
একা বা দল বেঁধে উত্তরাখণ্ড, সিকিম, হিমাচল প্রদেশে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকলে দ্বিতীয়বার ভেবে দেখতে পারেন। পারলে পরিকল্পনা বাতিল করুন।
যাঁরা নিয়মিত পাহাড়ে বেড়াতে যান, তাঁরাই এখন বলছেন, আপাতত কিছুদিন মানালি, মুসৌরি, সিমলার মতো জনপ্রিয় শৈলশহরে বেড়াতে যাওয়া উচিত নয়। এই জায়গাগুলি এড়িয়ে চলা উচিত।
হিমাচল প্রদেশের জনপ্রিয় পর্যটনস্থল সোলাং ভ্যালিতে নববর্ষের ছুটি কাটাতে গিয়ে বিপদে পড়েছেন অনেক পর্যটক। অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁদের ২৪ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছিল।
যানজটের জন্য কুখ্যাত বেঙ্গালুরু। কিন্তু সোলাং ভ্যালিতে বেড়াতে গিয়ে একইরকম অভিজ্ঞতা হল পর্যটকদের।
দিল্লি থেকে হিমাচল প্রদেশে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের একটি দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, তুষারপাতের জন্য রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা সোলাং ভ্যালিতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন। ২ ঘণ্টা পর যখন যান চলাচল শুরু হল, তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। গাড়ি চালকরা একে অপরকে অতিক্রম করার চেষ্টা করতে থাকেন। এর ফলে এমন যানজট হয়ে যায়, সারারাত গাড়িতেই কাটাতে বাধ্য হন তাঁরা।
দিল্লির এই পর্যটক দলটির সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা যখন সোলাং ভ্যালিতে আটকে পড়েছিলেন, তখন স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের সাহায্য করেছেন। কিন্তু রাস্তায় যানজটের জন্য সমস্যায় পড়তে হল।
তুষারপাতের সময় বা পরে রাস্তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে যায়। এই রাস্তায় গাড়ি চালানো মানে বিপদ ডেকে আনা। এই কারণে বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকদের আটকে থাকতে হচ্ছে।
মানালিতে এখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে। তুষারপাতের জেরে কয়েক হাজার পর্যটক আটকে পড়েছেন। হিমাচল প্রদেশের এসডিএম-এর গাড়িও আটকে পড়ে।
পর্যটকদের নিয়ে সোলাং ভ্যালিতে গিয়েছে, এমন ১,৫০০-এর বেশি গাড়ি আটকে পড়েছে। যাঁরা বেড়াতে গিয়েছেন তাঁরাই বলছেন, এখন সোলাং ভ্যালি ভ্রমণ না করাই ভালো।
তুষারপাত সবারই ভালো লাগে। কিন্তু রাস্তায় বরফ জমে গেলে হাঁটা, গাড়ি চালানো অত্যন্ত কঠিন। এই কারণে এখন যে জায়গাগুলিতে তুষারপাত হচ্ছে, সেই জায়গাগুলি এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অভিজ্ঞ পর্যটকরা।
গত বছর উৎসবের মরসুমে হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রচণ্ড যানজটের ফলে ৫৫,০০০ পর্যটক আটকে পড়েছিলেন। তারপরেও এবার হিমাচলে একইরকম ভিড়। একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
অনেকেই বলছেন, যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া রিলস বানানো বা সুন্দর ছবি তোলার জন্য এই সময় উঁচু পাহাড়ে তুষারপাত দেখতে যাচ্ছেন, তাঁদের এটা এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এর ফলে তাঁরা নিজেদের এবং অন্যদেরও সমস্যায় ফেলছেন।
মৌসম ভবনের পক্ষ থেকে হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীরে শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তুষারপাতের মধ্যেই ঘন কুয়াশার ফলে পাহাড়ে গাড়ি চালানো আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।
রাস্তায় বরফ জমে গেলে তার উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়াই বিপজ্জনক। সেখানে গাড়ি চালানো তো আরও বিপজ্জনক। যে কোনও সময় খাদে পড়ে যেতে পারে গাড়ি।
উত্তরাখণ্ডে তুষারধসের সতর্কতা জারি করেছে ডিফেন্স জিওইনফরমেটিক্স রিসার্চ এস্ট্যাবলিশমেন্ট। তুষারের চাদরে ঢাকা চামোলি, বদ্রীনাথ, হেমকুণ্ড সাহিব, আউলি, গরসন। কাশ্মীরের বান্দিপোরাতেও একই ছবি।