কোভিডের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে শহরের চিকিৎসকদের একাংশ ট্রায়াল অ্যান্ড এরর-র কথা তুলেছেন। ওই চিকিৎসকদের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোলা ইস্যুকে অস্বীকার করেছে বঙ্গ বিজেপি।
কোভিডের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে শহরের চিকিৎসকদের একাংশ ট্রায়াল অ্যান্ড এরর-র (Trail and Error) কথা তুলেছেন। প্রসঙ্গত, কোভিড সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর সারা বিশ্বের মতোই ভারতেও খানিকটা দিশেহারা অবস্থা ছিল। কোন ওষুধে বেশি কার্যকরিতা, তা নিয়ে বারবার মত পরিবর্তন হয়েছে। কোভিডের যখন প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়েছে, তখন কোন চিকিৎসা বাঁচিয়ে তুলবে রোগীকে, এনিয়ে দ্বন্ধ ছিল নানা মহলে। কারণ এর পূর্ব অভিজ্ঞতা সারা বিশ্ব তথা ভারতের কাছে ছিল না। তাই পাশ্চাত্যে আগে এই রোগ ছড়াতেই কোন ওষুধ ব্যবহার করলে কী প্রতিফলন দেখা দিচ্ছে রোগীর শরীরে, খানিকটা সেভাবেই এগোতে হচ্ছিল চিকিৎসকদের। কখনও প্রকাশ্যে আসে রেমডেসিভির অন্যতম জীবনদায়ী ঔষধ। এটা না খেলে কোভিড রোগীরা বাঁচবে না। আবার কখনও পরবর্তীতে জানা যায়, এটা শুধু সঙ্কটজনক অবস্থার রোগীকে দেওয়া উচিত। মত বদলায় এরপরেও। কোভিড রোগীর চিকিৎসায় যে দিতেই হবে রেমডেসিভির, এমনটা নয়, প্রকাশ্যে উঠে আসে এমন খবরও। আর এখানেই শহরের চিকিৎসকদের একাংশ ট্রায়াল অ্যান্ড এরর-র কথা তুলেছেন। ওই চিকিৎসকদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও নিয়মবিধি সহ চিকিৎসা পদ্ধতি নর্মস প্রকাশ করেনি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বঙ্গ বিজেপি (WB BJP)।
এরপর ২০২১ সাল। অর্থাৎ কোবিডের দ্বিতীয় বর্ষ। এই বছরে কোভিড চিকিৎসক তথা দেশের সরকার এবং সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই ফেলে আসা ৭ মাসের অভিজ্ঞতা পেয়েছেন। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার দেখা যায় যে, একুশ সালের গোড়ার দিকে যখন একেবারেই কমে এসেছে সংক্রমণ, তখন হাসপাতালগুলিতে ট্রায়ালের পর ভ্যাকসিন সাপ্লাই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রাজ্য তথা ভারতবাসীর ততটা হেল দোল নেই। কিন্তু কেন এই গা ছাড়াভাব এসেছিল। কারণ সাধারণ মানুষের কাছে উপযুক্ত কনক্লুশন ছিল না, যে ভ্যাকসিন নিলে কতটা আরোগ্য সম্ভব, কিংবা পাশ্বপ্রতিক্রিয়া হবার সম্ভবনা নেই কতটা। দেখতে দেখতে নানা ভাবনা-চিন্তায় দুইমাস পার হয়ে যায়। আসে দ্বিতীয় ঢেউ। এরপর মার্চের পর কোভিড সংক্রমণ লাগামছাড়া হতেই মারপিঠ লেগে যায় জেলায় জেলায় এই ভ্য়াকসিনই নেবার জন্য, দাবি শহরের একাংশ চিকিৎসকদের। সারা দেশের একাধিক রাজ্য সহ চলে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোট। আর ৮ দফার ভোটের পর সংক্রমণ মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। শুরু হয় ভ্যাকসিন ক্রাইসিস এরাজ্যে। এমনকি অনেকজায়গায় আচমকা ভ্যাকসিন ঘার্তিতে মাঝপথে থেমে দাঁড়াতে হয়। তারপর পুজো আগের ফের টিকা এলে কোভিডের প্রথম ডোজ শহরের অধিকাংশ মানুষ পায়। কিন্তু এতো গেল দ্বিতীয় ঢেউ। তবে তৃতীয় ঢেউ কাবু হবে কীসে। এবার এই প্রশ্নের মুখোমুখি সবাই।
দেশ তথা রাজ্য জুড়ে ইতিমধ্যেই হানা দিয়েছে কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এদিকে রাজ্যে একের পর এক কোভিড আক্রান্তের খবর মিলছে। তাঁদের বেশির ভাগই কোভিডের টিকা নিয়েছেন। টিকা নেওয়ার পরেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়। কিন্তু টিকা নিলে মৃত্যুর সম্ভবনা কমে , একথা একুশ সালেই সামনে এনেছেন চিকিৎসকরা। তবে এবার কথা হল এই মুহূর্তে কোভিডের চিকিৎসা পদ্ধতিতে ওমিক্রণ কতটা ঘায়েল হবে। আর এখানেই উঠে এসেছে ককটেল থেরাপি। কতটা কার্যকর এই থেরাপি। এখানেও শহরের একাংশ চিকিৎসক বললেন একাটাই কথা-ট্রায়াল অ্যান্ড এরর। কী এই ককটেল থেরাপি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আসলে একটি অ্যান্টিবডির মিশ্রন। যা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের বিরুদ্ধে কাজ করে । যার দরুন রোগীর শরীরে ভাইরাসের প্রভাব কমে যায়। তবে বেসরকারি হাসপাতালে ককটেল থ্যারাপি ব্যয় সাপেক্ষ। বেলেঘাটা আইডি, শম্ভুনাথ পণ্ডিত,আরজিকর মেডিক্যালের রোগীর উপরেও এটা প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু এই মুহূর্তে তা বন্ধ করা হয়েছে। তবে এই থেরাপি নিয়েও এসেছে কি 'এরর'। কারণ ইতিমধ্যেই কোভিডের ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝেই করোনা চিকিৎসার থেকে ককটেল থেরাপি বা মনোক্লোনালি অ্যান্ডিবডি থেরাপিকে (Monoclonal antibody cocktail therapy ) বাদ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।