কালীঘাটের পাশাপাশি গোটা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা আনন্দে পথে নেমে যান। আবির খেলে, একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে দেন তাঁরা। তারই মধ্যে বিজয় মিছিলের উপর বিধিনিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্বাচন কমিশন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিজয় মিছিল করা যাবে না বলে জানানো হয়।
ভবানীপুর উপনির্বাচনের (Bhabanipur By-Election) ভোট গণনা শেষ হওয়ার পর দেখা যায় রেকর্ড পরিমাণ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর ভোটের ব্যবধান ৫৮ হাজার ৮৩২। ২০১১ সালে ভবানীপুর উপনির্বাচনে নিজের করা রেকর্ড তিনি নিজেই ভেঙে দিয়েছেন। সেবার মোট ৫৪ হাজার ২১৩ ভোটে জিতেছিলেন তিনি। আর এবার সেই রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছেন। তবে ফল প্রকাশের অনেক আগে গণনা চলাকালীনই তাঁর জয় এক প্রকার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও নিশ্চিত হয়ে যায়। তখনই কালীঘাটের পাশাপাশি গোটা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা আনন্দে পথে নেমে যান। আবির খেলে, একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে দেন তাঁরা। তারই মধ্যে বিজয় মিছিলের উপর বিধিনিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিজয় মিছিল (Victory Celebration) করা যাবে না বলে জানানো হয়।
শুধু ভবানীপুর নয়, জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জেও তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। জঙ্গিপুরে ৯২ হাজার ৬১৩ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন জাকির হোসেন। আর সামশেরগঞ্জে ২৬ হাজার ১১১ ভোটে জয়ী হন আমিরুল ইসলাম। তিনটি কেন্দ্রেই তৃণমূলকে জয়ী হতে দেখে আর আনন্দ চেপে রাখতে পারেননি তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। আবির ও মিষ্টি নিয়ে তাঁরা রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। এদিকে নির্বাচন কমিশনের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে জানানো হয়, "ভোটের ফল প্রকাশের পর হিংসাত্মক ঘটনা যাতে না ঘটে, রাজ্য প্রশাসনকে তা নিশ্চিত করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভোটের ফল প্রকাশের পর কোনওরকম বিজয় উৎসব পালন করা যাবে না।"
আরও পড়ুন- 'আমি স্বার্থপর নই' ভবানীপুরে জয়ের পর কেন একথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আরও পড়ুন- পুজোর পরই ৪ কেন্দ্রে উপনির্বাচন, প্রার্থীদের নাম ঘোষণা মমতার
কমিশনের এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমরা আনন্দ করব। খাওয়াদাওয়া করব। সবাই মিষ্টিমুখ করব। কিন্তু কোথাও কোনও বিজয় মিছিল হবে না। এটা আমরা দলীয় নীতি অনুসারেই মেনে চলব।" তবে মমতার জয় নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল তৃণমূল। উপনির্বাচনের পর ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছিলেন, ভবানীপুরে মমতা ৫০ থেকে ৭০ হাজার ভোটে জিতবেন। বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছিলেন, "বিজেপি-র ঘোষণা করে দেওয়া উচিত ছিল যে, আমরা এই লড়াইয়ে আর নেই।"
আরও পড়ুন- ২০১১-সালের রেকর্ড ভাঙলেন মমতা, তৃতীয়বার ভবানীপুর জয় 'ঘরের মেয়ে'-র
তবে নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজয় উৎসব শুরু করা হয়। কালীঘাটে মমতার বাড়ির সামনে, বারাসাত কলোনি মোড়ে, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া সহ রাজ্য়ের বিভিন্ন প্রান্তে আবির খেলে, মিছিল করে বিজয়োৎসব পালন করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজারে তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের উল্লাস ছিল চোখে পড়ার মতো। পথচলতি মানুষকেও মাখানো হয় আবির। হাততালি দিয়ে জয়ের আনন্দ পালন করেন তৃণমূল কর্মীরা। উৎসবে মাতেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্রও। তিনি গান গেয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেন।