ইংরেজ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবের বহুরূপী তিনি, রাসবিহারী বসু-র কাহিনি আজও স্মরণীয়

  • রাসবিহারী বসুর জন্ম পূর্ব বর্ধমান জেলার সুবলদহ গ্রামে
  • পাড়ার কৃষ্ণ মন্দিরে তাঁর জন্ম হয় বলে কৃষ্ণের অপর নামে তাঁর নাম
  • তিনি ইংরেজদের মূর্তি তৈরি করে লাঠি খেলার কৌশলে সেই মূর্তিগুলোকে ভেঙে ফেলতেন
  • আলিপুর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় ১৯০৮ সালে অভিযুক্ত হন

ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন বিপ্লবী নেতা এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির সংগঠক। প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা রাসবিহারী বসুর জন্ম পূর্ব বর্ধমান জেলার সুবলদহ গ্রামে। পিতা বিনোদবিহারী বসু। রাসবিহারী বসুর জন্ম পূর্ব বর্ধমান জেলার সুবলদহ গ্রামে। পিতা বিনোদবিহারী বসু ও মায়ের নাম ভুবনেশ্বরী দেবী। সুবলদহ গ্রামের পশ্চিম পাড়াতে অবস্থিত বিষ্ণুমন্দির বা কৃষ্ণ মন্দিরে তাঁর জন্ম হয় বলে রাসবিহারীর দাদু তাঁর নাম রাখেন কৃষ্ণের অপর নাম রাসবিহারীর নামে। রাসবিহারী বসুর শৈশবের পড়াশোনা সুবলদহের গ্রাম্য পাঠশালায়। বর্তমানে এই স্কুলের নাম সুবলদহ রাসবিহারী বসু প্রাথমিক বিদ্যালয়। তার দাদু কালিচরণ বসু এবং তার শিক্ষকদের থেকে বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী গল্প শুনে তাঁর বিপ্লবী আন্দোলনের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন- ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ১৪ এপ্রিলের তাৎপর্য, দেশের প্রথম 'বিজয় দিবস'

Latest Videos

শোনা যায়, তিনি ইংরেজদের মূর্তি তৈরি করে লাঠি খেলার কৌশলে সেই মূর্তিগুলোকে ভেঙে ফেলতেন। তিনি ডাংগুলি খেলতে খুব ভালোবাসতেন। তিনি ছোটবেলায় সুবলদহ গ্রামে ১২ থেকে ১৪ বছর অবধি ছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি পরবর্তীকালে ব্রিটিশদের চোখে ধূলো দিয়ে সুবলদহ গ্রামে এসে গা ঢাকা দিতেন। পিতা বিনোদবিহারী বসুর কর্মক্ষেত্র হিমাচল প্রদেশের নাম ছিল শিমলা। তিনি সুবলদহ পাঠশালা ,মর্টন স্কুল ও ডুপ্লে কলেজের ছাত্র ছিলেন। জীবনের প্রথম দিকে তিনি নানা বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং আলিপুর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় ১৯০৮ সালে অভিযুক্ত হন। এরপর তিনি চলে যান দেরাদুনে। সেখানে বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে হেডক্লার্ক হিসেবে কাজ করেন। দেরাদুনে তিনি গোপনে বাংলা, উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবের বিপ্লবীদের সংস্পর্শে আসেন। তার অন্যতম কৃতিত্ব বড়লাট হার্ডিঞ্জের ওপর প্রাণঘাতী হামলা।

আরও পড়ুন- স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি নেতা, রইল তাঁর সম্বন্ধে অজানা ৯ তথ্য

ভারতের বাইরে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন। দিল্লিতে গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জএর ওপর এক বোমা হামলায় নেতৃত্ব দানের কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে। ১৯১২ সালে বিপ্লবী কিশোর বসন্ত বিশ্বাস রাসবিহারীর নির্দেশনায় দিল্লীতে হার্ডিঞ্জকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়েন। তবে পুলিশ তাঁকে খোনোই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বহু বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সরকারের সন্দেহ তীব্রতর হয়। তিনি ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার নজর এড়াতে সক্ষম হন এবং ১৯১৫ সালে জাপানে চলে যান। ১৯১৫ সালের ১২ ই মে কলকাতার খিদিরপুর বন্দর থেকে জাপানি জাহাজ 'সানুকি-মারু' সহযোগে তিনি ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন। তার আগে নিজেই পাসপোর্ট অফিস থেকে রবীন্দ্রনাথের আত্মীয় রাজা প্রিয়নাথ ঠাকুর ছদ্মনামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন।  

 

১৯৪২ সালের ২৮-২৯ মার্চ টোকিওতে তিনি ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি সেই সম্মেলনে একটি সেনাবাহিনী গঠনের প্রস্তাব দেন। সেই মত ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগ বা ভারতীয় স্বাধীনতা লীগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৪২ সালের ২২ জুন ব্যাঙ্ককে তিনি লীগের দ্বিতীয় সম্মেলনের আহ্বান জানান। এই সম্মেলনে সুভাষচন্দ্র বসুকে লীগে যোগদান ও এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগে ও লীগের সশস্ত্র শাখা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মিতে যোগদানে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে জাপানি সেনা কর্তৃপক্ষের একটি পদক্ষেপে তাঁর প্রকৃত ক্ষমতার উত্তরণ ও সাফল্য ব্যাহত হয়। তবে তার সাংগঠনিক কাঠামোটি থেকে যায়। রাসবিহারী বসু ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি যা আজাদ হিন্দ ফৌজ নামেও পরিচিত গঠন করেন। মৃত্যুর পূর্বে রাসবিহারী বসুকে জাপান সরকার সম্মানসূচক ‘সেকেন্ড অর্ডার অব দি মেরিট অব দি রাইজিং সান’ খেতাবে ভূষিত করে। জাপানে ১৯৪৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাসবিহারী বসুর মৃত্যু হয়।

Share this article
click me!

Latest Videos

লজ্জা মমতার! জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য এই বাংলা!| Suvendu Adhikari #shorts #shortsvideo #suvenduadhikari
PM Modi Live : কুয়েতে Gulf Spic-এর ভারতীয় কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা মোদীর, দেখুন সরাসরি
পুলিশের তৎপরতায় বানচাল ডাকাতির প্ল্যান! গ্রেফতার ২ অপরাধী, চাঞ্চল্য Birbhum-এ
Suvendu Adhikari: 'কত বড় জিহাদি, রামনবমীর মিছিলে ঢিল মেরে দেখাও', হুঙ্কার শুভেন্দুর
খাদান নিয়ে Dev কে বিশ্রী আক্রমণ রাজের, দেবের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা দিলেন Aritra Dutta Banik