ভারতের জাতীয় পতাকাই আমাদের প্রাণ বাঁচিয়েছে, দাবি ইউক্রেন ফেরত ইছাপুরের দেবারতির

খারকিভে ভয়ঙ্কর ও দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার কথা বলছেন দেবারতি। বোমা বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির মধ্যেই ১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যেতে হয়েছিল তাদের। 

Jaydeep Das | Published : Mar 6, 2022 1:00 PM IST

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে উদ্বেগ বাড়ছে ভারতেও। সেদেশে আটকে থাকা ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়াদের নিয়েই সবথেকে বেশি চিন্তায় রয়েছে সরকার। এদিকে ঘরের মেয়েকে ফিরলেও এখনও উৎকণ্ঠা কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইছাপুরের শিয়ালডাঙ্গার দেবারতির।  এখনো নিজের পরিবারে ফিরে যেন কাটছে না আতঙ্কের সেই রাতগুলো। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ফিরে শিয়ালডাঙ্গার দেবারতি শোনালেন সেই রোহমর্ষক কাহিনী। কি ভাবে ফিরলেন বাড়ি তার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।  ভয়ঙ্কর ও অকল্পনীয় অভিজ্ঞতার মধ্যে কেটেছে খারকিভে, বলছেন দেবারতি। বোমা বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির মধ্যেই ১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যেতে হয়েছে। সেখান পৌঁছে সেখানে ২৪ ঘন্টার ট্রেন যাত্রা করে ইউক্রেনের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছন তারা। সেখান থেকে আবার সীমান্তে ৯ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর পোল্যান্ডে ঢুকে ভারতীয় দূতাবাসে পৌঁছন তারা। ফেব্রুয়ারি ২২ তারিখেই দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছিল খারকিভ ছাড়তেই হবে। তবু পাঁচ দিন বাঙ্কারে কাটিয়ে ২০০০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে বিশ্ব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গলিপথে পৌঁছায় বোকজাল রেল স্টেশনে।

রাস্তায় আসার সময় দেখে চেনার উপায় ছিল না। গোটা শহরটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। রাস্তায় তখন বোমা ফটছিলো। চলছিল গুলি আর তারই মাঝে তারা ভারতের জাতীয় পতাকা সামনে ধরেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। বোকজাল স্টেশণে ঢোকার মুখেই পরপর তিনটি বোমা বিস্ফোরণ হয় তখন তারা রাস্তায়। সেখান থেকে কোনো ভাবে মেট্রোর বাঙ্কারে পৌঁছে আশ্রয় নেয় তারা। তারপরে অনেক্ষন অপেক্ষা করার পর একটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি হলে তারা স্টেশনে ঢোকে। সেখানে ট্রেনে আগে ইউক্রেনের বাসিন্দারা আগে ওঠে তারপর মহিলাদের আর একদম শেষে পুরুষদের ট্রেনে ওঠার ব্যবস্থা ছিল। সেখানে ট্রেনে উঠে পোল্যান্ডের সীমান্তে পৌঁছান তারা। দেবারতি বলেন এখনো সীমান্তে অনেকে রয়েছেন। সীমান্ত পার করতে পারে নি। তিনি চাইছেন পরিস্থিতি আবার দ্রুত স্বাভাবিক হোক যাতে সে তার পড়াশোনা শেষ করতে পারে। আর তার চোখে মুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। ঘরের দরজা বন্ধের আওয়াজ শুনলেও ওই বাঙ্কারে কাটানো দিন মনে পড়ছে। আর চোখ বুজলে যুদ্ধের ভয়াল চিত্র এখনো ভাসছে চোখে। 

আরও পড়ুন- রাশিয়ান মহাকাশযান থেকে মুছে গেল আমেরিকা-জাপান-ব্রিটেনের পতাকা, রইল ভারতের তেরঙা পতাকা

আরও পড়ুন- “উনি নামেই যোগী, কিন্তু কর্মে ভোগী”, অখিলেশের প্রচারে ফের ঝড় তুলে বিজেপি তীব্র আক্রমণ মমতার

আরও পড়ুন- নির্দলের বিজয় মিছিলে তৃণমূলের হামলা, পাল্টা নির্দলীদের বিরুদ্ধে পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগ তৃণমূলের

যদিও মেয়ে ঘরে ফিরে আসাতে বাবা নন্দলাল দাসের মনে শান্তি ফিরেছে। তবে অসমাপ্ত পড়াশোনা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও মেয়ে ফিরে পাওয়াটাই বড় বাবার কাছে।উল্লেখ্য ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের নির্বিঘ্নে ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সেখানে পাঠিয়ে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র। ইউক্রেনের গোটা পরিস্থিতির উপর বিশেষ নজর রাখছে কেন্দ্র সরকার। চালু রয়েছে মিশন গঙ্গা অপারেশন। যার হাত ধরেই সেদেশে আটকে থাকা পড়ুয়ারা ধীরে ধীরে ঘরে ফিরছেন। 

Read more Articles on
Share this article
click me!