ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ১৪ এপ্রিলের তাৎপর্য, দেশের প্রথম 'বিজয় দিবস'

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মরণীয় দিলগুলির মধ্যে ১৪ এপ্রিল ১৯৪৪ এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। ৭৬ বছর আগে এই দিনে আজাদ হিন্দ ফৌজের কর্নেল সৌকত মালিক ইম্ফল থেকে আল্প  দূরে মৈয়াং -এ ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। মিলিটারি ইতিহাসের বইতে দেখা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মণিপুরের বিষেনপুর মৈয়াং সেক্টরে প্রবল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল। তবে এর প্রস্তুটিটা কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই।

Share this Video

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মরণীয় দিলগুলির মধ্যে ১৪ এপ্রিল ১৯৪৪ এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। ৭৬ বছর আগে এই দিনে আজাদ হিন্দ ফৌজের কর্নেল সৌকত মালিক ইম্ফল থেকে আল্প দূরে মৈয়াং -এ ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। মিলিটারি ইতিহাসের বইতে দেখা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মণিপুরের বিষেনপুর মৈয়াং সেক্টরে প্রবল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল। তবে এর প্রস্তুটিটা কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই। ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের ক্যাথে সিনেমা হলে আজাদ হিন্দ সরকার গড়ার ঘোষণা করেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। শপথ নেন সরকারের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান ও সৈন্যবাহিনীর সর্বাধিনায়ক রূপে। তার আগে ১৯৪১ সালের ১৭ জানুয়ারি গৃহত্যাগ করেছিলেন নেতাজি। ছদ্মনামে পাসপোর্ট নিয়ে রাষিয়ার মধ্যে দিয়ে পৌঁছে যান জার্মানি। সেখানে প্রতিষ্ঠা করলেন 'ইন্ডিয়ান লিজিয়ন'। কিন্তু উপলব্ধি করলেন, এত দূর থেকে সামরিক অভিযান সম্ভব ন, যেতে হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। তিন মাসেরও বেশি সময় সমুদ্রের তলা দিয়ে সাবমেরিনে করে ১৯৪৩ সালের ১৬ মে পৌঁছলেন টোকিও। সিঙ্গাপুরে ৫ জুলাই আজাদ হিন্দ বাহিনীর সমবেশে ভাষণ দিলেন। আর ২৫ আগস্ট আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বময় কর্তৃত্ব নিলেন নিজের হাতে। এরপরেই এল মহেন্দ্রক্ষণ। সরকার গঠনের পর মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সিঙ্গাপুর রেডিও মারফত ইঙ্গ-মার্কিন রাজশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল আজাদ হিন্দ সরকার। যুদ্ধে এল প্রাথমিক জয়। ১৯৪৪ সালের ১৪ এপ্রিল মৈরাং শহরতলি দখল করে নিল আজাদ হিন্দ বাহিনী। স্বাধীন ভারত সরকারের হাতে চলে এল মূল ভূখণ্ডের একটি অংশ। এর আগেই অবশ্য আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের শাসন অধিকার অর্জন করেছিল স্বাধীন ভারত সরকার। প্রধানমন্ত্রী নেতাজি সুভাষ ৩০ ডিসেম্বর ১৯৪৩ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন পোর্ট ব্লেয়ারের জিমখানা মাঠে। তবুও শেষ রক্ষা হল না। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বিস্ফোরণের পর জাপানের পক্ষে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না। প্রধান সাহায্যকারী জাপান এভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ায় সর্বাধিনায়ক নেতাজি পশ্চাদ্‌পসারণের সিদ্ধান্ত নিলেন। ১৯৪৫ সালের ১৪–‌১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নেতাজি তাঁর সামরিক কাউন্সিলের সঙ্গে তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করলেন। শেষে নিজে আত্মগোপন করবার সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছিল নেতাজির দূরদর্শী ভাবনা অনুযায়ী, আর সে কথা অকপটে স্বীকার করেছেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট অ্যাটলি।

Related Video