
নাভি আমাদের শরীরের কেন্দ্রবিন্দু, যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য নার্ভ ও হরমোন সংশ্লিষ্ট কার্যকলাপ। প্রাচীন আয়ুর্বেদ অনুসারে, নাভিতে তেল লাগানো একটি কার্যকর ও স্বাভাবিক স্বাস্থ্যপদ্ধতি, যা মানসিক চাপ, কোষ্ঠকাঠিন্য, পিরিয়ডের ব্যথা, গ্যাস, পেটব্যথা এমনকি বলিরেখার মতো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
নিয়মিতভাবে সরষের তেল, নারকেল তেল কিংবা ঘি নাভিতে ব্যবহার শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য রক্ষা করে। এটি বিশেষত মেয়েদের পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে, ঘুম ভালো করতে, এবং হরমোন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নাভিতে কোন তেল লাগানো উচিত?
আয়ুর্বেদ অনুসারে, নাভিতে সরষের তেল বা নারকেল তেল লাগানো ভালো। এটি ত্বককে আর্দ্রতা দেয় এবং ঠোঁট ফাটা থেকেও মুক্তি দেয়।
প্রত্যেক নারীর জীবনে পিরিয়ড একটি স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। প্রতি মাসে ৩ থেকে ৫ দিন ধরে চলা পিরিয়ড চক্রের সময়, মহিলারা প্রায়শই তলপেটে ব্যথা, অনিয়মিত পিরিয়ড, ক্লান্তি এবং মেজাজের পরিবর্তনের মতো সমস্যার সম্মুখীন হন। এই পরিস্থিতিতে বাজারজাত ব্যাথানাশক ওষুধ খাওয়ার থেকে এই প্রাচীন আয়ুর্বেদিক উপায় স্বস্তি দিতে পারে। এছাড়াও দেহের সার্বিক স্বাস্থ্য রক্ষায় এই পদ্ধতি আরো সাহায্য করতে পারে।
১। পিরিয়ডের ব্যথা ও হরমোন ভারসাম্য
নাভিতে তেল লাগালে পিরিয়ডের ব্যথা অনেকটা কমে যায় এবং হরমোন ভারসাম্য বজায় থাকে। নারীদের মাসিকচক্রের সমস্যা, অনিয়মিত পিরিয়ড বা ক্লান্তির ক্ষেত্রে এটি কার্যকর।
২। ক্লান্তি চলে যায়
নাভিতে তেল লাগালে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হবে এবং ভালো ঘুমও হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে, উদ্বেগের সমস্যাও কমে এবং এটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
৩। কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমের উন্নতি
নাভিতে তেল হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় করে। নিয়মিত ব্যবহার কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, নাভিতে তেল লাগানোর প্রক্রিয়াটি সর্বদা রাতে করা উচিত, যাতে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পেতে পারে। তার জন্য -
* রাতে ঘুমানোর আগে তুলা ও হালকা গরম জল দিয়ে নাভি পরিষ্কার করুন।
* ২-৩ ফোঁটা হালকা গরম তেল নাভিতে ফেলুন।
* বৃত্তাকার গতিতে ৩-৪ মিনিট ম্যাসাজ করুন।
* প্রয়োজনে সপ্তাহে ২-৩ বার করুন, তবে নিয়মিত করাই উত্তম।
সারাংশ নাভিতে তেল লাগানো একটি প্রাচীন এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতি যা শরীর ও মনে প্রশান্তি আনে। প্রাচীন আয়ুর্বেদ অনুসারে, নাভিতে তেল লাগালে বিশেষ করে নারীদের পিরিয়ড-সংক্রান্ত সমস্যায় স্বস্তি মেলে। তবে এটি সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে একটি কার্যকর সহায়ক হতে পারে।