
এখন ঘরে ঘরে তরুণীদের মধ্যে ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ বা PCOD। তবে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্ত সমস্যাই যে এই রোগকে ঘিরে, এমনটা নয়। আজকাল কুসংস্কারে আচ্ছন্ন না হলেও হাতে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা তরুণীদের মধ্যে ঋতুস্রাব নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি করেছে। ইন্টারনেটের কথা শুনে সামান্য কিছু লক্ষণ দেখে অনেকেই PCOD হওয়ার ভুল ধারণা করে নেয়। অথচ লক্ষণ এক হলেও রোগ আলাদা ও মারাত্মক হতে পারে। তাই কোনোরকম পরীক্ষা না করিয়ে ঐভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়। তাই অকারণে ভয় পাওয়া, বিভ্রান্ত হওয়ার থেকে ভুল ধারণাগুলি দূর করে নিয়ে ভালো। আসুন জেনে নিই ঋতুস্রাব নিয়ে এমন আর কী কী ধারণা রয়েছে মেয়েদের মনে?
১। অনিয়মিত ঋতুচক্র মানেই PCOD
অনিয়মিত ঋতুস্রাব মানেই PCOD হয়েছে এমনটা ভাবা ভুল। মানসিক চাপ, হরমোনজনিত সমস্যা থেকেও ঋতুচক্রে সমস্যা বা বদল আসতে পারে। ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে ভুল প্রতিকার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যার চিকিৎসক পল্লবী প্রসাদ বলেন, 'এমনকী শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি হলেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। জীবনযাপনে হঠাৎ পরিবর্তন এলেও কিন্তু তার প্রভাব ঋতুচক্রের উপর পড়ে।'
২। ২৮ দিন পর পর ঋতুস্রাব না হলেই বুঝি
২৮ দিন অন্তর ঋতুচক্র চলতে থাকলে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক মহিলারাই আছেন যাদের ঋতুচক্রের তারিখ কিছুদিন এগিয়ে আসে বা কিছুদিন পিছিয়ে যান। অর্থাৎ দুটি ঋতুচক্রের মাঝে ২৮ দিন অন্তর না থেকে ২১ বা ৩৫ দিনের অন্তর হয়। চিকিৎসকরা বলে থাকেন, ডাক্তারি ভাষায় এই ঘটনাও স্বাভাবিক হতে পারে।
৩। ঋতুস্রাব চলাকালীন যন্ত্রনা হওয়া অস্বাভাবিক নয়
অধিকাংশ মহিলাদেরই ঋতুচক্রের সময় পেটে যন্ত্রণা হয়। এবং মহিলারা এটাকেই স্বাভাবিক বলে মনে করে থাকে। শারীরবৃত্তীয় অন্যান্য সমস্যা থেকেও এমন কষ্ট হতে পারে। এন্ডোমেট্রিয়োসিস, ফাইব্রয়েডের মতো রোগ থাকলেও কিন্তু এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যন্ত্রণা
৪। অনিয়মিত ঋতুস্রাবে গর্ভধারণ অসম্ভব
২-১ মাস ঋতুস্রাবের দিন এদিক ওদিক হলে সেটা স্বাভাবিক। তবে এমনটা যদি দীর্ঘ কয়েক মাস ধরেই চলতে থাকে, তাহলে ডিম্বস্ফোটনের সময়ও এদিক ওদিক হয়ে যেতে পারে। তাই চিকিৎসকরাই বলছেন, ২-১ মাস ঋতুচক্রের দিন হেরফের হওয়া মানে গর্ভধারণের সম্ভবনা নেই বা ক্ষীণ এমনটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই।
৫। জন্ম নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খেলেই বুঝি সব সমস্যার সমাধান
এখন অনেক মহিলার PCOD সমস্যার চিকিৎসায় জন্মদিন নিয়ন্ত্রণের ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের ওষুধে সিন্থেটিক হরমোন থাকে। তাই যতদিন ওষুধের প্রভাব থাকবে, ততদিন সমস্যা হবে না। কিন্তু বন্ধ করলেই আবার সমস্যা হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।