকথার সঙ্গে ব্যবহার করা যায় সেই বার্তা দিয়েছিল হিরোশিমা এআই প্রসেস বা হাপ। সারা বিশ্বেরও এই ভাবেই আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স নিয়ে কাজ করা উচিত বলেও সেই সময় আন্তর্জাতিক মঞ্চে আওয়াজ উঠেছিল।
আরও পড়ুন--
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের আর্টেমিস চুক্তি, কেন ঘুম উড়েছে রাশিয়া ও চিনের
৫৮ মিনিটের বক্তৃতায় ৭৯ বার হাততালিতে মার্কিন পার্লামেন্টে মোদী ম্যাজিক
মোদীর মার্কিন সফর ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য মাইলফলক, GE-IAF চুক্তি ফাইটার জেট ইঞ্জিনে বিল্পব আনতে চলেছে