বেজিংয়ে হতে চলা শীতকালীন অলিম্পিক বয়কট করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চরম হুঁশিয়ারি দিল চিন।
চিনের (China) একের পর এক গণহত্যার ঘটনা ও জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যেই বেজিংয়ে হতে চলা শীতকালীন অলিম্পিক বয়কট (Olympics diplomatic boycott) করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (US)। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চরম হুঁশিয়ারি দিল চিন। চিন এদিন জানিয়েছে অলিম্পিকের মত ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়াসূচিকে অবজ্ঞা করে ঠিক কাজ করেনি আমেরিকা। এর জন্য তাদের চরম মূল্য চোকাতে হতে পারে।
চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান একটি দৈনিক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মিথ্যা ও গুজবের উপর ভিত্তি করে আদর্শগত কুসংস্কার থেকে বেজিং শীতকালীন অলিম্পিকে যোগ দিচ্ছে না আমেরিকা। এই পদক্ষেপ নিন্দনীয়। শীতকালীন অলিম্পিক রাজনৈতিক শো এবং রাজনৈতিক কারসাজির মঞ্চ নয়।
উল্লেখ্য, ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে বেজিং শীতকালীন অলিম্পিক, চলবে ২ মার্চ পর্যন্ত। আমেরিকা জানিয়েছে যে মার্কিন ক্রীড়াবিদরা বছরের পর বছর ধরে অনুশীলন করছেন, তাঁদের অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করা থেকে বয়কট করানোর অর্থ অন্যায় করা। তাই তাঁরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন শীতকালীন অলিম্পিক ২০২২-য়ে।
শেষবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিক পুরোপুরি বয়কট করেছিল ১৯৮০ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ছিলেন জিমি কার্টার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত অলিম্পিকে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। আমেরিকার ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন টোকিও ২০২০ অলিম্পিকে মার্কিন কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন, যা কোভিড -১৯ মহামারীর কারণে স্থগিত হওয়ার পরে গ্রীষ্মে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
হোয়াইট হাউসের (White House) প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন চিনের একের পর এক গণহত্যার ঘটনা ও জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে আমেরিকা। এই প্রতিবাদ স্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন বেজিংয়ে ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিকে কোনও মার্কিন প্রতিনিধি দল পাঠাবে না।
ওয়াশিংটনের তরফে জানানো হয়েছে মার্কিন ক্রীড়াবিদদের অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করার অনুমতি দেওয়া হবে, তবে প্রশাসন গেমগুলিতে সরকারী কর্মকর্তাদের পাঠাবে না। প্যারা অলিম্পিক গেমসের ক্ষেত্রেও একই নীতি নেবে আমেরিকা। উল্লেখ্য এই প্যারা অলিম্পিক গেমসও বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে চিনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অর্থ সেখানে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক নয়।
সাকি আরও বলেন চিনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে, বিশেষ করে উইঘুর জনসংখ্যা এবং অন্যান্য জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন গত মাসে সাংবাদিকদের বলেন যে তিনি চিনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদ বরাবর জানিয়ে এসেছেন। সেই সুরেই এদিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি সহ গণতান্ত্রিক এবং রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা কূটনৈতিক বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে ক্রীড়াবিদরা টিম ইউএসএ তৈরি করবে তাদের প্রতি প্রশাসনের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সাকি।