করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের সব প্রান্তে। কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এদেশেও বাড়ছে হু হু করে। শনিবারই রোগীর সংখ্যা ৩০০ গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায় সেব্যাপারে বারবার সাধারণ মানুষকে সচেতন করছে প্রশাসন। গত বৃহস্পতিবারই দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রবিবার দেশে ১৪ ঘণ্টা জনতা কারফিউর কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কোভিড-১৯ বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে আপাতত কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ সফল। রবিবার সকাল থেকেই জনশূন্য ছিল কলকাতার রাজপথ। কেবল এশহর নয় গোটা রাজ্যের ছবিটাই ছিল একই রকম।
রবিবার সকাল ৭টা থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে জনতা কারফিউ। দেশবাসীর সঙ্গে করোনা সংক্রমণ রুখতে সেই লড়াইয়ে সামিল এরাজ্যের মানুষও। সকাল থেকেই কার্যত বনধের চেহারা নিয়েছে শহর তিলোত্তমা। গুটিকয় ট্যাক্সি, হাতে গোনা সরকারি বাস ছাড়া রাজপথে দেখা মেলেনি প্রায় কোনও গণপরিবহণেরই। এদিন বাইপাসের ছবিটা অন্যান্য দিনের তুলনায় ছিল একেবারে আলাদা। গোটা এলাকা ছিল শুনশান। এদিন লোকাল ট্রেন কম চলবে বলে আগেই জানান হয়েছিল। তারমধ্যে যেকটি লোকাল বেড়িয়েছিল তাদের কামরা গুলি ছিল ফাঁকা। কোথাও কোথাও দু-একটা দোকান খুলতে দেখা গেলেও রবিবারের সকালে ক্রেতার দেখা মেলেনি। রবিবার ছুটির দিনের সকালে বাজারে চেনা ব্যস্ততার ছবি ধরা পড়েনি গড়িয়াহাট থেকে, উল্টোডাঙা, মানিকতলা থেকে যাদবপুর কোনও বাজারেই। পাতিপুকুরে পাইকারি মাছের বাজারও ছিল ফাঁকা।
শহর কলকাতার মত এদিন সকাল থেকে রাজ্যের সর্বত্রই চিত্রটা ছিল একই রকম। বর্ধমান থেকে মুর্শিদাবাদ, হাওড়া থেকে মালদহ, বাঁকুড়া, শিলিগুড়ি এদিন কোথাওই পথে নামেননি সাধারণ মানুষ। করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ধীরে ধীরে সচেতনতা বাড়ছে সেই ছবিই যেন ফুটে উঠছিল রাজ্যের সর্বত্র।
এদেশে আর নামতে পারবে না বিদেশের বিমান, ১২০ জন ভারতীয়কে নিয়ে ফিরতে হল ডাচ বিমানকে
করোনার জেরে লকডাউনের পথে পাকিস্তানও, বন্ধ হল আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল
করোনা আতঙ্কের মাঝে মাস্ক পরে বিয়ের পিঁড়িতে বর-কনে, রিটার্ন গিফটে দিলেন স্যানিটাইজার
শনিবার শহর কলকাতায় নতুন করে ২ জনের শরীরে মারণ রোগের সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। যার ফলে কলকাতায় করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪। এদিকে শনিবার একলাফে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। যে ভাবে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বর্তমানে কোরনা সংক্রমণেনর দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে আমাদের দেশ। কোনও ভাবেই কমিউনিটি স্তরে যাতে সংক্রমণ না ঘটে তার জন্য প্রশাসন বারবার দেশবাসীকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। ভিড় এড়িয়ে চলার কথা বলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার নিজের ভাষণেও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশবাসীর কাছে সময় চান প্রধানমন্ত্রী নকেন্দ্র মোদী। জনতার কাছে রবিবার স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি থাকার আবেদন জানান মোদী। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাও করোনার বিরুদ্ধে লড়ে চলেছেন। করোনার বিরুদ্ধে কেন্দ্র ও রাজ্যের এই লড়াইয়ে সাধারণ মানুষও যে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত সেই ছবিই উঠে এল এরাজ্যে ১৪ ঘণ্টার 'জনতা কারফু'-তে।