যৌনকর্মীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি, পেনশন, নতুন আইন চালু করল সরকার
সারা বিশ্বে বোধহয় এমন কোনও দেশ নেই যেখানে দেহব্যবসায়ী বা যৌনকর্মী নেই। অনেক দেশেই দেহব্যবসা বেআইনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই ব্যবসা চলছে। কলকাতা-সহ ভারতের বিভিন্ন শহরেও চলছে দেহব্যবসা।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যৌনকর্মীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আইন আনল বেলজিয়াম সরকার
বেলজিয়ামে এবার থেকে অন্য পেশার কর্মীদের মতোই সবরকম সুযোগ-সুবিধা পাবেন যৌনকর্মীরা। আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগপত্র, স্বাস্থ্যবিমা, পেনশন, মাতৃত্বকালীন ছুটি, অসুস্থতাজনিত ছুটি দেওয়া হবে। অন্য যে কোনও পেশার মতোই সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন যৌনকর্মীরা।
২ বছর আগে দেহব্যবসাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য না করার আইন চালু করেছে বেলজিয়াম
২০২২ সালে বেলজিয়াম সরকার ঘোষণা করে, দেহব্যবসাকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হবে না। এর ২ বছর পর যৌনকর্মীদের জন্য বিশেষ সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
ইউরোপের একাধিক দেশে দেহব্যবসা আইনসিদ্ধ হলেও, সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে বেলজিয়াম
জার্মানি, গ্রিস, দ্য নেদারল্যান্ডস, তুরস্কের মতো দেশগুলিতেও দেহব্যবসা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় না। তবে বেলজিয়াম যৌনকর্মীদের যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, তা অন্য কোথাও নেই।
বেলজিয়াম সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন মানবাধিকার কর্মীরা
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সংস্থার গবষক আরিন কিলব্রাইড বেলজিয়াম সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত। সারা বিশ্বে এটাই সেরা সিদ্ধান্ত। সব দেশেরই এই পথে চলা উচিত।’
করোনাভাইরাস অতিমারীর সময় প্রবল আর্থিক সমস্যায় পড়েছিলেন যৌনকর্মীরা, সেই সময় তাঁরা আন্দোলনে নামেন
করোনাভাইরাস অতিমারীর সময় বিশ্বের সব দেশেই যৌনকর্মীরা চরম আর্থিক সমস্যায় পড়েন। সরকার কোনওরকম সাহায্য করেনি। এর প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন বেলজিয়ামের যৌনকর্মীরা। এরপরেই দেহব্যবসা অপরাধ নয় বলে জানায় বেলজিয়াম সরকার।
বেলজিয়াম সরকার নতুন আইন জারি করায় তাঁদের অবস্থার উন্নতি হবে, আশায় যৌনকর্মীরা
বেলজিয়ামের বেশিরভাগ যৌনকর্মীর অভিযোগ, এতদিন তাঁদের দিয়ে জোর করে অনেক কাজ করিয়ে নেওয়া হয়েছে। এবার নতুন আইন জারি হওয়ার ফলে আর কেউ তাঁদের দিয়ে জোর করে কোনও কাজ করিয়ে নিতে পারবে না।
বেলজিয়ামের দেহব্যবসায়ীদের সংগঠনের আশা, এবার এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জীবনের মানের উন্নতি হবে
বেলজিয়ামের দেহব্যবসায়ীদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের দাবি, তাঁরা সমাজের জন্য কাজ করেন। তাঁরা মানুষের একাকীত্ব কাটাতে সাহায্য করেন। এতদিন তাঁদের পেশায় নিরাপত্তা ছিল না। এবার তাঁরা নিরাপদে কাজ করতে পারবেন।
বেলজিয়ামের অনেক যৌনকর্মীই অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা এই পেশা ছাড়তে চাইছেন
বেলজিয়াম সরকার নতুন আইন জারি করলেও, অনেক যৌনকর্মীই জানিয়েছেন, তাঁরা এই পেশা ছেড়ে অন্য কোনও সম্মানজনক কাজ করতে চাইছেন।
বেলজিয়াম সরকার এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলি অবশ্য যৌনকর্মীদের পাশে থাকছে
বেলজিয়াম সরকার জানিয়েছে, গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত কেউ যৌনকর্মীদের নিয়োগ করতে পারবে না। সবাইকে নতুন আইন মেনে কাজ করতে হবে।
বেলজিয়ামের যৌনকর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা শুধু অর্থ রোজগারের জন্যই এই পেশায় আছেন
বেলজিয়ামের অনেক যৌনকর্মীই জানিয়েছেন, তাঁরা অর্থ রোজগারের জন্য অসুস্থতা সত্ত্বেও কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। নতুন আইন তাঁদের এই সমস্যা দূর করতে পারবে না।