কলকাতার পুরভোটের সঙ্গে ত্রিপুরার পুরভোটের তুলনা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপির সন্ত্রাসের জের আগরতলা পুরসভার তৃণমূল প্রার্থীরা ভোট দিতে পারেনি। আর সেই ঘটনার স্বপক্ষে অসান্তির ভিডিও ফুটেজও জমা দেওয়া হয়েছে।
শীতের আমেজে গরম চায়ের সঙ্গে পকোড়া নিয়ে নিয়ে যেমন জমে ওঠে বিকেলের আড্ডা, ঠিক তেমনই কলকাতা করপোরেশনের পুরভোট নিয়ে রাজ্য রাজনীতির তরজা কিন্তু একেবার তুঙ্গে। কলকাতা করপোরেশনের পুরভোটের(KMC election) দিন নির্দিষ্ট হওয়ার পরই গোটা রাজ্যেই কলকাতার পুরভোট নিয়ে উন্মাদনার পারদ ক্রমশ ত্বরান্বিত হচ্ছিল। অবশেষ রবিবার ছুটির দিনে একটু অন্যভাবেই দেখা গেল শহর কলকাতাকে। সকাল থেকেই ভোট দেওয়ার জন্য তিলোত্তমার পথে(Kolkata) নেমে পড়েছিলেন শহরবাসী। ছুটির সকালে বাজারের ব্যাগ হাতে না বেড়িয়ে অনেতকেই আগে লাইন দিয়েছেন ভোটের বুথে। মোটের ওপর ভোটদানের হার খুব একটা খারাপ ছিল না। মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে সে কথা বলাই যায়। কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধী পক্ষের সঙ্গে বিবাদ যেন ম্যান্ডেটারি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)একেবারে চাঁছাছোলা ভাষায় শুধু শাসক দলকেই আক্রমন করলেন না, একহাত নিয়েছেন নির্বাচন কমিশনকেও(Election Comission)।
এদিকে কলকাতা পুরভোটের আগে তৃণমূল প্রার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandhyapadhya) বারবার বলেছিলেন, নির্বাচন একদম সুষ্ঠভাবে করতে হবে। কোনও রকম আশান্তির আঁচ যেন না আসে। জেতার জন্য কোনও রকম প্রভাব খাটানো যাবে না বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু রবিবার কলকাতার পুরভোটকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির নজির দেখতে পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে বিরোধীরাও ভোটের নিয়ম শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুললে পাল্টা উত্তর দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সব অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে এবং কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে বলেন, এই অশান্তির পিছনে তৃণমূলের হাত আছে এর স্বপক্ষে যদি উপযুক্ত প্রমান কেও দিতে পারে তাহলে দল তার যথপোযুক্ত ব্যাবস্থা নেবে। রবিবার ভবানিপুরের মিত্র ইন্সটিটিউটের বুথে ভোট দিয়ে পুর ভোটে অশান্তির অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভষেক বন্দোপাধ্যায় বলেন, অশান্তির অভিযোগ যখন উঠছে তখন নিশ্চই তার প্রমান রয়েছে। সিসি টিভি ফুটেছেই তার প্রমান পাওয়া যাবে। সেই সমস্ত অসান্তির ফুটেজ নিয়ে জনসমক্ষে নিয়ে আসার দাবি তোলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, তাঁর দলের অর্থাৎ তৃণমূলের কেও যদি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দলের তরফে তাঁর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান। একইসঙ্গে বলেন, শুধু দলই নয়, প্রশাসনিক স্তরেরও সেই ব্যক্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-শুভেন্দুর সঙ্গে কলকাতা পুলিশের ঝামেলা, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে ঢুকতে বাধা বিজেপিকে
আরও পড়ুন-BJP on KMC Poll Violence: ভোটের নামে প্রহসন, জাতীয় স্তরেও মমতার নাক কাটতে নেমে পড়ল বিজেপি
আরও পড়ুন-KMC Election 2021: কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভোট বাতিলের দাবি শুভেন্দু অধিকারীর
এদিকে কলকাতা পুরোভোটে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে তারা নাকি তৃণমূলের জন্যই বিভিন্ন বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি। এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় পাল্টা বলেছেন, কোনও দল যদি তার এজেন্ট দিতে না পারে তার দায় কখনই ত-ণমূলের ওপর বর্তায় না। সেই সঙ্গে বলেন, মঙ্গলবার গণমার দিন যদি তৃণমূল ১৩০ টির বেশী আসন পায় তাহলে বিজেপি আবার একটি নতুন অভিযোগের তীর ছুঁড়ে দেবে তৃণমূলের দিকে। বিজেপির তোলা বিভিন্ন অভিযোগর ভিত্তিতে কলকাতার পুরভোটের সঙ্গে ত্রিপুরার পুরভোটের তুলনা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপির সন্ত্রাসের জের আগরতলা পুরসভার তৃণমূল প্রার্থীরা ভোট দিতে পারেনি। আর সেই ঘটনার স্বপক্ষে অসান্তির ভিডিও ফুটেজও জমা দেওয়া হয়েছে।