
মেহেন্দি পড়া শুধুমাত্র অবাঙালিদেরই নয় আজকাল বাঙালিরাও বিভিন্ন রকম পূজা পার্বণ অনুষ্ঠান রীতিনীতিতে মেহেন্দি হাতে পড়েই থাকেন। কেউ কেউ বাড়িতে পড়েন আবার কেউ কেউ বাইরে থেকে পড়ে আসেন।বিয়েবাড়ি হোক, উৎসব-অনুষ্ঠান হোক, বাঙালি মেয়েরা মেহন্দির নানা রকম নকশায় হাত সাজাচ্ছেন। মেহন্দি পরছেন পায়েও।
কিন্তু মেহেন্দি টা যে সঠিক মানের বা ঠিকঠাক ব্রান্ডের এবং কোনো সমস্যা হবে না আগামী দিনে হাতে পড়লে সে বিষয়ে আপনি সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য বাছাই করছেন তো মেহেন্দি?
পুজোর সময়ে যদি মেহন্দি পরার ইচ্ছা থাকে, তা হলে কেনার আগে অবশ্যই সতর্ক হন। এখন রাস্তাতেও মেহন্দির উপকরণ নিয়ে বসেন অনেকে। পছন্দের নকশা বেছে নিলে তাঁরাই ঝটপট এঁকে দেবেন হাতে। সে সব যে খারাপ তা নয়, তবে আজকাল ভেজাল মেহন্দির খুব রমরমা বাজার। এতে এত রকম রাসায়নিক থাকে যে, ত্বকের সংস্পর্শে এলেই সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। নানা রকম চর্মরোগও হতে পারে।
ভেজাল মেহন্দির মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক উপাদান থাকে হলো ‘প্যারাফেনিলিনডায়ামিন’ (পিপিডি)। চুল রং করার ডাইতেও থাকে এই রাসায়নিক। এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস নামক চর্মরোগের ঝুঁকিও বাড়বে। তা ছাড়া ত্বকে জ্বালা, চুলকানি থেকে এগ্জ়িমার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে পিপিডি-র অধিক ব্যবহারে ত্বকের মেলানিন রঞ্জকের পরিমাণের তারতম্য হয়। তার থেকে ত্বকে সাদা সাদা ছোপ পড়তে পারে। ভিটিলিগো বা শ্বেতির সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
এছাড়া ভেজাল মেহন্দিতে বেঞ্জিন ও টলুইনও থাকে, যা থেকে ত্বকের সংক্রমণ হতে পারে। এই সব রাসায়নিক দীর্ঘ সময় ত্বকের সংস্পর্শে থাকলে তা থেকে র্যাশ হতে পারে।
মেহেন্দি করার সময় অবশ্যই রঙের দিকে খেয়াল রাখুন। আসল মেহন্দির রং সাধারণত লালচে বাদামি, কমলা বা মেরুন হতে পারে। যদি দেখেন, রং খুব গাঢ় কালো হয়ে যাচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে, সেই মেহন্দিতে পিপিডি-র মাত্রা অস্বাভাবিক রকম বেশি।
প্রাকৃতিক মেহন্দির নিজস্ব গন্ধ থাকে। যদি দেখেন মেহন্দি থেকে তীব্র রাসায়নিকের মতো গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে, সেটিতে ভেজাল মেশানো আছে।
বিশ্বস্ত দোকান থেকে বা ব্র্যান্ডের নাম দেখেই মেহন্দি কেনা উচিত। সম্ভব হলে ঘরে তৈরি প্রাকৃতিক মেহন্দি ব্যবহার করুন।