
বাঙালির মন ভালো করার ঠিকানা উত্তরবঙ্গ। দার্জিলিং, গ্যাংটক, সিকিম - এই পাহাড়গুলোও একবার ছুটে যেতে পারলে যেন রোজকার ব্যস্ততা, চাপ থেকে মুক্তি মেলে। ছুটি কোনোভাবে জোগাড় করতে পারলেও সবসময় বাজেট সামলানো যায় না। মাথাপিছু হাজার দশেক টাকার ধাক্কা একবারে সামলানোর ক্ষমতা অনেকেরই না হতেই পারে। তার ওপর ঘুরতে গেলে ধরে রাখা বাজেটের বাইরে খরচ কোনো না কোনোভাবে হয়েই যায়। ফলে ইচ্ছা থাকলে বা পরিকল্পনা করা হলেও যাওয়া হয়ে ওঠেনা বেশিরভাগেরই।
তবে আগে থেকে একটু পরিকল্পনা ও কিছুটা বুদ্ধি খাটিয়ে চললে ভ্রমণ পরিকল্পনার বাজেটও থাকবে আপনার হাতের মুঠোয়। তাই উত্তরবঙ্গ যখনই বেড়াতে যাবেন, এই ৪ টোটকা কাজে লাগান। এতে খরচ বাজেটের মধ্যেই হবে। বরং বাজেটের তুলনায় কম খরচ হবে।
১। অফবিট লোকেশনগুলোতে ঘুরতে যান
দার্জিলিং, কালিম্পং, গ্যাংটক ইত্যাদি জায়গা গুলির চেনা শহরে সকলেই ঘুরে বেড়ায়। আপনি না হয় এই জেলার আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা পর্যটন কেন্দ্র, যেগুলি এখনও লোক চক্ষুর আড়ালে, জায়গাগুলি বেছে নিন ঘোরার জন্য। যেখানে কোন বড় হোটেল নয়, পাবেন থাকার হোমস্টে, পাহাড়ি গ্রাম্য জীবনের আতিথেয়তা আপনাকে বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা কিছু কম দেবে না। অথচ খরচও কম হবে। যেমন দার্জিলিংয়ের ম্যাল রোডের কাছাকাছি থাকার বদলে লেবং বা বাদামতামের দিকে থাকতে পারেন। আবার চেনা লেপচাজগতে থাকার বদলে মাঝিধুরার মতো অচেনা লোকেশনে থাকতে পারেন।
২। শেয়ার গাড়ি ভাড়া করে ঘুরুন
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি জায়গা গুলোতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য কোনো প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করলে খরচা সেখানেই সবথেকে হয় বেশি। একেক দিনের খরচা প্রায় হাজার চারেকের মতো পড়ে যায়। তাই পার্সোনাল গাড়ি ভাড়া করার থেকে, গাড়ি শেয়ারে ভাড়া করে ঘুরুন। এতে খরচা প্রায় আধা হয়ে যাবে। যেমন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন, শিলিগুড়ি জংশন বা দার্জিলিং মোড় থেকে দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং, মানেভঞ্জন ইত্যাদি জায়গা যাওয়ার শেয়ার গাড়ি পাওয়া যায়। ভাড়া মাত্র ৩৫০ টাকা থেকে শুরু। সাইটসিন করার জন্যও টাক্সি ভাড়া করে নিতে পারেন।
৩। বড়ো রেঁস্তোরা নয় স্থানীয় খাবার খান
বড় কোনো রেস্তোরাঁয় গিয়ে দামি খাবার খাবার থেকে স্থানীয় ছোট দোকানগুলোতে খেতে পারেন পছন্দমত। আরও ভালো হয় যদি হোমস্টেতে থাকেন। হোমস্টে গুলোর প্যাকেজে তিন বেলার খাবার দাবার যুক্ত থাকে। ফলে আপনার খরচা অনেকটাই কমে যাবে সেদিকেও।
৪। কেনাকাটা করা এড়িয়ে চলুন
বাঙালি ঘুরতে গেলে কেনাকাটা না করে বাড়ি ফিরতে পারে না। এই অভ্যাসটাই বন্ধ রাখতে হবে। ঘুরতে গিয়ে শপিং করতে বসলে খরচ বাজেটের বাইরে চলে যায় অনেকটা। নতুন জায়গার স্মৃতি হিসেবে সামান্য কিছু শো'পিস কেনা যেতে পারে তবে তা কখনোই অতিরিক্ত হলে চলবে না। উলটে খরচ, ব্যাগের বোঝা দুইই বাড়বে।
সারাংশ একটু পরিকল্পনা ও কিছুটা বুদ্ধি খাটিয়ে চললে ভ্রমণ পরিকল্পনার বাজেটও থাকবে আপনার হাতের মুঠোয়। তাই উত্তরবঙ্গ যখনই বেড়াতে যাবেন, এই ৪ টোটকা কাজে লাগান। এতে বাজেটের তুলনায় খরচ কম হতে পারে।