
পরিবার, ঘনিষ্ট বন্ধু, প্রিয়জন এরা একান্তই আপন। এদের সাথে সুখ, দুঃখ, ভালোবাসা ভাগ করে নেওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠতার সম্পর্কেও সীমারেখা থাকা দরকার বলছেন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সম্পর্ক যতই ঘনিষ্ট হোক না কেন, আত্মসম্মান, ব্যক্তি স্বাধীনতা, ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা প্রয়োজন। পরিবার, বন্ধু, কিংবা প্রিয়জন—সবার সঙ্গেই পরিমিত দূরত্ব বজায় রাখুন, সম্পর্ককে আরও মজবুত হবে। অন্যের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সম্মান করুন, এবং নিজের আত্মসম্মানকেও সম্মান করুন।
১। না বলতে শিখুন
আপনার পছন্দ নয় এমন কোনো কাজে প্রিয়জনকে মানা করা যাবে না, তা ভাবাটা ভুল। আপনজনদের খুশি করতে গিয়ে আমরা এমন অনেক কাজ করে ফেলি যা নিজেদের অপছন্দ, ফলে মনের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। তাই যতটা সম্ভব অন্যকে আঘাত না করেই নিজের ভালোর জন্য "না" বলতে শিখুন, তারা আপনার প্রিয়জন, পরিবার বা ঘনিষ্ঠ বন্ধুই হোক না কেন।
২। নিজের সঙ্গে সময় কাটানো জরুরী
পরিবার, প্রিয়জন, বন্ধু-বান্ধব সবার সাথে সময় কাটানো যেমন মন ভালো করে দেয়, তেমনটাই জরুরী নিজের সঙ্গে সময় কাটানো। নিজে নিজেকে আনন্দ দিতে, খুশি করতে পারলে অন্য কারোর থেকে খুশি পাওয়ার আশায় থাকবেন না,আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
৩। ব্যক্তিগত কথা শেয়ারে সর্তকতা
পরিবার বা ঘনিষ্ঠ বন্ধু বান্ধবদের বিশ্বাস করে তাদের সাথে ব্যক্তিগত কথা ভাগ করে নিচ্ছেন, তা ভালো কথা। তবে কার সাথে কি কথা শেয়ার করছেন তা নিয়ে সবসময় সতর্ক থাকুন। তাদের সাথেই কথা ভাগ করে নিন যারা আপনার সিক্রেট যত্ন করে লুকিয়ে রাখবে।
৪। কেউ ডাকলেই চলে যাবেন না
ঘনিষ্ট কেউ ডাকলেই নিজের সব কাজ ফেলে দিয়ে ছুটে যাওয়া বন্ধ করুন। আগে নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের সমস্ত কাজ ছেড়ে পেলেও তারপর তাকে সময় দিন। তাদেরও আপনার সময়মতো প্ল্যান করতে দিন। না হলে আপনার জীবনের ছন্দতেই এর প্রভাব পড়তে পারে।
৫। একতরফা মানিয়ে নেওয়া নয়
সম্পর্কে সব সময় আপনিই মানিয়ে নিচ্ছেন - এটা ভুল। সম্পর্ক পারস্পারিক, দুদিক থেকেই সুযোগ-পরিস্থিতি বুঝে মানিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। সম্পর্কে মানিয়ে নেয়ার দায় একা আপনার নয়। তাই সীমারেখা টানুন, আপনাকে আঘাত করার সুযোগ কারোকে দেবেন না।
৬। সম্পর্কে আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখুন
ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারোর সাথে টাকা লেনদেন করা নিয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখুন। অনেক সময় দেখা যায় খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারোর সাথেই কোনো প্রকার আর্থিক ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।
৭। অন্যের পছন্দ-অপছন্দকেও গুরুত্ব দিন
সম্পর্ক যতই ঘনিষ্ঠ হোক না কেন অন্যের ব্যক্তিগত জীবনে জোর করে ঘুরতে যাওয়া একেবারেই কাম্য নয়। একইভাবে অন্যকেও নিজের জীবনে নাক গলানোর সুযোগ দেবেন না। সেই সুযোগ দেবেন না। আপনি অন্যের পছন্দ-অপছন্দ এবং স্বাধীনতাকে সম্মান করলে, তারাও আপনার ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সম্মান করবে।
৮। অন্যকে আঘাত দিয়ে কথা নয়
কথা বলতে গিয়ে আবেগের বশে উল্টোদিকের মানুষটির ওপর কখনোই অশ্রদ্ধাশীল ভাষা প্রয়োগ করবেন না। আপনি সম্মান বজায় রেখে শ্রদ্ধাশীল ভাষায় কথা বললে, তারাও আপনার সাথে শ্রদ্ধাশীল আচরণই করবে।
৯। ডিজিটাল দূরত্ব বজায় রাখুন
আপনি অনলাইন আছেন বলেই কেউ মেসেজ করলে তার মেসেজের রিপ্লাই দিতে হবে, তার জন্য উপলব্ধ থাকতে হবে সবসময় - এমনটা নয়। দূরত্ব বজায় রাখুন, ডিজিটাল সীমারেখা রাখা প্রয়োজন।