যৌন কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। আর সুপ্রিমকোর্টের সেই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের পরেই নিজের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সরব হয়েছেন, কলকাতার যৌনকর্মীরা।
যৌন কর্মীদের সাংবিধানিক অধিকার প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। আর সুপ্রিমকোর্টের সেই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের পরেই নিজের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সরব হয়েছেন, কলকাতার যৌনকর্মীরা। উল্লেখ্য, বুধবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও-র বেঞ্চ মন্তব্য করেছে, যৌন কর্মী এবং তাঁদের সন্তানদেরও মানুষের মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই নির্দেশের বাস্তবায়ন কি সম্ভব, আদালয়ের ওই ঐতিহাসিক মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠেছে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ মেনে নিয়ে যৌনকর্মীদের উপরে পুলিশের শারীরিক মানসিক নির্যাতন আদৌ কি বন্ধ হবে, প্রশ্ন উঠেছে।
কালীঘাটের যৌনপল্লীতে থাকা অধিকাংশ মহিলা যৌনকর্মীরই গড় বয়েস পঞ্চাশের কোঠায়। এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা এক পুরুষ যৌন কর্মী রবী দাস (নাম পরিবর্তিত ) জানিয়েছেন, দ্বিতীয় প্রজন্মের কেউ এখন যৌনপল্লীতে থাকতে চায় না। পড়াশোনা করে অন্যত্র যেতে চায়। যৌনকর্মীদের মেয়েরাও এই পেশায় আসেন না। এখানে মূলত 'মায়েরাই' এই কাজ করেন। পুলিশ হানা দিয়ে খরিদ্দাদের তুলে নিয়ে গেলে, 'মায়েদের' ব্যাবসা মার যায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যের পর মন খুলেছেন ১৫ বছর বয়েসে যৌন পল্লীতে আসা আসিনা বেগম (নাম পরিবর্তিত)। যিনি মূলত এখন প্রৌঢ়া। তিনি জানিয়েছেন, তার বিয়ে হয়েছিল ডায়মন্ডহারবারে। স্বামী মারধোর করত। তাই পালিয়ে কলকাতায় চলে আসেন কাজের খোঁজে। এভাবেই পরে যৌন কর্মী হয়ে যান বলে জানিয়েছেন তিনি। আসিনা আরও জানিয়েছেন, বিয়ে হয়েছিল ডায়মন্ডহারবারে।
সোনাগাছিতে যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি প্রাক্তন সেক্রেটারি তথা মেন্টর ভারতী দে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টে যৌনকর্মীদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তাঁদের কাজকে পেশা হিসেবে মেনে নিয়ে, সম্মান দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এটাই বড় পাওনা বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এটা নিয়ে আইন হলে তিনি আরও বেশি খুশি হবেন বলে জানিয়েছেন ভারতী দে।
উল্লেখ্য, যৌনকর্মীদের সম্মিত দেওয়া দেহ ব্যববসাকে বৈধ পেশা হিসেবে সম্মতি দেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যুগান্তকারী নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিপবার সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ আদেশে বলেছে যে, যৌনকর্মীদের সম্মতি দেওযার বিরুদ্ধে পুলিশ হস্পক্ষেপ করতে পারে না। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট বলেছে পুলিশের ফৌজদারী ব্যবস্থা নেওয়াও উচিত নয়। এতে বলা হয় পতিতাবৃত্তি একটি পেশা । যৌনকর্মীরা আইনের অধীনে মর্যাদা ও সমান সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী বলে জানানো হয়েছে।