অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ে ক্ষুদিরাম 'সন্ত্রাসবাদী', ভুল শোধরাতে কমিটি গড়ল সরকার

  • পাঠ্য়বইয়ের ভুল শোধরাতে মরিয়া তৃণমূল
  • ফের গঠিত হল নতুন কমিটি
  • কমিটিতে থাকছেন ইতিহাসবিদ জীবন মুখোপাধ্য়ায় ও পবিত্র সরকার

arka deb | Published : Jul 9, 2019 8:52 AM IST / Updated: Jul 09 2019, 02:28 PM IST

তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় রয়েছে গত আট বছর। এই সরকারের বহু খারাপ ভাল সমালোচনার মধ্যেই এই আট বছরে বারবার উঠে এসেছে পাঠ্যপুস্তকের ভুলভ্রান্তি বা নতুন সংযোজন।  সিঙ্গুর আন্দোলনকে পাঠ্যবইয়ে রাখা বা বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু প্রফুল্ল চাকীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্যে বারবার তীরবিদ্ধ হতে হয়েছে সরকারকে। এবার সেই ক্ষত সারাতে, এই পাঠ্যপুস্তকের ভুল সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে  খতিয়ে দেখার জন্য এই কমিটি তৈরি করছে সরকার। জানা যাচ্ছে, ইতিহাসবিদ জীবন মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই কমিটি হয়েছে। সেখানে থাকবেন একাধিক শিক্ষাবিদ। হিন্দু স্কুল, হেয়ার স্কুলের প্রধানশিক্ষকেরা থাকবেন এই কমিটিতে। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারকেও এই কমিটিতে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।

ঠিক কোন দিকগুলিকে খতিয়ে দেখবে এই কমিটি? 


১ পাঠ্যবইয়ের ভাষা যথেষ্ট সহজবোধ্য কিনা তা খতিয়ে দেখা

২  পঞ্চম শ্রেণী থেকে ১২ ক্লাস পর্যন্ত সমস্ত পাঠ্য বইয়ে যে ধরণের পরিবর্তনগুলি হয়েছে তা খতিয়ে দেখা

৩ অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে ক্ষুদিরাম বসুকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে লেখা আছে এই অভিযোগ তোলেন বিরোধী বিধায়ক। সেই ভুলটির সত্যতা যাচাই।

কিন্তু এই অভিযোগ কত দূর সত্য? কী বলছেন ইতিহাসের শিক্ষকরা? আমরা প্রশ্ন রেখেছিলাম বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক শিক্ষক নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি বললেন, "আমি ইতিহাস লিখতে গিয়ে ব্রিটিশ অভিধা বদলে দিতে পারি না। শিক্ষকের ভূমিকাটা এখানে জরুরি। বইয়ের উদ্ধৃতিতে যাকে সন্ত্রাসবাদী বলা হচ্ছে তাঁর  সঙ্গে আজকের মাওবাদী বা অন্য সন্ত্রাসবাদীদের  মিলিয়ে না দেওয়া হয় সেটা দেখার দায়িত্ব শিক্ষকের। শিক্ষককেই বুঝিয়ে দিতে হবে, তিনি (ক্ষুদিরাম) আমাদের অর্থাৎ জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিকদের চোখে বিপ্লবী। বামেরা এই প্রশ্নটা তুলেছে, বলাই বাহুল্য এটা একটা পলিটিক্যাল অজেন্ডা ছিল। প্রথমে সবসাচী ভট্টাচার্য,রজত রায় , বিনয় চৌধুরীদের মত ঐতিহাসিকদের নিয়ে একটা কমিটি গঠিত হয়েছিল। আপনাদের থেকই শুনলাম নতুন কমিটির কথা।


আরও পড়ুনঃ ইন্টার্ন নয়, শিক্ষকই নিয়োগ করবে রাজ্য, জুলাইতে শুরু নিয়োগ পত্র দেওয়া
অধ্যাপককে গায়ের রং তুলে অপমান! ইস্তফা সামলাতে রবীন্দ্রভারতীতে শিক্ষামন্ত্রী

প্ৰশ্ন উঠছে এই নতুন কমিটি নিয়েও। কমিটির কর্ণধারদের রাজনৈতিক সত্তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে।  তবে পাঠ্য বইয়ের ভুলচুকটুকু বাদ দিলে তা যে আগের থেকে অনেকটাই  প্রাঞ্জল হয়েছে এই কথা অতি নিন্দুকও মেনে নেবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলছেন, আগের বইয়ে যে গতানুগতিক লেখা ছিল এখন আর তেমন নেই। পাঠ্যবস্তুকে  সহজবোধ্য ও আকর্ষণীয় করার জন্যে ছবির ব্যবহারও অতীতের তুলনায় অনেক বেশি। এখনকার বইয়ে 'ভেবে দেখো', 'টুকরো কথা' এই ধরনের অংশ প্রতিটা অধ্যায়ের শেষে থাকে। আপাতত স্থির হয়েছে সামগ্রিক মূল্যায়ণটি শেষ হবে তিন মাসের মধ্যে। তবে এই শিক্ষাবর্ষে এই রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার উপায়ও নেই। ২০২০-তে সংস্কার সম্ভব। তৃণমূল সরকার বিলক্ষণ জানে জনাদেশের দিন তার থেকে দূরে নয়।

Share this article
click me!