
শীত পড়লে নিত্যনতুন পিঠাপুলি খাওয়ার সুযোগ আসে। কারণ এই শীতের সময়তেই নতুন গুড়ের পায়েস পুলি পিঠে ঘরে ঘরে বানানো হয়। এখন তো ব্যস্ততার জন্য সবকিছু রেডিমেডি কিনতে পাওয়া যায়। বানানো সুযোগ খুব কমই হয়। আগেকার দিনে যেরকম মা ঠাকুমারা ঘরেই পিঠে পুলি পায়েস বানাতেন এখন আবার সেইগুলি রেডিমেটও কিনতে পাওয়া যায় কিন্তু ঘরের স্বাদ আর বাইরের স্বাদ তো এক হয় না তাই না? আসুন তাহলে আজকে দেখা যাক আগেকার দিনে নরম নরম দুধ পুলি পিঠে মা ঠাকুমারা কেমন ভাবে বানাতেন!
আগেকার দিনে মা-ঠাকুমাদের মতো নরম দুধপুলি বানাতে চালের গুঁড়ো ফুটন্ত গরম জলে মিশিয়ে সেদ্ধ করা, পুরে সেদ্ধ আলু বা মিষ্টি কুমড়ো মেশানো, আর দুধ ও গুড়ের সঠিক ব্যবহার (গুড় পুলি সেদ্ধ হওয়ার পর মেশানো) জরুরি; এতে পুলি নরম হয়, সেদ্ধ করার সময় ফাটে না, এবং ঠান্ডা হলেও শক্ত হয় না, যা শীতের পিঠাকে করে তোলে অসাধারণ।
নরম দুধপুলির জন্য প্রয়োজনীয় টিপস:
ফুটন্ত জল: চালের গুঁড়ো মেশানোর জন্য জল অবশ্যই টগবগ করে ফুটতে হবে। গ্যাস বন্ধ করবেন না, আঁচ কমিয়ে দিন। এতে চাল ভালোভাবে সেদ্ধ হয় এবং পুলি নরম হয়।
রাঙা আলু/মিষ্টি কুমড়ো: চালের গুঁড়োর মণ্ড তৈরির সময় সামান্য সেদ্ধ রাঙা আলু বা মিষ্টি কুমড়ো মেখে নিলে মণ্ড নরম ও আঠালো হয়, ফলে পুলি নরম থাকে এবং ফাটে না।
সঠিক পরিমাণ: প্রয়োজনমতো চালের গুঁড়ো ও জলের পরিমাণ ঠিক রাখুন, অতিরিক্ত বা কম হলে মণ্ড শক্ত হয়ে যেতে পারে।
নারকেলের পুর: নারকেল কোরা, গুড় বা চিনি, এলাচ ও সামান্য জয়ফল গুঁড়ো মিশিয়ে পুর তৈরি করুন। পুর যেন খুব বেশি জলীয় না হয়।
পুর ভরা: চালের মণ্ড থেকে ছোট লেচি কেটে, গর্ত করে পুর ভরে মুখ ভালো করে বন্ধ করুন যাতে সেদ্ধ করার সময় খুলে না যায়।
দুধ ঘন করা: দুধ ফুটিয়ে ঘন করে নিন। এতে স্বাদ ও ঘনত্ব বাড়ে।
গুড় যোগ: পুলি সেদ্ধ হয়ে গেলে (ভাতে বা দুধে) গরম দুধের মধ্যে গলা গুড় (আলাদা দুধে গুড় গলিয়ে নেওয়া ভালো) মিশিয়ে দিন। পুলি সেদ্ধ হওয়ার আগে গুড় মেশালে দুধ ফেটে যেতে পারে।
ধীরে ধীরে মেশানো: গুড় মেশানোর পর হালকা হাতে নাড়ুন, যাতে পুলিগুলো ভেঙে না যায়।
ভাতে সেদ্ধ: অনেকে ভাতে পুলি সেদ্ধ করে নরম করেন। ফুটন্ত ভাতের মধ্যে পুলিগুলো দিয়ে কিছু সময় সেদ্ধ করে তুলে নিন।
দুধে সেদ্ধ: এরপর ঘন দুধে হালকা আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন।
ঘি ও এলাচ: সামান্য ঘি এবং এলাচ বা জয়ফল গুঁড়ো ব্যবহার করলে সুগন্ধ ও স্বাদ বাড়ে।
চিনির বদলে গুড়: চিনির চেয়ে খেজুর বা আখের গুড় ব্যবহার করলে স্বাদ ও স্বাস্থ্যগুণ উভয়ই ভালো থাকে।
এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে আপনার দুধপুলি মা-ঠাকুমাদের হাতের মতোই নরম ও সুস্বাদু হবে, যা শীতের আমেজকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।