
অনেকেই দেখে থাকবেন রাতে ঘুমানোর সময় কেউ কেউ মুখ হাঁ করে ঘুমোচ্ছেন। আবার অনেকে ট্রেনে, বাসে কিংবা বাড়িতে টিভি দেখতে দেখতে হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়লে মুখ হাঁ করে রাখেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ঘটনা যদি নিয়মিত ঘটে, তা হলে সেটি কেবল খারাপ অভ্যাসই নয়, হতে পারে একাধিক রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া শুধুমাত্র শ্বাসপ্রশ্বাসের নয়, মুখগহ্বর, দাঁত এমনকি স্নায়বিক সমস্যারও ইঙ্গিত হতে পারে।
বায়োমেড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল-এর জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দেখা গিয়েছে, নাকের বদলে মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে, মুখের স্বাস্থ্যের বড়সড়ো ক্ষতি হয়। এতে দাঁতে বেশি পরিমাণ প্লাক জমা হয়। পাশাপাশি এর ফলে মাড়িতে জ্বালা হতে পারে। এবং শিশুদের ক্ষেত্রে দাঁতের সজ্জায় সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যে কারণগুলিতে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া হয় ঘুমের সময়
১। অ্যালার্জি
আমেরিকান কলেজ অফ অ্যালার্জি ও অ্যাজ়মা অ্যান্ড ইমিউনোলজির মতে, হে ফিভার-এর মতে অ্যালার্জির কারণে নাক বন্ধ হয়ে যায় প্রায়শই। শিশু থেকে শুরু করে অনেকেই এই কারণে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেয় ঘুমের মধ্যে।
২। নাকে গঠনে সমস্যা
মায়ো ক্লিনিক জানায়, সেপ্টাম যা নাকের দুই ছিদ্রকে আলাদা করে, সেটা সরে গেলে নাক দিয়ে বায়ুপ্রবাহ ঠিক মতো হয় না। ফলে নাকের একটি বা দু’টি ছিদ্রই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে বলেই মুখ দিয়ে নিশ্বাস নিতে হয়।
৩। স্লিপ অ্যাপনিয়া
কখনো সর্দি হওয়ার ফলেও শোয়ার সময়ে নাক বন্ধ থাকে অনেকের। তখন মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেন অনেকে।
৪। অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্ট
অ্যাজমা থাকলে বা সর্দি-কাশি, জ্বর হয়ে গলায় কফ জমলে তখন শ্বাসনালি মিউকাস জমে আটকে যায়, শ্বাসকষ্ট হয়।
কী করণীয়?
* নাক বন্ধ থাকলে নাসাল ড্রপ বা গরম ভাপ নিন নিয়মিত। গার্গেলও করতে পারেন, এতে গলার মিউকাস সরে যাবে।
* ENT অ্যালার্জি থাকলে বা মুখ গকা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
* ঘুমানোর সময় বালিশ কিছুটা উঁচু করে রাখুন। টবে দেখবেন যাতে ঘাড়ে ব্যাথা না হয়।