আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। কৈলাশ থেকে ছেলেপুলে সহ বাপের বাড়ি আসছেন 'মা'। শরতের মেঘলা আকাশ, শিউলি ফুলের গন্ধ ইতিমধ্যেই জানান দিচ্ছে সে কথা। সেই মত সারা বাংলায় শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি পর্বও। কুমোড়টুলির মতো নানান জায়গায় জোড় কদমে চলছে মায়ের মূর্তি তৈরির অন্তিম পর্ব। পাড়ায় পাড়ায় শুরু হয়ে গিয়েছে প্যান্ডেল। সারা বছর ধরে অধীর আগ্রহে মানুষ অপেক্ষা করে থাকেন দুর্গা পুজোর জন্য। তার মধ্যে কলকাতার পুজো-কে ঘিরে উন্মাদনা থাকে আরও তুঙ্গে। শপিং থেকে প্যান্ডেল হপিং-এর প্ল্যান শুরু হয়ে গিয়েছে এরই মধ্যে। আর এই পুজো মানেই বনেদি বাড়ির পুজো। কলকাতার সাবেকি পুজো গুলো ছাড়া পুজোটাই যেন অস্পূর্ণ। আর তাই কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজো দেখতেও অসংখ্য মানুষের ভিড় জমে। পাড়ার বারোয়ারি পুজো গুলোর সঙ্গে সঙ্গে এক তালে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বনেদি বাড়ি গুলিতেও। তেমনই কলকাতার বসু মল্লিক বাড়ি জনপ্রিয় বনেদি বাড়ির মধ্যে একটি। যেখানে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে সেখানকার পুজোর অনেক বিশেষত্বও আছে।
বসু মল্লিক বাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল ১৮৩১ সালে। এর পেছনে একটা গল্পও আছে। ১৮৩১ সালে রাধা নাথ মল্লিক প্রথম তার বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। প্রথমে এই পুজোটা হত ১৮, রাধানাথ মল্লিক লেনে। এই রাধানাথ মল্লিক মাত্র ৪৪ বছর বয়সে মারা যান। সেই সময় তিনি কলকাতার বুকে চল্লিশটি বাড়ি রেখে মারা গিয়েছিলেন। তাদের ওই বাড়ি গুলির মধ্যে একটি বাড়ি ২২, রাধানাথ মল্লিক লেনে। পরে সেই বাড়িতেও মল্লিক বাড়ির পুজো শুরু হয়। সেখানে সেই পুজো শুরু করেন রাধানাথ মলল্লিকের নাতি শ্রী কৃষ্ণমহন বসু মল্লিক। এখন অবশ্য এই দুটো বাড়িতেই একই সঙ্গে পুজো হয়।
আরও পড়ুন- এবার বাঙালিয়ানায় ধরা দেবে বেহালা দেবদারু ফটক, জেনে নিন তাদের পুজোর থিম
এই বাড়ির পুজোর একটা বিশেষত্ব আছে। সেখানে সন্ধি পুজো শুরু হয় বন্দুক দিয়ে গুলি চালানোর পরে। এছাড়াও বসু মল্লিক বাড়ির একটা আকর্ষণীয় আচার রয়েছে সেটা হল ‘কাদামাটি খেলা’। এই কাদা মাটি খেলা আসলে ঘরের পুরুষদের মাটি নিয়ে খেলে। এই বাড়ির পুরুষ সদস্যরা মাটি খেলেন আর সেই সঙ্গে ঢাকের তালে নাচেন। এছাড়াও সেখানকার মা সিংহবাহিনী ঠিক নন সেখানকার মা ঘোড়ক রূপি সিংহ বাহিনী। পুজোর এই বিশেষত্বের স্বাদ গ্রহণ করতে হলে যেতে হবে ১৮ ও ২২ রাধানাথ মল্লিক লেনে।