
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে শুধু গাঁটের ব্যথাই নয়, একের পর এক রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করলে বা জীবনযাত্রায় গাফিলতি করলে পরিস্থিতি হতে পারে ভয়াবহ। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪.৫ কোটি মানুষ ইউরিক অ্যাসিড সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন। কারও ক্ষেত্রে তা আর্থ্রাইটিসে রূপ নিচ্ছে, কারও কিডনিতে পাথর বা ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। তাই সময় থাকতেই সাবধান হওয়া জরুরি।
ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে আর কোন কোন রোগের সম্ভাবনা হতে পারে?
১। আর্থ্রাইটিস
আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ আর্থ্রারাইটিস অ্যান্ড মাস্কিউলোস্কেলিটাল ডিজ়িজ় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমে গেলে তা অস্থিসন্ধিগুলিতে ব্যাথা হয় ও শরীরের গ্রন্থিগুলি ফুলে ওঠে। ফলে শুরু হয় তীব্র গাঁটে ব্যথা, ফোলা এবং চলাফেরায় অসুবিধা। এই ‘গাউট’ সমস্যা সময়মতো চিকিৎসা না করালে স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে।
২। কিডনিতে পাথর
ইউরিক অ্যাসিড অতিরিক্ত কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে। এর ফলে তলপেটে ব্যথা, প্রস্রাবে রক্ত বা জ্বালা দেখা দিতে পারে। কিডনি আক্রান্ত হলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গও সমস্যায় পড়তে পারে।
শরীরে এই রোগ ধরা পড়লে খেয়াল রাখতে হবে, এমন খাবার খাওয়া চলবে না, যাতে ওজন বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত জল তো খেতেই হয়। আর নিয়ম করে ওষুধ খেয়ে যেতে হয়।
৩। হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অনেক বেড়ে গেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। শরীরের রক্তজালিকাগুলি নষ্ট হতে পারে। রক্ত চলাচলে বাধা আসতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে তা কিডনি বিকল, হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা বা স্ট্রোকের কারণও হয়ে উঠতে পারে।
৪। টাইপ ২ ডায়াবিটিস
ইউরিক অ্যাসিড ইনসুলিন উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায়। ফলে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স বাড়ে এবং টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি তৈরি হয়।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী করবেন?
১। বেশি করে জল খান। জল শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের করতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন অন্তত ২.৫-৩ লিটার জল পান করুন।
২। লেবু, আমলকি, কমলা ইত্যাদি ফল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার, এগুলি বেশি করে খান। এতে শরীর সুস্থ থাকবে।
৩। বেরিজাতীয় ফল বেশি করে খান। ব্লুবেরি, স্ট্রবেরির দিয়ে শরবত বানিয়ে নিতে পারেন। নিয়ন্ত্রণে থাকবে ‘হাইপারইউরিসেমিয়া’।
৪। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে কিন্তু কফি খাওয়ার উপর রাশ টানতে হবে। দিনে ১-২ কাপের বেশি না খাওয়াই ভালো।
৫। অ্যালকোহল ইউরিক অ্যাসিড তৈরি বাড়ায় এবং কিডনির কাজ ব্যাহত করে। তাই একদম বন্ধ করাই শ্রেয়।