
শুধু মধ্যপানেই লিভার খারাপ হয় ভাবছেন? কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন অন্য কথা। জানেন কী, প্রায় ৪০ শতাংশ ভারতীয়রা লিভারের সমস্যায় ভুগছে যা একেবারেই মধ্যপানের জন্য, অর্থাৎ নন অ্যালকোহলিক লিভারের সমস্যা। সময়ের সাথে সাথে যা এখন অল্প বয়সীদের মধ্যেও থাবা বসাচ্ছে। যার হাত ধরে আরও অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী অসুখও বাড়ছে অল্প বয়সীদের মধ্যে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে এবং যাদের ওজন বেশি তাদের ক্ষেত্রে লিভারের সমস্যার ঝুঁকি বেশি। যদিও কোনও লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে, তবে এটি উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। এই অবস্থা প্রতিরোধ এবং উন্নতির জন্য আপনার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন জানা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাথমিক পর্যায়ে থাকতে থাকতেই লিভারের সমস্যাগুলির জন্য লক্ষণ গুলি কীভাবে বুঝবেন তার একটা ধারণা থাকা উচিত।
১। ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে পেটের ব্যাথা রাতেই মাথা চারা দেয়। বিশেষ করে পেটের ডানদিকে ব্যাথা হয়। ক্রমশ রাতের বেলায় তলপেটে ব্যাথা হতে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
২। লিভারের সমস্যা দীর্ঘদিন হলে বাহ্যিক ভাবে আগে ত্বকে ফুটে ওঠে। রাতের দিকে ত্বকে চুলকানি, প্রদাহ, অ্যালার্জি শুরু হয়। ত্বকে কালো ছোপ পড়তে পারে। জিভে কালচে ছোপ পড়ে।
৩। লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে সব সময় মাথা ঘোরা বমি ভাব মনে হতে পারে। পূর্ব মির্ধারিত অন্য কোনও বিশেষ অসুখ না থাকলে বিন কারণে বমি ভাব বা মাথা ঘোরা লিভারের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
৪। লিভার শরীর পরিশোধন করে সব টক্সিন শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে। এই টক্সিন যদি শরীর থেকে বেরোতে না পারে, মণে বুঝতে হবে লিভার ঠিক মতো কাজ করছে না। পর্যাপ্ত জল খাওয়ার পরও যদি প্রস্রাবর রং হলুদ বা অন্য কোনও রঙের, অথবা দুর্গন্ধ বলে মনে হচ্ছে, সত্ত্বর ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আপনার ফ্যাটি লিভারের সম্ভাবনা হতে পারে।
৫। লিভার খারাপ হলে তা আপনার দৃষ্টিশক্তিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই হঠাৎ যদি চোখে সমস্যা দেখেন, যেমন - হঠাৎ করে বার বার চোখ শুকিয়ে যাওয়া, চোখে ব্যাথা বা চুলকানিও হতে পারে। খেয়াল রাখুন সেই দিকে।
এই নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সারাতে বর্তমানে কোন নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, তবে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বেছে নিলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।
কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
১. ওজন কমানো - আপনার BMI ১৮.৫ থেকে ২৪.৯ এর মধ্যে থাকা উচিত। আপনার ওজনের ১০% এর বেশি যদি ঝরিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে লিভার থেকে কিছুটা চর্বি অপসারণ করা যেতে পারে।
২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস - ফলমূল, শাকসবজি, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণের চেষ্টা করুন, তবে চর্বি জাতীয় খাবার, চিনি এবং লবণ কম খান। বাইরের খাবার একেবারে বন্ধ করুন।
৩. যেকোনও মিষ্টি পানীয়, সফ্ট ড্রিঙ্কস এসবের পরিবর্তে জল পান করুন। মধ্যপন একেবারেই নয়।
৪. নিয়মিত ব্যায়াম - সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি ধরণের এক্সারসাইজ করতে পারে। যেমন হাঁটা বা সাইকেল চালানো, কিছুটা সাঁতার কাটা।মনে রাখবেন আপনার ওজন না কমলেও এই সামান্য কিছু এক্সারসাইজ আপনার ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।