
আজকাল ফিট থাকার তাগিদে সবাই ডায়েট করছে, জিম যাচ্ছে। আয়েতের ধরণ আবার সবার আলাদা আলাদা, কারোর নো কার্ব ডায়েট, কারোর কিটো ডায়েট, কেউ আবার শুধু লিকুইড খেয়ে ডায়েট করেন শীঘ্রই ফলাফল পেতে। তবে যে কোনো ডায়েটেই সবার প্রথম বাদ যায় কার্বোহাইড্রেট।
শরীরে শক্তি জোগাতে কার্বোহাইড্রেটের ভূমিকা
খাবারে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরে প্রবেশ করলে তা গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। এই গ্লুকোজ কোষে গিয়ে এটিপি (ATP) তৈরি করে যা শরীরের মেটাবলিজম এবং যাবতীয় শারীরিক কাজে শক্তি জোগায়। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট শরীরে সঞ্চিত হয় গ্লাইকোজেন হিসেবে, যা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চিত থাকে।
যদিও ফ্যাট থেকেও শক্তি পাওয়া যায়, তবে তা অনেক বেশি জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তাই শরীর সহজ পথ কার্বোহাইড্রেটকেই প্রাধান্য দেয়। কার্বোহাইড্রেট বন্ধ রাখলে শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে
১। পেশি ক্ষয় ও ওজন হ্রাস
শরীর যখন কার্বোহাইড্রেট পায় না, তখন সে শক্তির জন্য ফ্যাট ও পেশির উপর নির্ভর করে। এতে ওজন কমে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে পেশির ঘনত্ব ও শক্তি হ্রাস পায়।
২। হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য
কার্বোহাইড্রেট থেকে পাওয়া ফাইবার হজমে সাহায্য করে। এর অভাবে ঘন ঘন পেটের সমস্যা হতে পারে। কারণ, ফাইবারের অভাবে পরিপাকতন্ত্রে খাবার ঠিক মতো হজম হবে না। একই সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কোলেস্টেরল এবং হার্টের অসুখ দূরে রাখতে সাহায্য করে ডায়েটারি ফাইবার।
৩। ক্লান্তি ও মনঃসংযোগে ঘাটতি
শক্তির অভাবে শরীরে ক্লান্তি বাড়ে। মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা ও মনোযোগ হারানোর মতো সমস্যা দেখা দেয়। সহজ কাজের ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হতে পারে।
৪। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও মেজাজ পরিবর্তন
শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতির ফলে হরমোনের তারতম্য ঘটে। মেজাজ পরিবর্তন হতে পারে বার বার, অবসাদও তৈরি হতে পারে।
৫। মুখে দুর্গন্ধ
অতিরিক্ত প্রোটিন ও ফ্যাট ভাঙার ফলে শরীরে ‘কেটোন’ তৈরি হয়, যা মুখে দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।
করণীয় কী?
* কার্বোহাইড্রেট একেবারে বন্ধ করা যাবে না। শরীরের জন্য কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন। তবে তা যেন প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন রিফাইন্ড সুগার, সাদা পাউরুটি, বা জঙ্ক ফুড থেকে না আসে।
* ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেছে নিতে হবে। বাদাম, ওটস, ব্রাউন রাইস, সবজি, ফল ইত্যাদি কম গেলাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাবার বেছে নিন।
* প্রোটিন, হেলদি ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটের সঠিক অনুপাত বজায় রেখে ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
সারাংশ
কার্বোহাইড্রেট কম খেলে দ্রুত ওজন হ্রাস পায় ঠিকই, তবে দীর্ঘমেয়াদে শরীরের ওপর পড়ে নেতিবাচক প্রভাব। তাই একেবারে কার্বোহাইড্রেট বন্ধ নয়, ‘ব্যালেন্সড ডায়েট’-ই সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি।