আজ থেকে ঠিক ৬ দিন আগে ৬ ফেব্রুয়ারি, সোমবার ভোরেই ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক এবং সিরিয়া। ঘুমের মধ্যেই বিশাল বিশাল অট্টালিকার নীচে চাপা পড়ে গেছেন দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ।
তুরস্কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আন্তাকিয়া এবং গাজান্তিয়েপ শহর। সিরিয়ায় ধ্বংসীভূত হয়ে যায় আলেপ্পো এবং ইদলিব।
ত্রাণসামগ্রী, ফিল্ড হাসপাতাল, খনন এবং উদ্ধারকারী দল পাঠিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশ। তার মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন, জাপান, পাকিস্তান, ইজরায়েল এমনকি, ভারতও।
ধ্বংসস্তূপের মর্মান্তিক ছবি ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়ায়, যা দেখে সারা বিশ্ব শিহরিত হয়ে উঠেছে। তেমনই তুরস্কের আন্তাকিয়া অঞ্চলে এক মা-কে দেখা গেছে নিজের ছেলের মৃতদেহ আগলে ঘুমিয়ে থাকতে।
তুরস্কে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস সেখানকার ভারতীয়দের বিবরণ ট্র্যাক করছে। বর্তমানে সেখানে প্রায় ৩ হাজার জন ভারতীয় বাস করেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০ জন নাগরিকের জন্য তথ্য বা সহায়তা পাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ভারতীয় নাগরিক বিজয় কুমার।
মালাত্যায় একটি ২৪ তলা বিল্ডিং-এর তৃতীয় তলায় থাকতেন বিজয়। উত্তরাখণ্ডের পাউরি একালার বাসিন্দা এই যুবকের পাসপোর্টটি ওই বিল্ডিং-এর নীচে পাওয়া গেলেও তাঁর খোঁজ মিলছিল না। অবশেষে এমন একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়, যার চেহারা স্পষ্ট বোঝার উপায় ছিল না।
হাতে আঁকা ‘ওম’ ট্যাটু দেখে ওই মৃতদেহটি ৩৫ বছর বয়সি বিজয় কুমারের দেহ বলে শনাক্ত করতে পারেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
ভারতের ‘অপারেশন দোস্ত’ উদ্ধারকারী অভিযানের সপ্তম ফ্লাইটটি ইতিমধ্যেই গিয়ে পৌঁছেছে সিরিয়ার ধ্বংসস্তূপের পাশে। এতে ভরা রয়েছে প্রায় ২৩ টন ত্রাণ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার সামগ্রী।
ইতিমধ্যেই তুরস্কের কাহরামানমারাস থেকে ভাইরাল হয়েছে বিস্ময়কর শিশুর ভিডিও। মাত্র ২ মাস বয়সে ১২৮ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে ছিল এই শিশু।
ভূমিকম্পস্থলে উদ্ধারকাজ জারি রেখেছে প্রত্যেকটি উদ্ধারকারী দেশ। কিন্তু, এরই মাঝে ধ্বংসস্তূপগুলি পরিদর্শন করে এসে আশঙ্কার বার্তা শুনিয়েছেন জাতিসংঘের সাহায্য বিভাগের প্রধান কর্তা মার্টিন গ্রিফিথস।
ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর এলেও মার্টিন গ্রিফিথসের আশঙ্কা, ‘আমি মনে করি, মৃতের সংখ্যা সঠিকভাবে অনুমান করা কঠিন। কারণ, এখনও আমাদের ধ্বংসস্তূপের নিচে নামতে হবে। তবে, আমি নিশ্চিত যে, এখন যে সংখ্যা রয়েছে, আগামী সময়ে (উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার পর) সেই সংখ্যা দ্বিগুণ বা তার বেশি হয়ে যাবে।’