
শীতের মিষ্টি মোয়ার জন্ম ১৯ শতকের শেষ দিকে। সম্ভবত জয়নগর- মজিলপুরের পূর্ণচন্দ্র ঘোষ নামে এক দরিদ্র মিষ্টি বিক্রেতা এর উদ্ভাবক। যা স্থানীয়ভাবে শুরু হয়ে আজ দেশজুলেও বিখ্যাত; এটি মূলত খেজুরের গুড়, মুড়ি ও তিলের সংমিশ্রণে তৈরি হয়, যা শীতের উষ্ণতা ও পুষ্টি জোগায়।
উদ্ভাবক ও সময়কাল: প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী, উনিশ শতকের শেষ দিকে (১৮৯০ সালের আশেপাশে) জয়নগর-মজিলপুরের পূর্ণচন্দ্র ঘোষ নামক এক দরিদ্র মিষ্টি বিক্রেতা মোয়া তৈরি করা শুরু করেন, যা প্রথমে স্থানীয় বাজারেই পরিচিত ছিল।
শীতের প্রয়োজন: শীতকালে শরীর গরম রাখতে এবং শক্তি জোগাতে এই মিষ্টির প্রয়োজন হয়, যা খই, গুড় ও তিলের মতো উপকরণ দিয়ে তৈরি হওয়ায় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর।
** কীভাবে মোয়া তৈরি হয় (ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি):
মোয়ার ইতিহাস ও সৃষ্টি (১৮৯০ সাল থেকে) : মোয়ার ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন হলেও, জয়নগরের মোয়ার আধুনিক এবং জনপ্রিয় রূপটি প্রায় ১৩০ বছর পুরোনো।
সৃষ্টির পটভূমি: লোকমুখে প্রচলিত যে, ১৯ শতকের শেষ দিকে (আনুমানিক ১৮৯০ সালের আশেপাশে) জয়নগর-মজিলপুরের এক দরিদ্র মিষ্টি ব্যবসায়ী পূর্ণচন্দ্র ঘোষ এই মোয়া তৈরি শুরু করেন। প্রথমে এটি স্থানীয়ভাবে পরিচিত ছিল।
মূল উপাদান: মোয়া তৈরির প্রধান দুটি উপাদান হলো কনকচূড় ধান থেকে তৈরি খই এবং শীতকালে পাওয়া নলেন গুড় (খেজুর গুড়ের বিশেষ ও উন্নত রূপ)। কনকচূড় খই ছিল সহজলভ্য এবং সুগন্ধযুক্ত, যা মোয়াকে একটি স্বতন্ত্র স্বাদ দিত।
প্রাথমিক জনপ্রিয়তা: পূর্ণচন্দ্র ঘোষের মোয়া তার সুগন্ধ এবং নরম, অথচ দৃঢ় গঠনের কারণে দ্রুত খ্যাতি অর্জন করে। প্রথমদিকে ছোট ভাঁড়ে এটি বিক্রি হলেও, ধীরে ধীরে এর চাহিদা বাড়ে।
আকার দেওয়া: মিশ্রণটি গরম থাকা অবস্থাতেই হাতে গোল গোল বা মোয়ার আকার দেওয়া হয়, যা ঠান্ডা হলে শক্ত হয়ে যায়।
** শীতকালে মোয়ার গুরুত্ব: শীতের তীব্র ঠান্ডা থেকে বাঁচতে এই মোয়া শরীরে উষ্ণতা দেয়। মুড়ি, গুড় ও তিল উচ্চ ক্যালোরি ও পুষ্টির উৎস, যা শীতের কর্মঠ জীবনের জন্য অপরিহার্য। সুতরাং, মোয়া শুধু একটি মিষ্টি নয়, এটি বাঙালির শীতকালীন ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা শীতের দিনে উষ্ণতা ও আনন্দের জোগান দেয়।