
আজকের দ্রুতগতির পৃথিবীতে, চাপ এবং উদ্বেগ আমাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলছে এমন একটি সাধারণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কন্টিনেন্টাল হাসপাতাল হায়দ্রাবাদ চাপ কমাতে, শিথিলতা বৃদ্ধি করতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে যোগব্যায়ামের থেরাপিউটিক সুবিধাগুলি স্বীকার করে। এই নির্দেশিকায়, আমরা চাপ প্রশমিত করতে, মনকে শান্ত করতে এবং শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা যোগব্যায়াম ভঙ্গিগুলি অন্বেষণ করব। কন্টিনেন্টাল হাসপাতাল হায়দ্রাবাদের বিশেষজ্ঞ মতে ব্যক্তিরা চাপ পরিচালনা এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি গড়ে তোলার জন্য যোগব্যায়ামকে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।
মানসিক চাপ উপশমের জন্য যোগব্যায়ামের মূল বিষয়টি বোঝা:
যোগব্যায়াম একটি প্রাচীন অনুশীলন যা শরীর, মন এবং আত্মার সমন্বয় সাধনের জন্য শারীরিক ভঙ্গি, শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল এবং মনোযোগকে একত্রিত করে। এর সামগ্রিক পদ্ধতি শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্তরেই চাপ মোকাবেলা করে, শিথিলতা বৃদ্ধি করে, উত্তেজনা হ্রাস করে এবং সামগ্রিক সুস্থতা উন্নত করে।
যোগব্যায়াম আত্ম-সচেতনতা, মনোযোগ এবং গ্রহণযোগ্যতাকে উৎসাহিত করে, যা ব্যক্তিদের তাদের অন্তরের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে এবং জীবনের চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যেও অভ্যন্তরীণ শান্তি খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
মানসিক চাপ উপশমের জন্য যোগব্যায়ামের মূলমন্ত্র:
যোগের মূল কথা হলো সুস্থতার জন্য তার সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা শরীর, মন এবং আত্মার আন্তঃসংযোগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। শারীরিক আসন (আসন), নিয়ন্ত্রিত শ্বাস-প্রশ্বাস (প্রাণায়াম) এবং মানসিক মনোযোগ (ধ্যান) এর সংমিশ্রণের মাধ্যমে, যোগব্যায়াম একটি সুরেলা ভারসাম্য তৈরি করে যা চাপ কমাতে পারে এবং শিথিলতা বৃদ্ধি করতে পারে।
আসন করার উপযোগিতা : যোগব্যায়াম অঙ্গভঙ্গিগুলি শরীরকে প্রসারিত, শক্তিশালী এবং সারিবদ্ধ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, শারীরিক উত্তেজনা মুক্ত করে এবং শিথিলতা বৃদ্ধি করে। সামনের দিকে বাঁকানো, মোচড়ানো এবং মৃদু পিছনে বাঁকানো আসনগুলি টানটান পেশীগুলিকে মুক্ত করতে, নমনীয়তা উন্নত করতে এবং শরীরের শিথিলকরণ প্রতিক্রিয়াকে উদ্দীপিত করতে সহায়তা করে।
যে তিনটি আসন আপনার শরীর ও মন কে সতেজ রাখবে সে গুলি হল:
সুখাসন: প্রথমে শিরদাঁড়া সোজা করে পা সামনের দিকে ছড়িয়ে বসুন। এ বার হাঁটু বেকিয়ে নিয়ে বাঁ দিকের পা ডান দিকের হাঁটুর তলায় রাখুন এবং আপনার ডান দিকের পা বাঁ দিকের হাঁটুর তলায় রাখুন। দু’হাতের তালু দুই হাঁটুর উপরে রাখুন। মাথা, ঘাড় ও শিরদাঁড়া যেন এক বিন্দুতে সোজা ভাবে থাকে। সোজাসুজি তাকিয়ে স্বাভাবিক শ্বাস নিন। এই ভাবে ৬০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এই আসনের ফলে মন শান্ত হবে এবং উদ্বেগ দূর হবে। সেই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তিও দূর করবে এই আসনের ফলে।
আনন্দ বালাসন: হাত ও পা ছড়িয়ে মেঝেতে পিঠ ঠেকিয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার হাঁটু মুড়ে পেটের কাছে নিয়ে আসুন। হাত দুটো প্রসারিত করে পায়ের পাতা দুটো ধরুন। দুই হাঁটুর মধ্যে যেন বেশ খানিকটা দূরত্ব থাকে। এ ভাবে ৬০ সেকেন্ড থাকুন। শরীরের যাবতীয় ক্লান্তি দূর করবে আনন্দ বালাসন।
শিশু আসন: হামাগুড়ি দেওয়ার ভঙ্গিতে মেঝেতে বসুন। এ বার আস্তে আস্তে সারা শরীর পিছনে নিয়ে গিয়ে নিতম্ব পায়ের গোড়ালির উপর রাখুন। কপাল মাটিতে ঠেকান। হাত দু’টো পিছনে নিয়ে গিয়ে তালু উল্টো করে পায়ের কাছে রাখুন। মানসিক চাপ ও ক্লান্তি কমাতে সহায়তা করে এই যোগাসন। দেহে রক্তসঞ্চালনের প্রক্রিয়াকেও স্বাভাবিক রাখে।