'কোন টিচারের কলার ধরতে হবে বলুন', যাদবপুরের তৃণমূল ছাত্রনেতার অডিওক্লিপ ভাইরাল। তার ব্যাখ্যা, 'সাধারণ মানুষ দুরকম ভাষায় কথা বলেন, ব্রোকেন ল্যাঙ্গোয়েজ এবং স্পোকেন ল্যাঙ্গোয়েজ। তিনি আরও গভীরে এর ব্যাখ্যা টেনে বুঝিয়েছেন, যে ভাষায় মানুষ ঘরে ভিতরে কথা বলেন, সেটাকে ব্রোকেন ল্যাঙ্গোয়েজ বলা হয়।'
যাদবপুরের ছাত্রনেতার অশালীন ভাষার অডিও ভাইরাল। রাজ্যের একের পর এক অডিও ভাইরালকাণ্ডে বিপাকে শাসক দল। তা সেই আলিয়াকাণ্ডের প্রাক্তন টিএমসিপি নেতাই হোক, কিংবা ঝালদাকাণ্ডে আইসি, সব ক্ষেত্রেই অডিও বাইরে বেরিয়ে আসছে। আর এখানেই কুপোকাৎ করছে বিরোধীরা। বিশেষ করে বিজেপি। আর এবার ভাইরাল অডিওতে, শোনা গিয়েছে যাদবপুরের তৃণমূল ছাত্রপরিষদের নেতার গলা। যিনি বলছেন, 'কোন টিচারের কলার ধরতে হবে বলুন।' একটি সমাবেশে গিয়ে তিনি বলেছেন, তিনি যেকোনও অধ্যাপকের কলার ধরার সাহস রাখেন। ইতিমধ্যেই এই অডিওটি ভাইরাল হয়েছে। যদিও এই অডিটির সত্যতা যাচাই করেনি এশিয়ানেট নিউজ বাংলা।
'যাদবপুরের কোন টিচারের কলার ধরতে হবে'
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার কাঠগড়ায় যাদবপুরের বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলের ছাত্র নেতা। সঞ্জীব প্রামাণিক নামের তৃণমূলের ওই ছাত্র নেতার অডিও ইতিমধ্য়েই রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল হয়ে যাওয়া ওই অডিওটিতে সঞ্জীব প্রামাণিক বলেছেন, 'যাদবপুরের কোন টিচারের কলার ধরতে হবে সঞ্জীব প্রামাণিককে বল। সঞ্জীব প্রামাণিক এতবড় ক্ষমতা রাখে। আমার হিস্ট্রি অনেকেই জানেন না। আমার অ্য়াকটিভিটি অনেকেই জানেন না। খুব কম লোকেই জানে।' সমাবেশে গিয়ে বলা সঞ্জীবের এই বিস্ফোরক বার্তার অডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছে। যদিও এনিয়ে এখনও কিছু মন্তব্য করেনি শাসকদল।
'সাধারণ মানুষ দুরকম ভাষায় কথা বলেন, ব্রোকেন ল্যাঙ্গোয়েজ এবং স্পোকেন ল্যাঙ্গোয়েজ'
এদিকে ভাইরাল হওয়া ওই কথোপকথন অস্বীকার করেননি যাদবপুরের বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি-র ইউনিট সভাপতি সঞ্জীব প্রামাণিক। কিন্তু কোন কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তার ব্যাখ্যা, 'সাধারণ মানুষ দুরকম ভাষায় কথা বলেন, ব্রোকেন ল্যাঙ্গোয়েজ এবং স্পোকেন ল্যাঙ্গোয়েজ। তিনি আরও গভীরে এর ব্যাখ্যা টেনে বুঝিয়েছেন, যে ভাষায় মানুষ ঘরে ভিতরে কথা বলেন, সেটাকে ব্রোকেন ল্যাঙ্গোয়েজ বলা হয়।' এক্ষেত্রেও তিনি তেমনভাবেই কথা বলেছেন বলে দাবি তাঁর।
আরও পড়ুন, 'বার্নল নিয়ে বসুন ভাই', বিজেপিকে নিয়ে বেফাঁস বলতেই শুভেন্দুকে খোঁচা কুণালের
'আমার পিএইচডি আটকে দেওয়া হবে'
তবে এক্ষেত্রে তার পাল্টা যুক্তি,' যাদবপুরের বামপন্থী অধ্যাপকেরা তাঁদের হেনস্থা করেন। তৃণমূল করেন বলে তাঁদের অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়, বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, আমার পিএইচডি আটকে দেওয়া হবে। সিনিয়রকে ফোন করে বলা হয়েছে। কোন অধ্যাপক বলেছে, সেটাও জানি। তৃণমূল করি বলে এমন ঘটনা বারবার ঘটছে যাদবপুরে।' তবে যতোই হোক, একজন অধ্যাপকের কলার ধরাটা কতটা যুক্তি সঙ্গত, এনিয়ে প্রশ্ন উঠেইছে। এর উত্তরে সঞ্জীব বলেছেন, 'তিনি এই বিষয়টা কখনই সমর্থন করেন না। কিন্তু কেন একথা বলেছিলেন , তাঁর কাছে খুব একটা স্পষ্ট নয়।'
'এই সরকারের মানসিকতা খুব খারাপ'-শিক্ষক সংগঠনের নেতা
অপরদিকে, শিক্ষক সংগঠনের নেতা পার্থপ্রতিম রায় বলেছেন, যাদবপুরে এমন ঘটনা আগে কোনওদিন দেখিনি। আমরা বিশ্বাস করি , সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা এর সঙ্গে যুক্ত নয়। এর পিছনে রাজনীতির হাত আছে বলে মনে করেন তিনি। তার অভিযোগ, 'এই সরকারের মানসিকতা খুব খারাপ। কঠোর হলে হয়তো এই ধরণের ঘটনা ঘটত না।' প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই ভাইরাল হয়েছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতার কর্মকাণ্ড। তবে সেটা ছিল অডিও নয়, ভিডিও। সুতরাং মন দিয়ে, সময় নিয়ে, গুছিয়ে সেই ভিডিও দেখেছে শাসকবিরোধী রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন, '২০১৯ বহিঃষ্কার হয়েও কী করে দলীয় প্রচারে গিয়াসউদ্দীন', আলিয়াকাণ্ডে মুখ খুললেন কুণাল ঘোষ
অ্য়াকশন রিপ্লে
সেক্ষেত্রে আর কোনও জিজ্ঞাসা নয়, সোজা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে নিগ্রহ করার বিষয়টি সামনে এসেছে। তবে কাহানিতে টুইস্ট, ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গিয়াসউদ্দীন মন্ডলকে দলীয় ছাত্র নেতা বলতে নারাজ তৃণমূল। তাঁদের দাবি বহুদিন আগেই তাকে বহিষ্কৃত করা হয়েছে দল থেকে। ইতিমধ্য়েই তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে যাদবপুরের এই ঘটনা ঠিক তারপরেই ঘটল। তবে সঞ্জীব প্রামাণিকের ঘটনাটা হিট উউকেট হতে হতে বেঁচে গেছে কিনা, সেটা সময়ের অ্য়াকশন রিপ্লে দেখলেই বোঝা যাবে।