বৃহস্পতি ও শুক্রবার এই দুদিনের ধর্মঘটে গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও সমস্ত সরকারি, বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রায় ছয হাজার শাখা ও বারো হাজার এটিএম বন্ধ থাকছে। আর তাতেই চরমে উঠেছে সমস্যা। ধর্মঘটের সরাসরি প্রভাব পড়ল হাওড়ার প্রায় সমস্ত ব্যাঙ্কেই।
রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের(privatization of state-owned banks) প্রতিবাদেই দেশজুড়ে চলেছে ব্যাঙ্ক ধর্মঘট(Bank strike in India)। ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস(United Forum of Bank Unions)। ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস মূলত অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসারস কনফেডারেশন, অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এম্প্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশিন এবং ন্যাশনাল অর্গনাইজেশন অফ ব্যাঙ্ক ওয়ার্কার্স সহ নয়টি ইউনিয়নের একটি সংস্থা। ধর্মঘট সফল করতে দেশজোড়া প্রচারাভিযানও চালানো হচ্ছে তাদের তরফে। এদিকে বৃহস্পতি ও শুক্রবার এই দুদিনের ধর্মঘটে গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও সমস্ত সরকারি, বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রায় ছয হাজার শাখা ও বারো হাজার এটিএম বন্ধ(closed ATM services) থাকছে। আর তাতেই চরমে উঠেছে সমস্যা। ধর্মঘটের সরাসরি প্রভাব পড়ল হাওড়ার প্রায় সমস্ত ব্যাঙ্কেই। সকাল থেকেই ব্যাঙ্কের দরজা থেকেই ফিরে গেলেন গ্রাহকেরা।
এদিকে পরিষেবা বন্ধ থাকায় চরম হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে অনেককে। আন্দোলনকারীরা গ্রাহকদের সমস্যার কথা স্বীকার করে জানান, এই আন্দোলন সাধারন মানুষের কথা ভেবেই করছেন তারা। ব্যাঙ্ক বেসরকারি হাতে চলে গেলে সব থেকে বড় সমস্যার মধ্যে পড়বে গ্রাহকরাই। বর্তমানে যে কোন সরকারি ব্যাঙ্কে জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা থাকলেও বেসরকারি ব্যাঙ্কে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে সেই সুবিধা পাবেন না গ্রাহকরা। একইসঙ্গে সুদের পরিমাণ যেমন কমবে ভবিষ্যতে হয়তো ব্যাঙ্কে টাকা রাখতে গেলে গ্রাহকদেরকে ঘুরিয়ে টাকা দিতে হবে ব্যাঙ্ককেই। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের লোনের ক্ষেত্র সমস্যায় পড়তে পারেন গ্রাহকেরা। নয়া বিলের মাধ্যমে ভারত সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে শেয়ার অনেকটা নিম্নমুখী হতে পারে। এমনকী ২৬ শতাংশে নেমে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই আপাতত দু'দিন সমস্ত ব্যাঙ্কের কাজকর্মই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন- কাটল আতঙ্কের প্রহর, মালদহের শিশুর নেগেটিভ রিপোর্টেই ফিরছে স্বস্তি
এরপরেও যদি সরকারের টনক না নড়ে তাহলে কৃষক আন্দোলনের মতো লাগাতার ধর্মঘটের পথে হাঁটবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেন ব্যাঙ্ক ইউনিয়নের কর্মীরা। এদিকে পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলিতে নয় লক্ষ কর্মচারী রয়েছেন এবং তাদের সকলেই দেশব্যাপী ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া দের কর্মীদের এই ধর্মঘট নিয়ে পুনর্বিবেচনা করার আর্জিও জানিয়েছিল। পাশাপাশি কানারা ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব এবং সিন্ধ ব্যাঙ্কও তাদের কর্মীদের ধর্মঘটে না নামার জন্য অনুরোধ করেছিল। যদিও ইউনিয়নের কর্মীরা তাদের অনুরোধকে বিশেষ পাত্তা দেয়নি। ধর্মঘটীদের সাফ দাবি, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিলের(bank privatization bills) সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।