
গ্রীষ্মকাল শুরু হয়ে গেছে। এই সময়ে শরীরকে সুস্থ রাখা খুবই জরুরি। এর জন্য শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা দরকার। শরীরে সামান্য জলের অভাব হলেও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। তাই গ্রীষ্মকালে সুস্থ থাকতে বেশি করে জল পান করার কথা বলা হয়। এছাড়াও, গ্রীষ্মকালে আমরা ঠান্ডা খাবার খেতে বেশি পছন্দ করি। তবে এই সময়ে আমাদের খাবারের দিকে বিশেষ নজর রাখা উচিত। কারণ সামান্য অসতর্ক হলেই শরীর খারাপ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, গ্রীষ্মকালে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। সেগুলি কী, তা এই নিবন্ধে জেনে নিন।
গ্রীষ্মকালে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন:
১. ভাজা মাংস
গ্রীষ্মকালে অনেকে গ্রিল করা মাংস রান্না করে খান। কিন্তু এটি আপনার প্রয়োজনীয়তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এই খাবারগুলো খুব বেশি তাপমাত্রায় রান্না করা হয়। এমনিতেই গরম বেশি, তার ওপর বেশি তাপে রান্না করা খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া এটি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ায়।
২. আইসক্রিম
গ্রীষ্মকালে আমরা সবাই আইসক্রিম খেতে ভালোবাসি। ছোট থেকে বড় সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে আইসক্রিম খাই। কিন্তু গ্রীষ্মকালে আইসক্রিম খাওয়া ভালো নয়। কারণ আইসক্রিমে প্রচুর চিনি থাকে, যা ওজন এবং ডায়াবেটিস বাড়াতে পারে। যদি আইসক্রিম খেতে চান, তাহলে মাঝে মাঝে খান, বেশি খাবেন না।
৩. অ্যালকোহল
কেউ কেউ গরমে ঠান্ডা ওয়াইন বা বরফ দেওয়া মদ পান করতে পছন্দ করেন। কিন্তু এভাবে পান করলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং ডিহাইড্রেশন হতে পারে। এছাড়া শরীরে জলের অভাব দেখা দেয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
৪. দুগ্ধজাত পণ্য
গরমকালে যদি বেশি করে ঠান্ডা মিল্কশেক খেতে ইচ্ছে করে, তাহলে একটু সাবধান থাকুন। কারণ এই সময়ে দুগ্ধজাত পণ্য বেশি খাওয়া উচিত নয়। এই সময়ে শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে দুধ, মাখন বা পনিরের মতো দুগ্ধজাত খাবার হজম হতে অসুবিধা হয়।
৫. তৈলাক্ত খাবার
তৈলাক্ত খাবার, জাঙ্ক ফুড, ভাজাভুজি খাবার গ্রীষ্মকালে খাওয়া অস্বাস্থ্যকর। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো শরীরের ভেতর থেকে তাপ উৎপন্ন করে। এর ফলে মুখে ব্রণ হতে শুরু করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল হতে থাকে।
৬. শুকনো ফল
বাদাম, কিসমিস, খেজুর, ডুমুর, ওয়ালনাট-এর মতো শুকনো ফলে প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকলেও, গ্রীষ্মকালে এগুলো খাওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। কারণ শুকনো ফল শরীরকে ভেতর থেকে গরম করে। তাই গ্রীষ্মকালে শুকনো ফল খুব কম পরিমাণে খান।
৭. চা, কফি
বেশিরভাগ মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা বা কফি ছাড়া দিন শুরু করতে পারেন না। আপনারও যদি এই অভ্যাস থাকে, তাহলে তা পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন। কারণ গ্রীষ্মকালে চা, কফি বেশি পান করা ভালো নয়। এর বদলে আপনি গ্রিন টি পান করতে পারেন।
৮. মশলা
এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচের মতো মশলা খাবারের স্বাদ বাড়ায়, তবে এই মশলাগুলোতে তাপ খুব বেশি থাকায় গ্রীষ্মকালে এগুলো খেলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গরমে মশলা বেশি দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলুন।
৯. আম
গ্রীষ্মকালে আম খেতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে এটি বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। গরমে বেশি আম খেলে পেটে ব্যথা, ডায়েরিয়া, মাথাব্যথা হতে পারে। তাই কম পরিমাণে খান।
১০. লবণ
লবণ আমাদের খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও, গরমে বেশি লবণ খেলে ফোলাভাব, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়াম জমলে কিডনির ক্ষতি এবং ডিহাইড্রেশন হতে পারে।