
পুষ্টিকর উপাদান আমাদের চোখকে সুস্থ রাখে, এবং কিছু উপাদান চোখের রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। যেমন কম চর্বিযুক্ত খাবার এবং প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া কেবল আপনার হৃদয়কেই নয়, আপনার চোখকেও ভালো থাকতে সাহায্য করতে পারে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই: আপনার চোখ অক্সিজেন এবং পুষ্টির জন্য ক্ষুদ্র ধমনীর উপর নির্ভর করে, ঠিক যেমন হৃদয় অনেক বড় ধমনীর উপর নির্ভর করে। এই ধমনীগুলিকে সুস্থ রাখলে আপনার চোখও সাহায্য সুস্থ থাকতে পারবে।
চোখের সমস্যা সাধারণের মধ্যে দিন দিন বাড়ছে। এমনকী অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের প্রভাব পড়ছে শিশুদের মধ্যেও। এই জেনারেশনের বেশিরভাগ সময়টাই কাটে মোবাইল ও ল্যাপটপে।
অফিসের কাজ হোক বা ব্যক্তিগত বিনোদন। মোবাইলেই কাটে দিনের বেশিরভাগ সময়।
অনেক সময় বয়সজনিত কারণে চোখের প্রোটিন ভেঙে একসাথে জমাট বেঁধে যায়। এই অবস্থাকে আমরা ছানি বলে থাকি। চিকিৎসায় তা নিরাময় সম্ভব। এছাড়াও দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতায় পাওয়ার বাড়ার মতো সমস্যাও দেখা দেয়। তাই চোখের জন্য আমাদের ভিটামিন এ ভিটামিন সি যুক্ত শাকসবজি ফলমূল খাওয়া খুবই প্রয়োজন।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ কমলা রঙের শাকসবজি এবং ফল:-
সম্ভবত চোখের জন্য সবচেয়ে সুপরিচিত পুষ্টিকর উপাদান হল ভিটামিন এ । আপনার রেটিনার প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ প্রয়োজন যাতে আমরা যে আলোক রশ্মি দেখি তা ছবিতে রূপান্তরিত করতে পারি। এছাড়াও, পর্যাপ্ত ভিটামিন এ ছাড়া, আপনার শুষ্ক চোখখে প্রতিরোধ করার জন্য যথেষ্ট আর্দ্র থাকতে পারে না ।
গাজর ভিটামিন এ-এর একটি সুপরিচিত উৎস। ডাঃ টেলর বলেন, মিষ্টি আলু আরও বেশি ভিটামিন এ সরবরাহ করে। "একটি মিষ্টি আলুতে ডাক্তারদের সুপারিশকৃত ভিটামিন এ-এর দৈনিক ডোজের ২০০% এরও বেশি থাকে।" ক্যান্টালুপ এবং এপ্রিকট সহ ফল ভিটামিন এ-এর একটি ভালো উৎস হতে পারে ।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল এবং শাকসবজি:-
ভিটামিন সি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে, ভিটামিন সি আমাদের কিছু খাবার, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং পরিবেশগত কারণের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ভাজা খাবার, তামাকের ধোঁয়া এবং সূর্যের রশ্মি মুক্ত র্যাডিকেল তৈরি করতে পারে - এমন অণু যা কোষের ক্ষতি করতে এবং মেরে ফেলতে পারে। ভিটামিন সি নতুন টিস্যু কোষ মেরামত এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
আগে থাকতে সচেতন হলে এই সমস্যাগুলি সহজেই এড়ানো যায়। তাছাড়া যদি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান আগে থেকেই পাওয়া যায়, তাহলে চোখ থাকবে ভালো। ছানি হোক বা চোখের ঝাপসা দৃষ্টি, কোনকিছুই সহজে কাবু করতে পারবে না আপনাকে। তাই, চোখ ভালো রাখতে প্রতিদিন খাবার পাতে রাখুন এই খাবারগুলি।
সুর্যমুখীর তেল, বাদাম, হেজেলনাট, পাইন বাদাম প্রভৃতিতে রয়েছে ভিটামিন ই। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবারে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি চোখের কোষকে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে। এছাড়া ছানি ও ম্যাকুলার অবক্ষয়, এমনকী চোখের শুষ্কতা কমাতেও এটি সাহায্য করে।
মটরশুঁটি, ডাল ও অন্যান্য লেবু জাতীয় খাবার জিঙ্কের ভালো উৎস। এছাড়া সামুদ্রিক মাছ, ডিম, মাংস প্রভৃতিতেও জিঙ্ক পাওয়া যায়। জিঙ্ক হল এমন একটি অপরিহার্য খনিজ, যা রেটিনা এবং চোখের অন্যান্য অংশের স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায় রাখে। তাই, খাবার পাতে এই জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার রাখুন।
মিষ্টি আলু, কুমড়ো, গাজর প্রভৃতিতে বিটা ক্যারোটিন থাকে। এগুলি শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এটি চোখের বাইরের স্তরকে রক্ষা করে। কম আলোতে দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। রোডোপসিন নামক প্রোটিন তৈরিতে অপরিহার্য উপাদান ভিটামিন এ। কম আলোতে দেখার জন্য এই প্রোটিন প্রয়োজন পড়ে।
চিয়া বীজ, আখরোট, তিসির বীজ প্রভৃতিতে পর্যপ্ত পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যসিড থাকে। এটি চোখের টিয়ার ফিল্মের প্রয়োজনীয় তেল তৈরিকারী গ্রন্থিগুলিকে সুস্থ রাখে। ফলে চোখের শুষ্কতা বা চোখ ঝাপসা হওয়ার মতো সমস্যা কমে।