সস্তায় লুচি, মাংস, পোলাও খাবার অফার। নববর্ষের দিনে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা কলকাতা ও শহরতলিতে। সাবধান করল কলকাতা পুলিশ। এক ব্যক্তির খোয়া গেছে ৪৫ হাজার টাকা।
সামনেই নববর্ষ। কিন্ত তার আগেই সাবধান হয়ে যান। নাহলেই ফাঁকা হয়ে যেতে পারে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ঠিক যেমনটা হয়েছে কলকাতার ১২ জন বাসিন্দার। কারণ এঁরা প্রায় সকলেই নববর্ষের দিন খাওয়ার জন্য যেসব বিজ্ঞাপণ বা লিঙ্কগুলি তাদের ফোনে এসেছিল তাতে ক্লিক করে নিজের বা পরিবারের সদস্যদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। লালবাজার সূত্রের খবর গত ১৫ দিনে এজাতীয় প্রায় ১২টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে নববর্ষের আগেই খাবারের নামে এজাতীয় প্রতারণা চক্রগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
কী হয়েছিল?
পুলিশ সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে এক ব্যক্তি লালবাজারে এসে অভিযোগ জানান তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গেছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। কিন্তু কী করে এই ঘটনা ঘটনা তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম দফতরের। জানা যায় সেই ব্যক্তি এমন একটি লিঙ্কে ক্লিক করেছিলেন যার মাধ্যমে সেই ব্যক্তির ফোন হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
খাবারের প্রোলভন
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, নববর্ষের আগেই সক্রিয় হয়ে যায় প্রতারণা চক্রগুলি। তারা নানাভাবে ফাঁদ পাতে। আপনি যদি ভুলেই সেই ফাঁদে পা দেন তাহলেই বিপদ। নববর্ষের আগেই একাধিক বিজ্ঞাপণ বা লিঙ্ক প্রতারকদের কাছ থেকে আপনার ফোনে আসে। সেখানে সস্তায় নানা ধরনের খাবারের অফার করা হয়। আগে নাম নথিভুক্ত করালে বেশি ছাড় পাওয়া যাবে এমন প্রস্তাবও দেওয়া হয়। তাতেই খাদ্যরসিক বাঙালি লোভ সামলাতে না পেরে ক্লিক করে বসেন। নিজেরাই ডেকে আনেন বিপদ।
লুচি, পোলাও, পাঁঠার মাংস
এবার যে লিঙ্কটি অনেকের ফোনে গিয়েছে তাদের বলা হয়েছিল মাত্র ৪৫ টাকায় পেটভরে লুচি, ছোলার ডাল, পোলাও, খাসির মাংস, চাটনি আর মিষ্টি খাওয়ানো হবে। এক অভিযোগ দায়েরকারী জানিয়েছেন, তিনি এই বিজ্ঞাপণ দেখে রীতিমত উৎসাহী হয়ে পড়েন। সেই সময় ঘাঁটাঘাটি করে আরও জানতে পারেন প্রচুর মানুষ নিজেদের নাম নথিভুক্ত করিয়েছে তাই প্লেটপ্রতি দাম ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভালো দোকানে লুচি ছোলার ডালই পাওয়া যায় না ৪৫টাকায়- সেখানে একগুলি পদ পাওয়া যাচ্ছে। তাই তড়িঘড়ি নাম নথিভুক্ত করার।
টাকা গায়েব
তারপরই তিনি দেখতে পান তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৫ টাকা কাটা হয়নি। কাটা হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। লালবাজারের দ্বারস্থ হন তিনি। তখনই জানতে পারেন তিনি একা নয় এজাতীয় প্রতারণার স্বীকার গয় ১৫ দিনে ১২ জন।শুরু কলকাতা নয়। শহরতলিতেও ছড়িয়ে রয়েছে এজাতীয় প্রতারণা চক্র। ব্যারাকপুর কমিশনারেট ও বিধাননগর কমিশনারেটে এমন অভিযোগ দায়ের হয়েছে ২৮টি।