কলকাতা শহর আর প্রোমোটারের গা জোয়ারি, একে অন্যের পরিপূরক গত এক দশক ধরেই। বারবার শিরোনাম হয় গা জোয়ারির ফিরিস্তি। এবার সেই তালিকাতেই নয়া সংযোজন। গোলপার্কের এক স্কুলকে গায়ের জোরে উচ্ছেদ করতে চাইছে প্রোমোটাররা।
৩০ বছর আগে স্বপ্ন দেখেছিলেন ঐন্দ্রিলা সেন। বস্তির ছেলেদের লেখাপড়া শেখাতে গড়ে তুলেছিলেন ইনফ্যান্ট জেসাস জুনিয়র স্কুল। শিক্ষাবিস্তারের এই মহৎ উদ্যোগের ব্যটনটা বয়স বাড়লে তিনি তুলে দেন শাশ্বতী সেনের হাতে। আর্থিক জোগান বজায় রাখার জন্যে ট্রাস্ট তৈরি করে বাসা নামক স্কুল তৈরি করেন।
২০১৬ এর ১৭ ফেব্রুয়ারি এই স্কুলবাড়িকে প্রোমোটারের কাছে বিক্রি করে দেন এই বাড়ির মালিক। ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি শ্বাশ্বতীদেবীরা। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে স্কুলের বর্ষপূর্তির দিনে গোটা ঘটনা জানতে পেরে আকাশ থেকে পড়েন শাশ্বতীদেবী।
শাশ্বতীদেবীর কথায়, "মূলত কাঁকলিয়া, পঞ্চাননতলা, রুবি অঞ্চলের বস্তির ছেলেমেয়েরা আসে এই স্কুলে পড়তে। এই মুহূর্তে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৭০। প্রোমোটার আমাদের পুলিশি হামলার ভয় দেখাচ্ছেন। আমাদের অজ্ঞাতসারে গোটা ঘটনা ঘটেছে,আমরা ন্যূনতম সময়ও পাইনি স্থানান্তরের। আমাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে এই কাজ করা হয়েছে। বারবার মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে থানায় আমাদের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধেই পথে নেমেছি আমরা। অভব্য ব্যবহার করছে প্রোমোটারের শাগরেদরা।" এদিন পুলিশি আক্রমণের ভয়েই ঘটনাস্থলে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসেছে ছাত্ররা, জড়ো হয়েছেন এই খুদেদের বাবা মা-ও।
আসলে একা গোটা লড়াইটা লড়তে পারছেন না শাশ্বতীদেবী। ছোট ছোট মুখগুলি কি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে? অনেকটাই নির্ভর করছে শহরের মানবিকতার ওপরে।