এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হল সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রেসিডেন্সি জেল হাসপাতালে আরও বেশি অসুস্থতা বোধ করতে থাকেন। তাঁর শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা বাড়তে থাকে। জেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা আর ঝুঁকি নিতে চাননি। তড়িঘড়ি সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে এসএসকেএম-এ নিয়ে চলে আসা হয়। মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতো তাঁকে উডবার্ন বিভাগে নিয়ে চলে যায় পুলিশ।
আরও পড়ুন- নারদকাণ্ডে নাটকীয় মোড়, ফিরহাদ-সুব্রত-মদন ও শোভনের জামিনে কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ
প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়ার পরই সুব্রত মুখোপাধ্যায় অসুস্থতা বোধ করতে থাকেন। ফলে মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মদন ও শোভন ভর্তি হলেও সুব্রত ফিরে যান প্রেসিডেন্সি জেলের হাসপাতালে। বয়স জনিত কারণে নানা ধরনের উপসর্গ বাসা বেঁধেছে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শরীরে। এছাড়াও গত কয়েক মাস ধরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রবল পরিশ্রম হয়েছে। স্বাভাবিকবাবেই তিনি শারীরিক দিক থেকে ক্লান্ত। এর সঙ্গে কোভিড১৯-এর ফলে বিধিনিষেধের বেড়াজালও মানতে হচ্ছে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী। কিন্তু, নিজাম প্যালেসে একটি ঘরে টানা ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টার বন্দিদশা সুব্রতর মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলে। সোমবার রাতেই নিজাম প্যালেসে তিনি অসুস্থতার কথা জানান সিবিআই-কে। রাতে মেডিক্যাল টিম এসে পরীক্ষাও করে সুব্রত, ফিরহাদদের। পরীক্ষার পর মেডিক্যাল টিম চলে গেলেও সুব্রত-র অস্থীরতা কাটেনি।
আরও পড়ুন- নারদকাণ্ড: রাজ্য়পালকে একহাত নিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বললেন 'রক্তচোষা'
রাত ১টার পরে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। গভীররাতেও নিজাম প্যালেসের সামনে বসেছিলেন হাজারে হাজারে তৃণমূল সমর্থক এবং কর্মীরা। কিন্তু, রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং এক বিধায়ক ও প্রাক্তন বিজেপি নেতা-কে জেলে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা কোনও আর বাধা তৈরি করেননি। শান্তিপূর্ণভাবেই সুব্রত-ফিরহাদ-মদন এবং শোভনদের প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যায় সিবিআই। জেলে যাওয়ার গাড়িতে ওঠার আগে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষৎকারে ফিরহাদ বলেন, আইনের উপর তাঁদের ভরসা রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার সিবিআই-কে দিয়ে যে চক্রান্ত রচনা করেছে আইনের আদালতে তা থেকে তাঁরা মুক্তি পাবেন বলেই আশা করছেন। সিবিআই-এর পর এবার ইডিও হয়তো কোনও নতুন ষড়যন্ত্র করবে বলেও প্রতিক্রিয়া দেন ফিরহাদ। তবে, তাঁদের এবং তাঁদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আইন এবং বিচারবিভাগের সিদ্ধান্তের উপর ভরসা রাখছেন তা বুঝিয়ে দেন ফিরহাদ।
আরও পড়ুন- গণপরিবহন কর্মীরা কোভিড যোদ্ধা, নবান্নের ঘোষণা মাত্রই টিকাদান শুরু বাসডিপোতে
এর আগে ফিরহাদ কন্যা প্রিয়দর্শিনীও বারবার সিবিআই-এর বিরুদ্ধে অনৈতিকতা এবং বেআইনি পদক্ষেপের অভিযোগ আনলেও তিনি বারবার বলেন বিচারবিভাগের উপর তাঁদের আস্থার কথা। এমনকী কোনও তৃণমূল কর্মী বা সমর্থক এমন কোনও আচরণ না করেন যা ফিরহাদদের জামিনের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে ওঠে- সে সম্পর্কেও আর্জি রাখেন প্রিয়দর্শিনী। সিবিআই-এর ভূমিকা এবং সকাল থেকে তারা যেভাবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে তুলে আনেন তা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন পঞ্চায়েতমন্ত্রীর স্ত্রী।