বিমানবন্দরে 'ফাঁক গলে' কলকাতার তরুণের করোনা, কেন অধরা ভাইরাসের উপসর্গ

  • কলকাতায় ধরা পড়েছে রাজ্য়ের প্রথম করোনা আক্রান্ত
  • ইংল্যান্ড থেকে কলকাতায় ফিরে বাড়িতে ছিল সেই তরুণ
  • কলকাতা বিমানবন্দরের করোনা পরীক্ষায় কী হয়েছিল
  • কেন তার শরীরে ধরা পড়েনি করোনার কোনও উপসর্গ 

Asianet News Bangla | Published : Mar 18, 2020 10:47 AM IST / Updated: Mar 18 2020, 04:30 PM IST

কলকাতায় ধরা পড়েছে রাজ্য়ের প্রথম করোনা আক্রান্ত। ইংল্যান্ড থেকে কলকাতায় ফিরে বাড়িতে ছিল সেই তরুণ। অথচ কলকাতা বিমানবন্দরের করোনা পরীক্ষায় ধরা পড়েনি করোনার উপসর্গ। প্রশ্ন উঠেছে, তরুণের মা সরকারি আমলা বলেই কি তরুণ নিয়ে মাথা ঘামায়নি  বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। না সত্য়িই কলকাতা বিমানবন্দরে ওই তরুণের দেহে করোনার উপসর্গ পাওয়া যায়নি। 

নবান্নে করোনা আতঙ্ক, হোম কোয়ারেন্টাইন-এ গেলেন সস্ত্রীক স্বরাষ্ট্রসচিব.

এ বিষয়ে কলকাতা বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য় অধিকর্তা জানান, করোনা প্রভাবিত সাতটি দেশের যাত্রীদের মূলত পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই সাত দেশের তালিকায়  রয়েছে,চিন ,কোরিয়া, জাপান, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, ইরান। ইংল্যান্ডের নাম এতদিন সেই তালিকায় ছিল না। এই সব দেশের যাত্রীদের শরীরে করোনার  উপসর্গ দেখলেই সরাসরি পাঠানো হচ্ছে বেলেঘাটা আইডিতে। কিন্তু তরুণের ক্ষেত্রে শরীরে কোনও উপসর্গ না মেলায় এমনিতেই তাকে বাড়িতে আলাদাভাবে থাকতে হত। কিন্তু সোমবার থেকে সবার জন্য় রাজেয়ের উদ্য়োগে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা ব্য়বস্থা চালু হয়েছে।

করোনায় আক্রান্ত আমলার ছেলে, রাইটার্সে সিল করা হল তাঁর ঘর

এদিকে ছেলের মা আমলা হওয়ায় তরুণ বাড়তি সুবিধা পেয়েছিল কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ছেলের শরীরে উপসর্গের কথা জানতে পেরেও নবান্নে ছিলেন তরুণের মা। যার জেরে বুধবার নবান্নে চলছে স্যানিটাইজেশন অভিযান। জানা গিয়েছে, নবান্নে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাই হোম কোয়রান্টিনে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। যার জেরে করোনা আক্রান্ত  তরুণের মায়ের ওপর চটেছেন অনেকেই। সূত্রের খবর, এ নিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে তাঁকে। 

করোনা রুখতে বিদেশ ফেরৎদের খুঁজে বার করতে হবে রাজ্য়কেই, নির্দেশ কেন্দ্রের.

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,স্পেশাল আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে ওই তরুণকে। তবে একা তরুণ নন, তাঁর পরিবার ওই তরুণের যাঁরা সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদেরও নজরদারির মধ্য়ে রাখা হয়েছে। তরুণের পাশাপাশি তার মা-বাবা ও গাড়িচালককে বেলেঘাটা আইডিতে কোয়েরেন্টিনে রাখা হয়েছে৷ জানা গিয়েছে,ওই তরুণ ইংল্যান্ডে একটি বার্থডে পার্টিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। কলকাতায় ফিরে জানতে পারেন করোনায় আক্রান্ত  ছিল  তার বান্ধবী। যদিও ইংল্যান্ড থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামলেও তার শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ ধরা পড়েনি। জ্বর, সর্দি, কাশি এমনকী শ্বাসকষ্টের কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি ওই তরুণের শরীরে। তাই বান্ধবীর কথা জানতে পেরে বাড়িতেই আলাদা ছিলেন ওই তরুণ।

কিন্ত সোমবার থেকেই হঠাৎ তাঁর শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে  থাকে। একে একে ধরা  পড়ে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ। এরপরই তাকে বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কাল বিলম্ব  না করে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। মঙ্গলবার বিকেলেই তার করোনা পরীক্ষা হয়। বিকেলে সেই পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়ে। তবে এত কিছুর পরও তরুণের চিকিৎসা নিয়ে আশাবাদী ডাক্তাররা। তাঁদের মতে, এখনও পর্যন্ত স্টেজ-২ পর্যায়ে রয়েছে ওই তরুণের করোনা সংক্রমণ৷ ফলে একেবারে আশঙ্কাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। বিশেষ আইসোলেশনে রাখা হয়েছে তাকে। বয়স কম হওয়ায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই ওকে স্বাভাবিক করতে পারবে।  ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে আক্রান্ত।

তবে ডাক্তাররা জানিয়েছেন বয়স বেশি অর্থাৎ সিনিয়র সিটিজেন বা সত্তরোর্ধ কেউ হলে চিন্তার বিষয় থাকত। কারণ শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই ভাইরাসের থাবা থেকে সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেন না তারা। ডাক্তারদের  কথা যে যুক্তিযুক্ত তা বিশ্বে করোনায় মৃতদের পরিসংখ্য়ান থেকেই প্রমাণিত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করোনা ভাইরাসের শিকার হয়েছেন  প্রবীণ ব্য়ক্তিরা।

Share this article
click me!