করনোর আতঙ্কে মানুষ গৃহবন্দি। সরকারের কড়া পদক্ষেপে লকডাউনও চলছে। এহেন পরিস্থিতিতে খুন! স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা গড়িয়া স্টেশন এলাকার পাঁচপোতার সারদাপল্লিতে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে। খুন হওয়ার যুবকের নাম সুজয় দে। বয়স বত্রিশ। ২০ তারিখ ভোর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। ঘটনার দিনই নরেন্দ্রপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছিল পরিবার। ২৩ তারিখ সকালে স্থানীয় খালে সুজয়ের দেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ এখন খুনের মামলা দায়ের করেছে।
আরও পড়ুন- বিশ্বে প্রথম ভাইরাস দিয়ে খুনের ঘটনা হাওড়া স্টেশনে, যার সঙ্গে জুড়ে আছে ব্যোমকেশের কাহিনি
অভিযোগ,পাঁচপোতায় একটি রাস্তা বানানো নিয়ে সুজয়ের সঙ্গে স্থানীয় কিছু যুবকদের ঝামেলা শুরু হয়। তৃণমূলকর্মী সুজয়ের চাপ দিয়েছিলেন রাস্তা যাতে কংক্রিটের হয়। বিশ্বস্ত সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সুজয়ের যুক্তি ছিল রাস্তা কংক্রিটের হলে অনেকদিন টেকসই হবে এবং এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। অভিযোগ, সুজয়ের বিরোধী কিছু যুবক আবার দাবি করেছিল রাস্তা কংক্রিটের বদলে যেন পিচের করা হয়। এই নিয়ে বিবাদ চলছি বলে অভিযোগ। পিচের রাস্তা বানানোর পক্ষে সওয়াল করেছিল খোদ সুজয়ের তুতোভাই শুভঙ্কর দে-ও। এমনই অভিযোগ করেছে সুজয়ের পরিবারও। আরও অভিযোগ যে, এছাড়াও পিচের রাস্তা নিয়ে সুজয়ের সঙ্গে বিবাদ চলছিল সুজয় হালদার, অনিমেষ চক্রবর্তী এবং বুয়া সাহা নামে আরও কিছু যুবকের।
আরও পড়ুন- লকডাউনে ভিড় করতে বারণ, প্রতিবাদে বেধড়ক মার তরুণী ও ভাইকে
সুজয়ের পরিবারের অভিযোগ, ২০ মার্চ ভোররাতে ৩টের সময় এলাকার দুই যুবক চঞ্চল সরকার এবং চন্দন নস্কর তাদের ছেলে-কে ডেকে নিয়ে যায়। যাতে চট করে চেনা না যায় তার জন্য চন্দন এবং চঞ্চলের মুখে কাঁপড় বাধাও ছিল। পরিবারের দাবি, ভোররাতে সুজয়কে এভাবে ডেকে নিয়ে যাওয়ায় তাঁরা একটু চিন্তুত ছিলেন। কিন্তু, পরিচিত ছেলে বলে সুজয়কে তাঁরা সেভাবে মানা করেননি। এরপর থেকেই সুজয়ের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। নরেন্দ্রপুর থানায় অপহরণের অভিযোগও জানাতে যায় সুজয়ের পরিবার। ২০ এপ্রিল নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ কুকুর নিয়ে এসে এলাকায় তল্লাশিও চালায়। কিন্তু, সুজয়ের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- ফোন করলেই মোটা টাকায় হোম ডেলিভারি মদ, বেআইনিভাবে বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশে জালে চক্র
২৩ এপ্রিল সকালে সুজয়ের দেহ স্থানীয় খালে ভেসে উঠতে দেখতে পায় এলাকরা মানুষ। এরপর পুলিশ এসে সেই দেহটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, খুন করে সুজয়ের দেহ খালে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, যারা এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা এলাকারই খালে কেন দেহ ফেলে দিল তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এতে খুব সহজেই খুনের সঙ্গে জড়িতদের খোঁজও পেয়ে যেতে পারে পুলিশ। এমন এক আশঙ্কার পরও কেন দেহ কেন এলাকার মধ্যেই ফেলে রেখে গেল দুষ্কৃতীরা তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এদিকে, দেহ উদ্ধারের পরই চঞ্চল সরকার ও চন্দন নস্কর নামে দুই অভিযুক্ত যুবককেও গ্রেফতার করা হয়। আপাতত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুনের পিছনে রাস্তা নিয়ে কোনও আর্থিক ফায়দা লোটার পরিকল্পনা রয়েছে কি না তাও জানার চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ঘটনায় সুজয়ের তুতোভাই-এর কনট্রাক্টরির কাজকেও ফোকাসে রাখছে পুলিশ।