
ফেসবুক লাইভে (Facebook Live) এসে ফের দলের অস্বস্তি বাড়ালেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) মদন মিত্র (Madan Mitra)। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে (Abhishek Banerjee)দলের 'কোহিনুর' ও নিজেকে দলের 'পোষ্য'-র সঙ্গে তুলনা করলেন একদা মমতার (Mamata Banerjee)ছায়াসঙ্গী মদন। সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড মডেল নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়। যা নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে। সেই প্রসঙ্গে কল্যাণ সহ দল বিরোধী মন্তব্যকারী সকলকে সতর্ক করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partho Chatterjee)। সংবাদ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ না খুলে দলের অন্দরে জানানোর কথা বলেছিলেন পার্থ। তা নাহলে শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এরপরই কার্যত কল্যাণের পাশে দাঁড়িয়ে পার্থ চট্টোরপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে মদন মিত্র সংবাদ মাধ্যমে বলেছিলেন,'দলকে কোথায় জানাবো, দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিকে কোথায় পাওয়া যাবে, কখন জানাবো, কার কাছে জানাবো, দলকে জানানোর কোনও স্কোপ পাচ্ছি না, ওনার যদি মনে আমার কথা বিরোধী উনি ব্যবস্থা নেবেন।' এবার ফের একবার ফেসবুক লাইভে এসে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মদন মিত্র।
সোমবার ফেসবুক লাইভে এসে কানারহাটির বিধায়ক বলেন,'অভিষেক তৃণমূলের কোহিনুর।'একই সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মহাত্মা গাঁধী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতাজির সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন,'আমি কেবলমাত্র দলের একজন পোষ্য এবং পাহারাদার।' পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন,'পার্থ আমাকে বলে দিয়েছে কী ভাবে দলের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। আমি সেই মতোই কাজ করব।' তিনি আরও বলেন,'আমি কল্যাণের দালাল নই। আমি ওর বন্ধু। তাই সে কিছু ভুল বললে আমার সেই ভুল ধরার অধিকার আছে।' তাঁর অনেক কথা ভুল ভাবে নেওয়া হয়েছে বলেও আক্ষেপের মদনের। মাঝে মধ্যে মতভেদ হলেও কখনও কোনও দলবিরোধী কাজ করেননি বলেও তাঁর দাবি। তবে লাইভে এসে মদন মিত্রের মুখেও ফের 'চ্যাপ্টার ক্লোজ' করার কথাও শোনা গিয়েছে।
শুধু রাজনৈতিক কথাবার্তা নয়, সোমবার ফেসবুক লাইভে এসে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সকলের কেন এত কৌতুহল, একইসঙ্গ ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সাফাইও দিয়েছেন মদন মিত্র। বলেন,'আমার ইনস্টাগ্রামে ৬৮ শতাংশই ১৮-২৫ বয়সি মহিলা। এই মেয়েরা আমাকে জড়িয়ে ধরে ছবি তোলে। তারা সবাই আমার মেয়ের বয়সি। আমার রোজ তিন-চার হাজার ছবি ওঠে। ছেলেদের সঙ্গে ছবি তুললে সেগুলি ভাইরাল হয় না।'আমি কখনও কোনও তৃণমূল নেতার পারিবারিক বিষয়ে নাক গলাইনি। কিন্তু আমাকে নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলছে। তবে তিনি সে সবে আমল দেন না বলেও দাবি তাঁর। তিনি বলেন,'আমি সাংসারিক মানুষ। আমি বা আমার পরিবার কেউই এই সবে পাত্তা দিই না'। ফলে একে কল্যাণ তারউপর মদন দুই সাঁড়াশি চাপে তৃণমূলের অন্দরে অস্বস্তি ক্রমেই বাড়ছে। ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে কল্যাণ ও মদনকে সরানোর দাবিও উঠেছে বলে সূত্রের খবর। এখান দেখার দল এই দুই প্রবীণ নেতার বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিরমূলক ব্যবস্থা নেন কিনা। একইসঙ্গে দেখার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্ররা পাল্টা কোন পথে হাঁটেন।