আচমকাই 'বিদ্রোহ'-এর সুর শোনা গেল ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গলাতেও। পাটশিল্পের দুরবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। আর এই শিল্পের অবস্থা ফেরানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আন্দোলনে নামতেও কোনও আপত্তি নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।
'বিদ্রোহ' আর 'দলত্যাগ' এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে একেবারে জেরবার বঙ্গ বিজেপি। সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে। যতই দলের অভ্যন্তরের বিষয় 'চাপা' দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, ততই তা চলে আসছে প্রকাশ্যে। ক্রমে তা সংক্রামণ ব্যধির মতোই ছড়িয়ে পড়ছে দলের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে। আর এবার আচমকাই 'বিদ্রোহ'-এর সুর শোনা গেল ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গলাতেও। পাটশিল্পের দুরবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। আর এই শিল্পের অবস্থা ফেরানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আন্দোলনে নামতেও কোনও আপত্তি নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। আর তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে নতুন করে দানা বেঁধেছে বিতর্ক।
অর্জুন বলেন, "আমি পাটশিল্প এলাকায় জন্মেছি। এই শিল্পে কাজ করেছি। আমিও সরকারের একটা অংশ। ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সাংসদ। কিন্তু যখন চোখের সামনে চটকল শিল্পকে ধ্বংস হয়ে যেতে দেখে একজন মন্ত্রী চুপ করে থাকেন, তখন কিছু বলার থাকে না। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমরা বলে আসছি যে, আপনার জন্য এই শিল্প ধ্বংস হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও তিনি কিছু বলছেন না। উল্টে জবাব দিচ্ছেন, ধ্বংস হলেই বা কী!" এরপর কার্যত রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বলেন, "আমি বলছি, কেন্দ্রীয় সরকার যদি এটা ঠিক না করে তাহলে বাধ্য হয়ে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। বাংলায় যত ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে তাদের সহযোগিতা দরকার। আন্দোলন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের ডাকেন না। এনিয়ে যদি মুখ্যমন্ত্রীও আমাদের ডাকেন তাহলে আমরা সেখানেও যাব। কারণ এই বিষয় নিয়ে যৌথভাবে লড়াই করার প্রয়োজন রয়েছে। এটা না হলে এই শিল্পটাই আর হয়তো বাঁচবে না।" দলের একের পর এক নেতা যখন 'বিদ্রোহ' ঘোষণা করছে ঠিক সেই সময় অর্জুনের মুখে এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন শুভেন্দু, বিজেপির অন্দরে বিতর্ক তুঙ্গে
তবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অর্জুন বেফাঁস মন্তব্য করলেও তা নিয়ে কোনও বিতর্কিত মন্তব্য করেননি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বরং বিষয়টিকে কিছুটা হালকা করার চেষ্টা করেছেন তিনি। বলেন, "চট শিল্প নিয়ে যে কেউ কথা বলতে পারেন। কেন্দ্রের সঙ্গে এনিয়ে একাধিকবার কথা হয়েছ। কেন্দ্রীয় সরকার তা নিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু, কেন্দ্র ও রাজ্য এই বিষয়ে মিলিত না হলে তার থেকে লাভ পাওয়া যাবে না। আর কেন্দ্রের কোনও নীতি পছন্দ না হলে সমালোচনা করতেই পারে। কিন্তু আন্দোলনে নেমে কী লাভ। তার চেয়ে যাঁরা বিষয়টি সমাধান করতে পারবেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করা দরকার।"
আরও পড়ুন, 'বাঁচার সম্ভাবনা কম, ওঁকে মেরে ফেলা হতে পারে,' অনুব্রতকে নিয়ে বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ
আর অর্জুনের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, "বাংলার স্বার্থে কাজ হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে মোহভঙ্গ তো হবেই।"
আরও পড়ুন, নির্যাতিতার মৃতদেহ দাহ করতে জোর খাটিয়েছিল, হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ডে সিবিআরও জালে আরও ৩