সালটা ১৯৪২ জার্মান সেনাবাহিনী রাশিয়ায় আক্রমণ করল। স্ট্যালিনগ্রাদ ছিল তার প্রধান কেন্দ্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই ভয়ানক পরিস্থিতিতে ইউলিয়া ও রোজালিনা নামের দুই বোন আলাদা হয়ে যায়। ছোট বোন ইউলিয়া ১৯২৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন আর বড় বোন রোজালিনা জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯১৯ সালে। সেই সময় রোজালিনা-কে উদ্ধার করেছিল চেলিয়াবিনস্কের এক কারখানার শ্রমীক। সেখান থেকে প্রায় ১৪০০ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পূর্ব শহর ইউরালেস পৌঁছে বসবাস শুরু করেন। সেই শেষ দেখা বোনের সঙ্গে। যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে চিরকালের জন্য আলাদা হয়ে যায় দুই বোন।
আরও পড়ুন- পৃথিবীর এমনকিছু ঘটনা যা বহুদিন আগেই কথিত হয়েছিল, দেখুন তার তালিকা
সম্প্রতি, স্থানীয় এক টিভি শো এবং পুলিশি তৎপরতায় আলাদা হওয়ার ৭৮ বছর পর দুই বোনের আবার দেখা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে এরকম, একটি টিভি শো-তে এসে ইউলিয়ার মেয়ে মায়ের মুখে শোনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই ভয়ানক পরিস্থিতির কথা বলছিলেন। সেই সঙ্গে মা ইউলিয়া ও তাঁর দিদি রোজালিনা-র কথাও উল্লেখ করেছেন। টিভি শোয়ের সেই সূত্র ধরেই বোনের হদিশ পান রোজালিনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এই ভয়ানক গল্পের সেই শো দেখছিলেন রোজালিনা। এমন গল্প শুনে তাঁর মনে হয়, এই ঘটনা তাঁর জানা। টিভিতে দেখতে পাওয়া মেয়েটি তো তাঁরই নাম উল্লেখ করে, তাঁর আর তাঁর বোনের গল্পই বলছে। এত বছর পর আবারও সে দিনের ছোট্ট বোনকে ফিরে পাওয়ার অমোঘ ইচ্ছে পেয়ে বসে। চ্যানেলের নাম উল্লেখ করে যোগাযোগ করেন পুলিশে। পুলিশি তৎপরতায় ৭৮ বছর পর আবারও মুখোমুখি হয় হারিয়ে যাওয়া দুই বোন।
টিভি চ্যানেল ও পুলিশ-কে ধন্যবাদ জানিয়ে দুই বোন জানান, সব সময় মনে হত মৃত্যুর আগে অন্তত একবার হলেও দুজনের দেখা হবেই। দুই বোনকে মিলাতে পেরে আনন্দে আল্পুত স্থানীয় প্রশাসন-সহ টিভি চ্যানেলটিও। সম্প্রতি দুই বোনকে একসঙ্গে রেখে স্থানীয় অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি বৈঠকের ফুটেজ প্রকাশ করেছেন। তাতে দেখা গেছে ছোট বেলার মত পাশাপাশি এখনও হাত ধরে বসে রয়েছে রোজালিনা ও ইউলিয়া। "আর কখনও হারাতে দেবোনা তোমায়", একে অপরকে ধরে আবেগে চোখের জলে ভাসলেন দুই বোন।