সিমলিপাল জঙ্গল ভালোবাসতে শেখায় প্রকৃতিকে, চলুন তাহলে এক জঙ্গলের বুকে

  • ওড়িশার সিমলিপাল জঙ্গলের বৈশিষ্ট্য হল এর বৈচিত্র
  • সিমলিপাল জঙ্গল খোলা থাকে ১ লা নভেম্বর থেকে ১লা জুন
  • পাখি দেখা, ক্যাম্প করার জন্য আদর্শ জঙ্গল
  • মাল্ভূমি, পাহাড়, নদী, জল্প্রপাত, বনভূমি সব আছে সিমলিপালে

ওড়িশার কোনও জায়গাই এমন নেই বোধহয় যেখানে গিয়ে কিছু পাওয়ার নেই ভ্রমণার্থীর। ভ্রমণের বৈচিত্র পেতে হলে যাওয়া উচিত ওড়িশায়। আর একটি জায়গা নয়- ওড়িশায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মন কেমন করা সুন্দর সুন্দর জায়গা। আজ থাকল সিমলিপালের কথা।  
ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলেটির নাম যেমন ছন্দময়, জায়গাটিও তেমনই আর এই জেলাতেই সিমলিপাল জঙ্গল।  এই জঙ্গলটির বৈশিষ্ট্য হল যে এটি তরঙ্গায়িত ছোটোনাগপুর মালভূমির ওপর অবস্থিত। জঙ্গলকে বেষ্টন করে আছে খৈরিবুরু ও মেঘাসানি নামক পাহাড় চূড়া। মেঘাসানি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। যারা জঙ্গল্ট্রেক ও ক্যাম্প করতে চান তাদের পছন্দের জায়গা সিমলিপাল।  এখন এই জঙ্গলটি সর্বচেয়ে বড়ো বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে  পরিচিত সবার কাছেই। আর বাঙালিদের কাছে সিমলিপালের আকর্ষণ চিরকালীন। খুব গরমে ভালো নাও লাগতে পারে কিন্তু শীতের এই শেষ লগ্ন জঙ্গলে বেড়াতে যাওয়ার আদর্শ সময়।
এই জঙ্গলে লেপার্ড, হাতি, হরিণ, ভালুক, উড়ন্ত কাঠবিড়ালি, লেঙ্গুর, পাইথন, ময়ূর ও অনেক রকম প্রজাতির পাখি ও আরও  অন্যান্য বন্যপ্রাণীর সহাবস্থান। আর জঙ্গলের ভেতরে রয়েছে বেশ কয়েকটি সাঁওতাল গ্রাম । জঙ্গল খোলা থাকে সকাল সাতটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত । ১ লা নভেম্বর থেকে ১৫ই জুন এই সময়কালের মধ্যে যে্কোনও সময়ে যাওয়া যায় সিমলিপালে। বর্ষাকালে তো ভারতবর্ষের বেশিরভাগ জঙ্গলই বন্ধ থাকে। সিমলিপালও বন্ধ হয়ে যায় জুনের ১৫ তারিখের পর।
অপূর্ব মনমাতানো রূপ এই জঙ্গলের।  সবচেয়ে যা ভালো লাগবে তা হল সিমলিপালের ভিন্নতা- কোথাও ঘাসের জঙ্গল, কোথাও ফাঁকা, কোথাও ঢেউ খেলানো পাহাড়, কোথাও আবার আদিম সবুজের রোমাঞ্চ। এত রকমের গাছ- তাদের বৈচিত্র দেখে মুগ্ধ হতে হয়। বরেইপানি ও জোরান্ডা দুই জলপ্রপাত জঙ্গলের রূপ বাড়িয়ে দিয়েছে শতগুণে।  পথ হাঁটার ক্লান্তি নিমেষে দূর হয় জলের কাছে গেলে। ওপর থেকে জঙ্গলের আর পাহাড়ের বুক চিরে  জলের নেমে আসা দেখতে দেখতে ইচ্ছে হয় প্রপাতকে ছুঁয়ে দেখার। 
সিমলিপালের সবচেয়ে বড়ো আকর্ষণ চাহলা- যা আসলে ছিল একসময় ময়ূরভঞ্জের রাজাদের মৃগয়াভূমি। এখানেই রয়েছে বনবিভাগের বনবাংলো, ওয়াচটাওয়ার। চাহলাতেই আছে সল্ট পিট, যেখানে বন্য পশুরা আসে নুন খেতে। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে শেখায় জঙ্গল। দেখা মিলতে পারে বন্য প্রাণীর আবার নাও মিলতে পারে দেখা। অপেক্ষাটুকু থেকে যায় আজীবন তাইতো ফিরে আসা বারবার, অদেখার সন্ধানে। 

এই জঙ্গলের মধ্যেই আছে অনেক চেনা, অচেনা নদী- বুড়িবালাম, পলপলা, সাঁকো, খৈরি, সারান্ডি, থাকথাকি, ইস্ট ডেও , ওয়েস্ট ডেও প্রভৃতি নদী। নদী, পাহাড়, ঝরনা, জঙ্গল সব মিলিয়ে সিমলিপালের সৌন্দর্য যা অতুলনীয়।

Latest Videos

জঙ্গলে প্রবেশের পথ দুটি- পিথাবাটা আর যোশিপুর।  প্রবেশের অনুপতি নিতে হয় সকাল ৬-৯ টার মধ্যে। 

থাকার জায়গা- বনবিভাগের বনবাংলো পাওয়া গেলে তো সবচেয়ে ভালো, নাহলে পর্যটকদের থাকতে হবে বারিপোদা-এ। 

জঙ্গলে সঙ্গে রাখুন শুকনো খাবার, জল। আর খুব সকালের দিকে জঙ্গলে প্রবেশ করতে পারলে বন্য প্রাণ চাক্ষুষ করার সুযোগ থাকে সবচেয়ে বেশি। জঙ্গলে খুব উজ্জ্বল রঙের জামাকাপড় পরে না যাওয়াই শ্রেয়। জঙ্গলে প্রবেশের পর গাইডের পরামর্শ মেনে চলাই উচিত।

কীভাবে যাবেন-  ভদ্রক স্টেশনে নেমে গাড়িতে করে বালেশ্বর হয়ে চলে আসতে হবে সিমলিপালে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury