নিমতা খুনে তদন্ত যতই এগোচ্ছে ততই উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। যেমন পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, নিমতার সর্দার পাড়ার যুবক দেবাঞ্জন নবমীর রাতে প্রেমিকাকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে গিয়েছিল। আর এরপরই সে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে উদ্ধার হয় দেবাঞ্জনের দেহ। প্রেমিকাকে পুলিশ এই নিয়ে দফায় দফায় জিঞ্জাসাবাদও করেছে। আর এই লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর ইঙ্গিত। অন্তত এমনই দাবি পুলিশের। তাদের দাবি, দেবাঞ্জনের প্রেমিকার বক্তব্যে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।
পুলিশের সন্দেহ এটি একটি ত্রিকোণ প্রেমের ঘটনা। তদন্তে উঠে এসেছে, সন্দেহ ভাজন ওই তরুণী একই সঙ্গে দেবাঞ্জন ও তার প্রাক্তন প্রেমিক প্রিন্স সিংহের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছিলেন। শুধু এটাই নয়, তরুণীর একই সঙ্গে রয়েছে একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। দেবাঞ্জন ও প্রিন্স কে কেনইবা ওই তরুণী আলাদা আলাদা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এ রাখেন এ নিয়েও উঠে আসছে নানা প্রশ্ন। দেবাঞ্জনের বাবা অরুণ দাস, অভিযোগ তুলেছেন প্রিন্সের দিকে। তিনি জানান যে, ওই তরুণীর সঙ্গে তার ছেলের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর প্রিন্স সিংহ একাধিক বার দেবাঞ্জনকে খুনের হুমকি দেন। মৃত্যুর পনেরো দিন আগেও নাকি সে একবার হুমকি দিয়েছিল।
তদন্তে নামার পর পুলিশ জানতে পারে, প্রিন্স ও দেবাঞ্জন একই সঙ্গে দমদমের একটি বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ত। তাদের মধ্যে একটা সময় ভাল বন্ধুত্বও ছিল। কিন্তু সেই সম্পর্ক নষ্ট হয়, দেবাঞ্জনের সঙ্গে তার প্রাক্তন প্রেমিকার সম্পর্ক তৈরির পর। তদন্তকারীদের দাবী, হুমকি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওই তরুণী প্রথমে পুলিশকে ধোঁয়াশায় রাখার চেষ্টা করেন । কিন্তু পরে স্বীকার করেন যে , দেবাঞ্জনকে নিয়ে প্রিন্সের সঙ্গে প্রায়শই তাঁর মনোমালিন্য হত ।পুলিশ জানতে পেরেছে প্রিন্স এই সম্পর্কটি মেনে নিতে পারেননি। আর সেখান থেকেই উঠে আসে পেশাদার অপরাধীদের প্রসঙ্গ। অবশ্য তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে নাম উঠে আসা প্রিন্স সিংহ এই মুহূর্তে ফেরার।
দেবাঞ্জনের গাড়ির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এছাড়াও ওই তরুণীর সোশ্যাল মিডিয়ায় যাবতীয় অ্যাকাউন্ট ও ফোন কলের লিস্ট খুঁতিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেবাঞ্জনের কল ডিটেলসও এই মুহূর্তে চেক করা হচ্ছে । তদন্ত করে পুলিশের অনুমান, দেবাঞ্জন যেহেতু তার বান্ধবীকে বাড়িতে নবমীর রাতে পৌঁছে দেন , তাই সন্দেহের তীর ওই তরুণীর দিকেও।