ধারাবাহিকভাবে সব নির্বাচনেই খারাপ ফল করছে বিজেপি। সম্প্রতি দুটি উপনির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছে। তারপরই দলের মধ্যে কোন্দল প্রকাশ্যে আসছে। নিজের মতো করেই সবাই হারের কারণ ব্যাখ্যা করছেন।
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। তারপর থেকেই বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মধ্যে আশা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। ভেবেছিলেন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ ভোট পেয়ে রাজ্যে সরকার গড়বেন। কিন্তু, তাঁদের সেই আশায় একেবারে জল ঢেলে দেয় তৃণমূল। বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে সরকার গড়ে তারা। একুশের নির্বাচনের পর থেকেই আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি বিজেপি। ধারাবাহিকভাবে সব নির্বাচনেই খারাপ ফল করছে তারা। সম্প্রতি দুটি উপনির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছে। তারপরই দলের মধ্যে কোন্দল প্রকাশ্যে আসছে। নিজের মতো করেই সবাই হারের কারণ ব্যাখ্যা করছেন।
একুশের নির্বাচন থেকে রাজ্যে খারাপ ফল করতে শুরু করেছে বিজেপি। ২০০-র বেশি ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসার 'স্বপ্ন' দেখেছিল। কিন্তু, ভোটের ফল প্রকাশের পরই বদলে যায় পরিস্থিতি। মাত্র ৭৭টি আসনে জিতেই থেমে যায় গেরুয়া রথ। আর তারপরই একাধিক বিধায়ক একের পর এক দলবদল করতে শুরু করেন। সেই ধারা এখনও পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এরপর পুরভোট ও বালিগঞ্জ এবং আসানসোল উপনির্বাচনেও ভালো ফল করতে পারেনি তারা। সেই জায়গায় বালিগঞ্জে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। দলের হার কোনওভাবেই ঠেকাতে পারছেন না বঙ্গ নিজেপির নেতারা। আর এই পরিস্থিতিতেই হারের কারণ ব্যাখ্যা করলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আর তাঁর এই টুইটকে কেন্দ্র করে রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি।
আরও পড়ুন- 'কলকাতায় হিন্দু ভোটাররা বের হননি', দলের হারে যুক্তি দিলীপ ঘোষের
উপনির্বাচনে হারের কারণ প্রসঙ্গে টুইটারে জিতেন্দ্র লেখেন, "আমার ব্যক্তিগত মত যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রীর প্রভাব পড়েছে বাংলার ভোটারদের মনে। দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে সুবিধা পাওয়ায় প্রভাবিত হয়েছেন ভোটাররা। আর গত বছর ভোট পরবর্তী হিংসায় ভীত ভোটাররা বিরোধীদের ভোট দিতে যেতে ভয় পেয়েছেন।"
আরও পড়ুন- 'চুক্তিভিত্তিতে লোক নেওয়ার মানেই নেতাদের টাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা', কটাক্ষ দিলীপের
ইতিমধ্যেই উপনির্বাচনের ফলাফলের পর আসানসোলে দলীয় বৈঠকে নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলে সোচ্চার হয়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। অনুপম হাজরা, সৌমিত্র খাঁ, দিলীপ ঘোষ প্রত্যেকেই রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়ে সুর চড়িয়েছেন। দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, "কলকাতায় যেটা হয়েছে হিন্দু ভোটাররা বের হননি। বিশেষত আমাদের যাঁরা ভোট দিতে যান তাঁরা ভোট দিতে যাননি। এনিয়ে অবাক হইনি। এটাই প্রত্যাশিত ছিল। তবে তৃণমূলের প্রার্থীর জন্য ওদের ভোট কমেছে। সংখ্যালঘু ভোটাররা ঠিক করেছিলেন তাঁরা তৃণমূলকে ভোট দেবেন না। যাঁরা সিপিএম থেকে বেরিয়ে গত বিধানসভায় তৃণমূলকে ভোট দিতেন তাঁরাও ফের সিপিএমকে ভোট দিয়েছেন। বাকি কিছু পার্থক্য হয়নি। যেভাবে ভয় আর হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে যে আমাদের কর্মীরাও বের হননি।"
আরও পড়ুন- বাড়তে পারে জেলার সংখ্যা, কেন্দ্রের কাছে অতিরিক্ত আমলা চাওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্যের
এরপর শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ গতকাল দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে দিয়েছেন। এই মুহূর্তে বেশ টালমাটাল পরিস্থিতি রয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। আর এই পরিস্থিতির মধ্যে আবার জিতেন্দ্র তিওয়ারির মুখে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রশস্তি ফের দলের অস্বস্তিকে আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছে।