রাজনীতিতে আসা এবং সাংসদ হওয়া নিয়ে কম কটাক্ষ, বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয়নি অভিনেত্রী, সাংসদ নুসরত জাহানকে। কিন্তু লোকসভায় সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার দিন থেকে সেই নুসরতই তাঁর ধর্মীয় উদারতার জন্য সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এমন কী, কট্টরপন্থীদের ফতোয়ার তোয়াক্কা না করে নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা, মন্ত্রীদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছেন বসিরহাটের সাংসদ।
অভিনেত্রী, সাংসদের এই মনোভাবকে স্বীকৃতি দিতেই এবার এগিয়ে এল ইসকন। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের খবর অনুযায়ী, আগামী ৪ জুলাই কলকাতায় ইসকনের রথযাত্রায় নুসরত জাহানকে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- 'জিনস পরি বা সিঁদুর, সবকিছুতেই দোষ', নুসরতের ফতোয়ায় আক্ষেপ মিমির
সম্প্রতি ব্যবসায়ী নিখিল জৈনকে বিয়ে করেছেন নুসরত। এর পর লোকসভায় হিন্দু বধূর সাজে তাঁকে শপথ নিতে দেখা যায়। যা দেখে সরব হন মুসলিম কট্টরপন্থীরা। উত্তর প্রদেশের দেওবন্দের এক ইমাম মুফতি আসাদ ওয়াসিম এ নিয়ে ফতেয়া জারি করেন। তাঁর দাবি, মুসলিম হয়ে নুসরতের সিঁদুর পরার অধিকার নেই।
ফতোয়া জারি হওয়া বা কট্টরপন্থীদের আপত্তিতে আমল না দিয়ে নুসরত স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি যেমন মুসলিম ছিলেন, তেমনই থাকছেন। কিন্তু সব ধর্মকেই সম্মান করতে চান তিনি। নিজের অবস্থান থেকে যে তিনি সরবেন না, তাও জানিয়ে দিয়েছেন নুসরত।
বসিরহাটের সাংসদের এই মনোভাবকে সম্মান জানিয়েই তাঁকে রথযাত্রায় বিশেষ অতিথির সম্মান দিতে চায় ইসকন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই নুসরতকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। সংগঠনের মুখপাত্র রাধারমন দাস বলেন, 'গোটা বিশ্ব থেকে ইসকনে বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষই আসেন। নিজস্ব জাতিগত বৈচিত্র এবং রীতিনীতি দিয়ে তাঁরা ইসকনকে সমৃদ্ধ করেন। নুসরত জাহানের অবস্থানের সঙ্গে আমাদের এই ভাবনা এবং বিশ্বাসের মিল খুঁজে পেয়েছি। সেই কারণেই একসঙ্গে রথযাত্রা উৎসব উদযাপন করতেই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
ইসকনের এই আমন্ত্রণের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নুসরত বলেন, 'আমি ধর্মনিরপেক্ষ ছিলাম, আছি এবং থাকব। এর জন্য যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে আমি তৈরি। সব ধর্মকে সম্মান করার পথ থেকে আমি সরে আসব না।'
গত কয়েক বছর ধরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত দিয়ে ইসকনের রথের উদ্বোধন হয় কলকাতায়। এবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই সেখানে উপস্থিত থাকবেন নুসরতও।