অশ্রুসজল চিত্রসাংবাদিককে এক হাতে কাছে ডেকে অসহায় বাবার আর্তি, ‘আমার মেয়ের ছবিটা তুলুন’।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার এক চিত্র সাংবাদিক অ্যাডেম আটলান, ৪১ বছরের চিত্রগ্রাহী জীবনে তিনি যে কত ছবি তুলেছেন, তা গুনে শেষ করা যায় না। ছবি তোলার আগ্রহ নিয়েই তুরস্কের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত শহর কাহরামানমারাসে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। অনেক ছবি তোলার পর মুখোমুখি হলেন এক অসহায় বাবার। যাঁকে দেখে কান্নায় দু’চোখ ভিজে গেল অভিজ্ঞ সাংবাদিকের।
একটা বিছানার ওপর একটা মোটা সাদা গদি। তার ওপরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে বিরাট আকারের অট্টালিকা। সেই ধ্বংসস্তূপের সামনে কমলা রঙের উইন্ড চিটার পরে ভূমিকম্পের পর থেকে টানা ৪ দিন ধরে বসে রয়েছেন এক বছর চল্লিশের ব্যক্তি। মুখে কোনও আকুতি নেই, বেদনা নেই, সাহায্য চাওয়ারও কোনও উদ্যোগ নেই। শুধু বাঁ হাতের মুঠোয় ধরা রয়েছে একটা প্রায় সাদা হয়ে আসা নরম হাতের আঙুল। সেই আঙুলগুলোর ওপর আঙুল বোলাচ্ছেন ওই অনড় ব্যক্তি।
এই ছবি তুলতে গিয়ে অ্যাডেম আটলান যখন কান্নায় ভেঙে পড়লেন তখন কনকনে ঠাণ্ডায় বসে থাকা ওই ব্যক্তি তাঁকে ডেকে নিলেন নিজের কাছে। জানালেন, তাঁর নাম মেসুট হান্সার। এই ধরে থাকা হাত তাঁর স্নেহের শিশুকন্যার, যার নাম ইরমাক, বয়স মাত্র পনেরো। অশ্রুসজল চিত্রসাংবাদিককে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন, ‘আমার মেয়ের ছবিটা তুলুন’।
ধ্বংসস্তূপের শূন্যতা আর নির্বাক বাবার নিস্তব্ধতার মধ্যে কোনও প্রশ্ন করাটা সাংবাদিকের পক্ষে তখন প্রায় অসম্ভব। মেসুট হান্সার নিজেই জানিয়েছিলেন, ‘এখানেই ছিল আমাদের বাড়ি। এটাই ছিল আমার মেয়ের শোওয়ার ঘর।’ পরদিন অ্যাডেম যখন আবার সেই স্থানে ফিরে যান, তখন মেসুট বা ইরমাক, কাউকেই তিনি খুঁজে পাননি। ভূমিকম্পের প্রাবল্য অনেক আগেই কেড়ে নিয়েছিল ঘুমন্ত কিশোরীর প্রাণ। আকুল বাবা শেষ অবদি সাড়া পাওয়ার আশা ছাড়েননি।
আরও পড়ুন-
‘সাবধান করা সত্ত্বেও কথা শোনেননি’, ছত্তীসগঢ়ের বিজেপি জেলা সভাপতিকে পরিবারের সামনেই গুলি করে পালাল মাওবাদীরা
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পের উদ্ধারকাজে সাহায্য করলে ভারতের কূটনৈতিক লাভ কী? জেনে নিন বিস্তারিত
সংস্থায় কর্মরত সমস্ত ভারতীয় কর্মীকে ছাঁটাই করে দিচ্ছে টিকটক, ভারতে এই অ্যাপ নিষিদ্ধ হওয়ার বদলা নিতেই এই সিদ্ধান্ত?