মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এবার দলীয় কর্মীদের করা হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলে থেকে কাজ করলে কাউকে ধমকানো চমকানো যাবে না এবং তা করলে দল কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না এ কথা স্পষ্ট জানালেন তিনি।
রবিবার কলকাতা পুরভোট, আর শেষ মুহূর্তের প্রচারে খামতি রাখতে নারাজ শাসক দল। একদিকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) প্রচার সভা চালাচ্ছেন, অন্যদিকে প্রচারে নেমেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এদিন প্রচারে এসে দলীয় প্রার্থীদের করা ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, তৃণমূল দল করে কম্মে খাওয়ার জায়গা নয়, এই দলে থেকে ধমকিয়ে চমকিয়ে কিছু করার চেষ্টা করলে তার ফল ভালো হবে না। বদলে প্রয়োজন মনে করলে এহেন কাজের জন্য দল থেকে বহিস্ট্রীট ও করা হতে পারে। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছারে নি বিজেপি (BJP) ও।
প্রসঙ্গত, গোয়া থেকে ফিরেই কলকাতার ফুলবাগানে জনসভা সেরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেদিন ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দলের কর্মীদের হুমকি দিয়ে বলেন, বাংলায় সিন্ডিকেট রাজ চলতে দেবেন না তিনি। কেউ বাড়ি করতে চাইলে নির্দিষ্ট কারও থেকে সরঞ্জাম নিতে হবে, সেটা চলবে না। যার যেখান থেকে খুশি, সেখান থেকেই সরঞ্জাম কিনতে পারবেন। পাশাপাশি তিনি বাড়ি তৈরির অনুমোদনের জন্য টাকা চাওয়া যাবে না। আর এই টাকা চাওয়া বন্ধ করতে সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালনা করার ব্যবস্থা করতে হবে। এই মন্তব্যের পড়ি বিজেপির (BJP) কটাক্ষের মুখে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির (BJP) তরফে তোপ দাগিয়ে বলা হয়, 'মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করলেন যে তার দলের কর্মীরা সিন্ডিকেট রাজ্ চালায়। ওনার দলের নেতারা যে বাড়ির অনুমোদনের জন্য আলাদাভাবে টাকা তোলেন এ কথা ঘুরপথে নিজেই স্বীকার করলেন।'
এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) গলাতেও মিলল দলীয় কর্মীদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার সুর। পুরভোটের প্রচারে এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, 'তৃণমূল করে খাওয়ার জায়গা নয়। দলের নাম করে কেউ যদি কোথাও কোনও ভয় দেখায়, চমকায় বা ধমকায়, দল তাকে বাইরের রাস্তা প্রথমে দেখাবে, তারপরে যা হবে তাই হবে। কেউ যদি ভাবে আগে যা করে এসেছি, তাই চলবে। তা কোনওভাবেই মানবে না দল। আজকের তৃণমূল একেবারে নতুন তৃণমূল।'
অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) এই মন্তব্যকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। তিনি বলে, 'কেউ যদি ফ্ল্যাট কিনতে চায় বা বাড়ি বানাতে চায় তবে ইট-বালি-সিমেন্ট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কোথা থেকে কিনবেন তা কাউন্সিলর ঠিক করেন, উল্টে কাটমানি নেন। এতদিন পর বলা হচ্ছে সিন্ডিকেট রাজ বন্ধ করতে হবে? এতদিন কোথায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? তিনি কি এই বিষয়ে কিছুই জানতেন না? এতদিন পর বলছেন কাটমানি নেওয়া হচ্ছে?' উল্লেখ্য, চলতি বছরে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে বিজেপির (BJP অন্যতম একটি অস্ত্র ছিল এই কাটমানি এবং সিন্ডিকেটরাজ , না নিয়ে মমতা সরকারকে তোপ দাগিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi), অমিত শাহ (Amit Shah)-এর মত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা। এবার পুরভোটের প্রচারে সেই কাটমানি ও সিন্ডিকেট রাজকেই প্রচারের মূল অস্ত্র বানালো খোদ তৃণমূল (TMC)।