নদিয়ার হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের জন্য ১ কোটি টাকা সাহায্য়ের আবেদন। কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন পত্র দাখিল করেন মামলাকারী আইনজীবী ।
নদিয়ার হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের জন্য ১ কোটি টাকা সাহায্য়ের আবেদন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের এজলাসে আবেদন পত্র দাখিল করেন মামলাকারী আইনজীবী অনিন্দ্য সুন্দর দাস। দ্রুত শুনানির আর্জি জানান তিনি। আবেদন বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস প্রধান বিচারপতির। উল্লেখ্য,হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে তদন্তের অগ্রগতি আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানাল সিবিআই। আদালতের কাছে আরও ২ সপ্তাহ সময় চেয়ে নিয়েছে সিবিআই।
বৃহস্পতিবার, হাঁসখালি ধর্ষণ মামলায়, নির্যাতিতার পরিবারের জন্য ১ কোটি টাকা সাহায্য়ের আবেদন করেন মামলাকারী আইনজীবী। এদিন তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের এজলাসে এই আবেদন রাখেন। তবে ওই আবেদন বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। উল্লেখ্য, সোমবার হাঁসখালি ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সিবিআই মুখ বন্ধ খামে অসম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা দিয়েছে হাইকোর্টে। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন, রাজ্যে অমিত শাহ, হিঙ্গলগঞ্জে বিএসএফ-র ভাসমান আউটপোস্ট উদ্বোধন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
জানানো হয়, যে তদন্ত চলছে রিপোর্ট জমা দিতে আরও সপ্তাহ দুয়েক লাগবে। পাশাপাশি এরই সঙ্গে হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে বিজেপির পাঠানো অনুসন্ধান কমিটির বিরুদ্ধে নাবালিকার নাম প্রকাশ্যে আনার অভিযোগ উঠল আদালতে। এরপরেই বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, কোনওভাবেই নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনা যাবে না। এদিন মুখবন্ধ খামে আদালতে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট পেশ করে সিবিআই-র তরফে জানানো হয়, তদন্ত অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। তবে সিএপএসএল-র রিপোর্ট আরও ২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তাই আরও ২ সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করা হোক। আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি।
সিবিআই-র পেশ করা রিপোর্টের তথ্য যেনও বাইরে না আসে, সেজন্য আদালতে আবেদন করেন মামলাকারীর আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, এই মামলার দুই জন অভিযুক্ত জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তথ্য প্রকাশ্যে এলে অভিযুক্তরা সতর্ক হয়ে যেতে পারে। অপরদিকে, হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে বিজেপির পাঠানো অনুসন্ধান কমিটির বিরুদ্ধে নাবালিকার নাম প্রকাশ্যে আনার অভিযোগ তোলেন আদালতে এক আইনজীবী । সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারপতি বলেন, যে কোনও ধর্ষণের মামলার নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। এবিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত, ৪ এপ্রিল রাতে জন্মদিনের পার্টিতে ডাকা হয়েছিল ওই নাবালিকাকে। এরপর জন্মদিনে ডেকে তাকে মদ্যপান করায় ব্রজগোপাল। এরপরেই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে গণধর্ষণ করে। যৌন নির্যাতন এতটাই হয়েছিল যে, নির্যাতিতার গোপনাঙ্গ থেকে ব্যাপক রক্তপাত ঘটে। রক্তে ভিজে যায় অন্তর্বাস। রাতে এক মহিলাকে দিয়ে নাবালিকা প্রেমিকাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সে। অভিযোগ এরপরেই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে ওই নাবালিকা। এদিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেয় ব্রজগোপাল।
এরপরেই অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার।এদিকে নৃশংসঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। অপরাধ ঢাকতে দেহ সৎকারে বাধ্য করে বজ্রগোপাল। তাই মাঝে কয়েকদিন কেউ কিছু জানতে পারেনি। ঘটনার পরেই হাঁসখালি থানায় নাবালিকার পরিবারের তরফে অভিযোগে জানানো হয়। মেয়ের মৃত্যুর পরে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে জোর করে দাহ করে দেওয়া হয়েছে বলে ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে।প্রথমে বজ্রগোপাল এবং পরে তার বাবা তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সমরেন্দ্র গয়ালিকেও গ্রেফতার করে হাঁসখালি থানার পুলিশ।