আগেই জানা গিয়েছিল যে, পুরভোটে শাসকদলের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বাজেট-ভাষণের সময় বিক্ষোভ দেখাতে পারেন বিজেপি বিধায়করা। অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই যে তাঁরা সরকার পক্ষের সঙ্গে বিরোধের পথে যাবেন, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। আর সেই মতোই অধিবেশন শুরু হওয়ার ঠিক আগেই বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা।
আজ থেকে শুরু হয়েছে রাজ্য বিধানসভার (West Bengal Assembly) বাজেট অধিবেশন (Budget Session)। আর প্রথম দিন থেকেই উত্তাল বিধানসভা। পুরভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের (Violence in West Bengal Municipal Election) অভিযোগ তুলে বিধানসভায় সরব হয় বিজেপি (BJP)। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের (Governor Jagdeep Dhankhar) বাজেট বক্তৃতা শুরু করার আগেই উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা (BJP MLA)। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। নির্দিষ্ট সময়ের ১ ঘণ্টারও বেশি সময় পর সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা পালন করতে ভাষণের প্রথম ও শেষ লাইন পড়ে বিধানসভা ছাড়েন রাজ্যপাল।
আগেই জানা গিয়েছিল যে, পুরভোটে শাসকদলের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বাজেট-ভাষণের সময় বিক্ষোভ দেখাতে পারেন বিজেপি বিধায়করা। অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই যে তাঁরা সরকার পক্ষের সঙ্গে বিরোধের পথে যাবেন, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। আর সেই মতোই অধিবেশন শুরু হওয়ার ঠিক আগেই বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা।
আরও পড়ুন- আজ বাজেট অধিবেশন, বহু বিতর্কের পর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল
এদিকে বিধানসভা উত্তাল থাকায় বাজেট অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণ দিতে পারছিলেন না রাজ্যপাল। এরপর বিধানসভা এতটাই উত্তাল হয়ে যায় যে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে চান তিনি। সেই সময় তাঁকে ভাষণ শুরু করার জন্য হাতজোড় করে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বিজেপি বিধায়কদেরও অনুরোধ করেন তিনি। অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুভেন্দুর সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল। বিজেপি বিধায়কদের অভিযোগ, পুরভোটে সন্ত্রাস হয়েছে। ভোট লুট হয়েছে। সেই কারণে ওই ভোট বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে কথা বলেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন, 'মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ডিপার্টমেন্ট থেকেই ফাঁস হয়', পরীক্ষার সকালেই বিস্ফোরক দিলীপ
নিয়ম অনুসারে রাজ্যপালের উদ্বোধনী ভাষণ দিয়েই শুরু হয় বাজেট অধিবেশন। কিন্তু, আজ বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভের জেরে প্রথাগত সেই ভাষণ শুরু করতে গিয়েই বাধা পান তিনি। বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'আপনারা থামুন, রাজ্যপালের ভাষণ গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য'। ১ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে না আসায় বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। সেই সময় বিধানসভার সব গেটই বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজ্য়পাল নিজের আসনে বসে পরার পর চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তৃণমূল মহিলা বিধায়করা রাজ্যপালের আসনের সামনে দাঁড়িয়ে পারেন। এভাবেই তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করা হয়। যদিও ওই পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্যপাল কখনও বসে পড়ছিলেন, কখনও তাঁর আসন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তারপর এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়কদের অনুরোধে ভাষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর ভাষণের প্রথম ও শেষ লাইন পড়ে বিধানসভা ছাড়েন।
রাজ্যপালকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিরোধীদের বিধায়করা স্লোগান করেন, সাউটিং করেন। এরকম ঘটনা আগে বিধানসভায় ঘটেনি। এর আগে রাজ্যপালের ভাষণ বন্ধ হয়নি। এটা অসাংবিধানিক। আমরা এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। আমাদের বিধায়করা কেউ কোনও কথা বলেনি। স্পিকার নিজে হাত জোড় করে আবেদন করেছেন। আমি অনুরোধ করেছি। বিজেপি আজ যা করেছে, সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার। আমাদের কথায় এটা বিজেপির পরিকল্পিত বিক্ষোভ।”