
আমরা অনেকেই রাতের খাবার খেতে খেতে ৯টা–১০টা পার করে ফেলি। কেউ আবার ঘুমনোর ঠিক আগে রাত ১১-১২টায় ডিনার করেন। অথচ বলিউডের দীপিকা পাড়ুকোন, শ্রদ্ধা কাপুর, মিলিন্দ সোমন, শাহিদ কাপুর, মালাইকা আরোরা—সকলেই বলেন তাঁরা সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলেন। আবার অক্ষয় কুমার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “সাড়ে ৬টার মধ্যে ডিনার সেরে নিন। গ্যারান্টি দিচ্ছে বদলে যাবে জীবন”।
তাড়াতাড়ি ডিনার করার পেছনে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যকর যুক্তি, যা শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং ঘুম, ব্লাড সুগার, হজম ও দীর্ঘায়ু—সব কিছুতেই ভূমিকা রাখে। এই অভ্যাস কিছুটা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর মতোই। রাতের খাবার খাওয়ার পর অন্তত ১২-১৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হয় পরবর্তী দিনের ব্রেকফাস্ট পর্যন্ত।
রাতে যত দেরিতে খাওয়া হয়, শরীরের বিপাক হার কমে যায়, ফলে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। ৭টার মধ্যে খেয়ে ফেলার ফলে শরীর খাবার হজমের জন্য পর্যাপ্ত সময় পায়। এতে গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি বা বুকে জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা কম হয়।
বেশিরভাগ বলিউড সেলিব্রিটিরা ফিটনেসের প্রতি খেয়াল রাখেন এবং রাতে দ্রুত ডিনার সেরে ফেলেন রুটিনমাফিক। কারণ, দেরিতে খাওয়া মানেই শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমা হওয়া, যা ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়। রাত ৭টার মধ্যে খেলে শরীর ক্যালোরি ব্যবহার করতে সময় পায় এবং চর্বি জমার ঝুঁকি কমে।
রাত ৮টার পর ভারী খাওয়া ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে। অনেক সময় বুকের মধ্যে অস্বস্তি, গ্যাসের চাপ কিংবা বদহজম ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। দ্রুত রাতের খাবার খেয়ে নিলে পাকস্থলী হালকা থাকে, ফলে শরীর ও মস্তিষ্ক বিশ্রাম নিতে পারে এবং ঘুম হয় গভীর।
সন্ধে ৭টার মধ্যে খাওয়া শেষ করলে শরীরের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে, ইনসুলিন তার কাজ আরও ভালোভাবে করতে পারে। এর ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। এই কারণেই অনেক ফিটনেস কোচ বা নিউট্রিশনিস্ট এই সময় মেনে ডিনার সেরে ফেলার পরামর্শ দেন।
রাতে তাড়াতাড়ি খাওয়া শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। কারণ যখন শরীর খালি পেটে থাকে, তখন সেটি কোষের পুরনো অংশ মেরামত করে এবং কোষ থেকে টক্সিন দূর করে। ত্বক দীপ্তিময় ও জেল্লাদার করে তোলে। বলিউড তারক-তারকাদের এটাই সৌন্দর্য ধরে রাখার প্রথম পদক্ষেপ।